ওয়াশিংটন: একটি চোখ এবং একটি হাত হারালেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ লেখক সলমন রুশদি। গত অগাস্ট মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটিতে এক সাহিত্য সভায় ভয়ঙ্কর হামলা হয়েছিল ‘স্যাটানিক ভার্সেস’-এর লেখকের উপর। তাঁর ঘাড়ে এবং শরীরে অন্যান্য জায়গা মিলিয়ে প্রায় ১২ বার ছুরিকাঘাত করা হয়েছিল। কোনওক্রমে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছিলেন তিনি। রবিবার (২৩ অক্টোবর) তাঁর এজেন্ট জানিয়েছেন, ওই হামলায় ৭৫ বছরের লেখক একটি চোখের দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন এবং একটি হাত অবশ হয়ে গিয়েছে। এতদিন পর্যন্ত তাঁর আঘাত নিয়ে ধোঁয়াশা ছিল।
স্প্যানিশ পত্রিকা এল পাইসকে রুশদির সাহিত্যিক এজেন্ট অ্যান্ড্রু ওয়াইলি বলেছেন, “রুশদির আঘাত গুরুতর এবং তিনি এক চোখের দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন। তাঁর ঘাড়ে তিনটি গুরুতর ক্ষত ছিল। একটি হাতে স্নায়ু কেটে গিয়ে সেই হাতটি অক্ষম হয়ে গিয়েছে। তাঁর বুকে এবং শরীরে অন্যান্য অংশে আরও প্রায় ১৫টি ক্ষত রয়েছে। এটা একটা নৃশংস হামলা ছিল।” রুশদি এখনও হাসপাতালে আছেন কি না, সেই বিষয়ে ওয়াইলি কিছু জানাননি।
গত ১১ অগস্ট, পশ্চিম নিউইয়র্কের এক প্রতিষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে গিয়ে মঞ্চেই আক্রান্ত হয়েছিলেন রুশদি। চৌতাকুয়া ইনস্টিটিউশনের মঞ্চে রুশদি বক্তৃতা দেওয়ার সময়, আচমকা লেখকের উপর হামলা চালিয়েছিল হাদি মাতার নামে ২৪ বছর বয়সী এক ব্যক্তি। হামলার পরই তাকে গ্রেফতার করেছিল নিউ ইয়র্ক পুলিশ। ‘স্যাটানিক ভার্সেস’ বইটির জন্যই ১৯৮০-এর দশক থেকেই ইরান রাষ্ট্র থেকে সরকারি ভাবে মৃত্যুর হুমকি রয়েছে সলমন রুশদির। তবে, হাদি মাতারের সঙ্গে কোনওরকম যোগসূত্র অস্বীকার করেছে ইরান।
পরে, হাদি মাতারের মা জানিয়েছিলেন, ২০১৮ সালে লেবাননে তার বাবার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েই বদলে গিয়েছিল তাঁর ছেলে। অত্যন্ত বদমেজাজি এবং অন্তর্মুখী হয়ে পড়েছিল। লেবানন থেকে ফেরার পর থেকে নিজেকে বেসমেন্টে বন্দি করে রাখত। দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে মা এবং বোনদের সঙ্গে কোনও কথা বলেনি। ধর্মের প্রতিও হঠাৎ মনোযোগ বেড়েছিল তার। মা কেন তাকে ধর্মজ্ঞান না দিয়ে পড়াশোনা করিয়েছে, তা নিয়ে অসন্তোষও প্রকাশ করেছিল।