নয়া দিল্লি: পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার পর এবার লোকসভাতেও পৌঁছে গেল তৃণমূল কংগ্রেস এবং বঙ্গ বিজেপির নেতাদের কথার লড়াই। ঘটনাচক্রে বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি), লোকসভার বাজেট অধিবেশনে, বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ সম্পর্কে এমন মন্তব্য করলেন বরিষ্ঠ তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়, যে গোটা লোকসভা কক্ষে উঠল হাসির রোল। এদিন, লোকসভায় বক্তব্য রাখছিলেন বাংলার সাংসদ সৌগত রায়। তাঁর বক্তব্যের পিছনে বিভিন্ন প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। এরপরই, বিজেপি সাংসদ সম্পর্কে সৌগত রায় মন্তব্য করেন, তাঁর বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটেছে। স্ত্রী পালিয়ে গিয়েছেন। তাই, তাঁর মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে। এতেই হেসে ওঠেন লোকসভায় উপস্থিত সকল সাংসদ।
এদিন, লোকসভায় বাজেট বরাদ্দের উপর তাঁর মতামত জানাচ্ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সৌগত রায়। সেই সময় পিছন থেকে বিভিন্ন প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন সৌমিত্র খাঁ। এরপরই স্পিকার ওম বিড়লাকে উদ্দেশ করে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘স্যার, ইসকা তালাক হো গ্যায়া হ্যায়। ইসকি বিবি ভাগ গই। ইসলিয়ে ইসকা দিমাগ খরাব হো গ্যায়া হ্যায়। ইসকা তার কাট গ্যায়া হ্যায়।’ (বাংলা করলে – ওঁর (সৌমিত্র খান) ডিভোর্স হয়ে গিয়েছে। ওঁর স্ত্রী পালিয়ে গিয়েছে। তাই ওর মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে। ওর তার কেটে গিয়েছে।’)
প্রসঙ্গত, একসময় সৌমিত্র খান এবং তাঁর স্ত্রী সুজাতা মণ্ডল তৃণমূল কংগ্রেস থেকে দলবদল করে বিজেপি হয়েছিলেন। ২০২১ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের আগে সুজাতা মণ্ডল তৃণমূলে ফিরে আসেন। কিন্তু, সৌমিত্র খাঁ বিজেপিতেই থেকে যান। সেই থেকে সৌমিত্র বিজেপিতে আছেন, এবং তাঁর স্ত্রী তৃণমূলে। স্ত্রী-এর দল বদলের পর, প্রকাশ্যেই স্ত্রীকে বিচ্ছেদ দেওয়ার কথা বলেছিলেন সৌমিত্র খাঁ। আইনিভাবে এখনও তকাঁদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়নি, তবে এই বিষয়ে মামলা চলছে। রাজনৈতিক মতবিরোধের কারণে স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে থাকেন না।
এদিকে, এদিন লোকসভায় সর্বশেষ কেন্দ্রীয় বাজেটের সমালোচনা করেন সৌগত রায়। তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদের মতে, এই বাজেটে বেকারত্ব, মুল্যবৃদ্ধি এবং সামাজিক বৈষম্য মোকাবিলার কোনও দিশা নেই। বাজেটকে গরিব-বিরোধী এবং জনবিরোধীও বলেছেন তিনি। বাজেট অধিবেশনে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের অনুপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। তিনি বলেন, “২ দিন হয়ে গেল কিন্তু অর্থমন্ত্রীকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী কি বাজেট অধিবেশনে তাঁর থাকাটা উচিত বলে মনে করেন না?” কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের ১১,০০০ কোটি টাকা পাওনা আছে বলেও দাবি করেছেন সৌগত রায়। এই বকেয়া টাকা যত দ্রুত সম্ভব মিটিয়ে দেওয়া উচিত কেন্দ্রের। প্রতিরক্ষা এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে কম অর্থ বরাদ্দ করা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।