চেন্নাই : চেন্নাই ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় ভারী বৃষ্টির জেরে জলমগ্ন বিস্তীর্ণ এলাকায়। জরুরি ভিত্তিতে পরিস্থিতি মোকাবিলায় একাধিক ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে তামিলনাড়ু সরকার। আগামী দুই দিন চার জেলায় স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জলমগ্ন এলাকাগুলিতে ইতিমধ্যেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজে নেমে পড়েছেন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মীরা।
গত রাত থেকেই টানা বৃষ্টি চলছে চেন্নাইয়ে। আজ সকাল সাড়ে আটটা পর্যন্ত ২১ সেন্টিমিটার বৃষ্টি হয়েছে চেন্নাইয়ে। বেশ কিছু নিচু এলাকায় জল জমে বন্যা পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে। তামিলনাড়ুর উত্তর উপকূল দিয়ে অতি ভারী বৃষ্টির জেরে চেন্নাই সহ আরও তিন জেলার (তিরুভাল্লুর, চেঙ্গলপাট্টু এবং কাঞ্চিপুরম) স্কুল, কলেজ আগামী দুই দিন বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া দফতরের থেকে সতর্ক করা হয়েছে, বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণাবর্তের জেরে উত্তরের উপকূল বরাবর তামিলনাড়ুর বিস্তীর্ণ এলাকায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে রবিবার সারাদিন ধরে। আগামিকালও আবহাওয়ার উন্নতি হওয়ার কোনও পূর্বাভাস নেই। আগামী মঙ্গল এবং বুধবার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত চলবে বলে জানানো হয়েছে আবহাওয়া দফতরের তরফে।
টানা বৃষ্টির জেরে চেন্নাইয়ের আশেপাশের হ্রদগুলি ফুলে ফেঁপে উঠতে শুরু করেছে। চেম্বারমবাক্কাম হ্রদ থেকে ইতিমধ্যেই জল ছাড়া শুরু হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে ভারী বৃষ্টিপাতের জেরে চেম্বারমবাক্কাম হ্রদ থেকে হঠাৎ অতিরিক্ত জল ছাড়ার ফলে চেন্নাইয়ে বন্যা দেখা দিয়েছিল।
তামিলনাড়ুর সরকারি আধিকারিকরা জানিয়েছেন, এই নিয়মিত জল ছাড়ার ফলে বন্যা পরিস্থিতির তৈরি হবে না। তবে অতিরিক্ত বৃষ্টি হলে মুদুচুরের আশেপাশের অঞ্চলগুলি প্লাবিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আদিয়ার নদীর তীরে কাঞ্চিপুরম ও চেঙ্গলপাট্টু জেলায় বন্যা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। তিরুভাল্লুর, চেঙ্গলপাট্টু এবং কাঞ্চিপুরম জেলায় স্কুলগুলি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন জেলা কালেক্টরদের সঙ্গে উদ্ভুত পরিস্থিতির মোকাবিলা নিয়ে বৈঠকে বসেছেন। এগমোর, পাডি ব্রিজ, এবং জওহর নগর সহ ১৪ টি জলমগ্ন এলাকা আজ পরিদর্শন করেন স্টালিন। তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, “আমি আধিকারিকদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছি এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলিতে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। সমস্ত বিধায়ক ও সাংসদদের পুনর্বাসনের কাজে যুক্ত হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চেন্নাই সহ ১১ টি জেলা ২০ সেন্টিমিটার বা তারও বেশি বৃষ্টিপাতের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”
এদিকে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর চারটি দল এখনও পর্যন্ত জলমগ্ন এলাকাগুলি থেকে বাসিন্দাদের উদ্ধারের কাজে নেমেছে। প্রবল বৃষ্টিতে সড়ক ও রেল পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। বেশ কয়েকটি বিমান পরিষেবাও বিলম্বিত হয়েছে বলে সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর।