মুম্বই: প্রায় দুই ডজন বিধায়ক মহারাষ্ট্র ছেড়ে পাড়ি দিলেন গুজরাটে। অথচ, রাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক কিছু জানতেই পারল না? মহারাষ্ট্রের শাসক জোটের শীর্ষ নেতৃত্বকে কিচ্ছু জানালো না গোয়েন্দা বিভাগ? সূত্রের খবর, এই বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক চটেছেন জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস প্রধান শরদ পওয়ার। বিশেষ করে মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক রয়েছে তাঁরই দলের হাতে। এই বিষয়ে তিনি দলের নেতা তথা রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দিলীপ ওয়াসলে পাতিল এবং দলের রাজ্য সভাপতি জয়ন্ত পাতিলের কাছে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বলে জানা গিয়েছে।
সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাতেই দিল্লি থেকে মুম্বই ফিরে আসেন শরদ পওয়ার। বুধবার, দিলীপ ওয়াসলে পাতিল এবং জয়ন্ত পাতিলকে তিনি তাঁর বাসভবনে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। বিদ্রোহী বিধায়কদের অন্য রাজ্যে পাড়ি দেওয়া নিয়ে কেন তাঁদের কাছে কোনও গোয়েন্দা তথ্য ছিল না, এই প্রশ্ন তুলে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন এনসিপি প্রধান। এত বড় সংখ্যক বিধায়ক, এমনকি, মন্ত্রীরা পর্যন্ত অন্য রাজ্যে চলে গেলেন। অথচ, রাজ্য গোয়েন্দা বিভাগ থেকে সরকারকে কিছুই জানানো হল না কেন? প্রশ্ন করেন পওয়ার। এতজন বিধায়ক পাশের রাজ্যে চলে গেলেন, অথচ জোটের নেতারা কিছু জানতে পারলেন না, এই নিয়ে রীতিমতো শঙ্কিত এনসিপি প্রধান।
ওই সূত্র আরও জানিয়েছে, বিধায়ক বা মন্ত্রীরা পুলিশি সুরক্ষা পেয়ে থাকেন। রাজ্যত্যাগ করার আগে, তাঁদের সুরক্ষায় নিয়োজিত পুলিশকর্মীরা সাধারণত তাঁদের ঊর্ধ্বতন কর্তাদের জানিয়ে থাকেন। তাঁদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র থাকে। অন্য রাজ্যে সেই অস্ত্র বহন করা নিয়ে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সেই কারণেই ঊর্ধ্বতন কর্তাদের রাজ্যত্যাগের বিষয়টি জানিয়ে যাওয়াই প্রোটোকল। রাজ্য প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, সুরক্ষার বিষয়ে প্রতিদিনই মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দিলীপ ওয়াসলে পাতিলকে অবহিত করা হয়। এই ক্ষেত্রে কেন তা করা হয়নি, তাই নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।
প্রসঙ্গত, বিদ্রোহী শিবসেনা নেতা একনাথ শিন্ডে গত সোমবার প্রায় দুই ডজন বিধায়কদের নিয়ে মুম্বই ছেড়ে সুরাটে পাড়ি দিয়েছিলেন। কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে জানতে পর্যন্ত পারেননি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছেও কি কোনও তথ্য ছিল না? নাকি তারা জেনেও মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়ে কিছু জানায়নি, এই নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
সুরাট থেকে অবশ্য এখন বিদ্রোহী সেনা বিধায়করা চলে গিয়েছেন আরও দূরে, অসমের গুয়াহাটিতে। অন্তত ৩৫ জন সেনা বিধায়ক গুয়াহাটির হোটেলে গিয়ে উঠেছেন। বিদ্রোহীদের দাবি, অন্তত ৪১ জন সেনা বিধায়ক রয়েছেন একনাথ শিন্ডের পক্ষে। এই অবস্থায়, বৃহস্পতিবারই উদ্ধব ঠাকরের মুম্বইয়ের বাসভবনে তাঁর শিবিরের বিধায়করা এক জরুরি বৈঠকে বসছেন।
অন্যদিকে, বিকেলে বৈঠকে বসছেন এনসিপি বিধায়করাও। দলের রাজ্য সভাপতি জয়ন্ত পাতিল এদিন দাবি করেছেন, বিদ্রোহী শিবসেনা বিধায়কদের অনেকেই নাকি গুয়াহাটি থেকে ফিরে আসতে চাইছেন। তবে, সরকারের পতনও যে ঘটতে পরে, তাও মেনে নিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ‘সেই ক্ষেত্রে আমরা বিরোধী আসনে বসব’। তবে, এখনও জোটের নেতা উদ্ধব ঠাকরে বলেই দাবি করেছেন তিনি।