মুম্বই: ক্ষোভ-দুঃখ ভুলে উদ্ধব ঠাকরেকে আরও একবার সুযোগ দিতে রাজি শিন্ডে শিবির। দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণার সময়ও যেমন তাঁরা বিজেপির সঙ্গে জোট বাধার দাবি জানিয়েছিল যে শিবসেনা যেন বিজেপির সঙ্গে জোট বাঁধে, দল ভাঙার পরও আর একবার উদ্ধব ঠাকরেকে সেই একই সুযোগ দিতে রাজি। মুখ্যমন্ত্রীর পদ খোয়ানোর পর সম্প্রতিই আস্থাভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতাও হারিয়েছে শিবসেনার উদ্ধব ঠাকরে শিবির। অন্যদিকে, বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে সহজেই সংখ্যাগরিষ্ঠতার সংখ্যা পার করেছে শিন্ডে শিবির। এবার বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের তরফে জানানো হল, যদি শিবসেনার দুই শিবিরের একজোট হওয়ার কোনও সম্ভাবনা থাকে, তবে তার জন্য উদ্ধব ঠাকরেকেই বিজেপির সঙ্গে কথা বলতে হবে।
বিজেপির সমর্থন নিয়ে সরকার গঠনের পর এবার শিবসেনার নামেও ভাগ বসাতে চাইছেন একনাথ শিন্ডে। বাল ঠাকরের নাম নিয়েই একনাথ শিন্ডে নতুন দল গঠন করার চেষ্টা করছেন। এদিকে, সেই নামকেই চ্যালেঞ্জ করেছেন উদ্ধব ঠাকরে। তিনি নির্বাচন কমিশনের কাছে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন যে শিবসেনা ছাড়া আর কেউ বাল ঠাকরের নাম ব্যবহার করতে পারবে না। আইনি লড়াইয়ের পথেও হাঁটতে রাজি তাঁরা। এরইমাঝে ফের একবার উদ্ধব ঠাকরে ও একনাথ শিন্ডেকে একজোট হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হল। যদি সত্যিই উদ্ধব ঠাকরে দলীয় কর্মী-বিধায়কদের চাপে মাথা নত করেন, তবে শিবসেনার নাম নিয়ে আর সমস্যা থাকবে না।
বৃহস্পতিবার বিক্ষুব্ধ শিবসেনা বিধায়কদের মুখপাত্র দীপক কেসলরকর বলেন, “আমরা ও বিজেপি একজোট হয়েছি। ফলে একটা নতুন পরিবার তৈরি হয়েছে। যদি আমাদের পুরনো পরিবারে ফিরতে হয়, তবে আমরা একা যাব না। বিজেপি আমাদের সঙ্গেই থাকবে। যখন উনি (উদ্ধব ঠাকরে) আমাদের ফোন করবেন, তখন ওনাকে বিজেপির সঙ্গেও কথা বলতে হবে।”
শিবসেনার বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের একাংশের দাবি ছিল, দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করার অন্যতম কারণ সঞ্জয় রাউত। এ দিনও নাম উল্লেখ না করেই শিবসেনা সাংসদের ক্রমাগত কটাক্ষের জবাবে বিক্ষুব্ধ নেতাদের তরফে পরামর্শ দেওয়া হয় যে, দলের প্রধান উদ্ধব ঠাকরের উচিত সেই সব মানুষদের থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলা, যাদের জন্যই বিদ্রোহের সূত্রপাত হয়েছিল।
শিবসেনার হাতে যে ৫৫ জন বিধায়ক রয়েছে, তাদের মধ্যে ৪০ জনই একনাথ শিন্ডের শিবিরে নাম লিখিয়েছেন। বিজেপির সমর্থনেই বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করেছেন একনাথ শিন্ডে। তবে বিধায়করা পুরনো দল বা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে ভোলেননি। এর আগেও একাধিকবার বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের তরফে উদ্ধব ঠাকরের কাছে আর্জি জানানো হয়েছিল, তিনি যেন এনসিপি ও কংগ্রেসের সঙ্গে জোট ভেঙে দেন এবং বিজেপির সঙ্গে জোট বাঁধেন। যদিও সেই সময় জবাবে উদ্ধব ঠাকরে জানিয়েছিলেন, এর আগে বিজেপির সঙ্গে জোট বাঁধার মাশুল চোকাতে হয়েছে তাঁদের। ফের একই ভুল করতে পারবেন না।