নয়া দিল্লি: নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে স্বাধীন ব্যবস্থা চাই। বৃহস্পতিবারও (২৪ নভেম্বর), এই আবেদনের ভিত্তিতে হওয়া মামলার রায় দিল না সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি কেএম জোসেফের নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চ, ৫ দিনের মধ্যে বাদী-বিবাদী দুই পক্ষকেই মামলার বিষয়ে সংক্ষিপ্ত নোট দিতে বলেছে। তবে, এদিন আদালতে অ্যাটর্নি জেনারেল আর বেঙ্কটরমানি জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশন নিয়োগ পদ্ধতিতে আদালতের হস্তক্ষেপের ক্ষেত্রে কোনও ‘ট্রিগার পয়েন্ট’ নেই। অর্থাৎ, এমন কিছু ঘটেনি, যার জন্য নিয়োগ পদ্ধতি বদলাতে হবে।
আবেদনকারীদের পক্ষের আইনজীবী গোপাল শঙ্করনারায়ণ জানান, এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকারের নিযুক্ত একজনও নির্বাচন কমিশনার, এই পদের সম্পূর্ণ ৬ বছরের মেয়াদ সম্পূর্ণ করতে পারেননি। তিনি দাবি করেন, এইভাবেই কমিশনের স্বাধীনতা হরণ করে, এই সাংবিধানিক সংস্থাকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখে সরকার। তিনি আরও বলেন, “বর্তমানে চাকরিতে সিনিয়রিটির ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করা হচ্ছে। কিন্তু এই বিষয়ে আইন একেবারে আলাদা। সংসদ বারবার বলেছে কমিশনার যাতে ৬ বছর এই পদে থাকতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে। কিন্তু, এই পদে নিয়োগ করা হচ্ছে ৬ মাসের জন্য। ফলে এই প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা এবং সুরক্ষা বজায় থাকছে বলে আমরা মনে করছি না।”
নির্বাচন কমিশনার এবং মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে প্রক্রিয়া ‘স্বচ্ছ এবং দৃশ্যমান’ করার দাবি জানান আইনজীবী গোপাল শঙ্করনারায়ণ। এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বড় শূন্যতা রয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, “শীর্ষ আদালতের সাংবিধানিক বেঞ্চই এই শূন্যতা পূরণ করতে পারে। যদি গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়, তাহলে এই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে কোনও ভুল ধারণাও তৈরি হওয়া উচিত নয়।” নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দেশের বিচার ব্যবস্থার তুলনা টেনে তিনি বলেছেন, “বিচার ব্যবস্থায় কোনও শূন্যতা দেখলে আদালত তা পূর্ণ করে। নির্বাচন কমিশনে কোনও শূন্যতা তৈরি হলে, তাও পূরণ করা দরকার।”
অ্যাটর্নি জেনারেল আর বেঙ্কটরমাণি অবশ্য এই যুক্তির বিরোধিতা করে জানান, কোনও ট্রিগার পয়েন্ট তৈরি না হলে, আদালতের হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়। তিনি বলেন, “এখানে কোনও ট্রিগার পয়েন্ট নেই। অবাস্তবভাবে শূন্যতা পূরণ করা যাবে না। নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের একটি প্রক্রিয়া আছে। একটা রীতি আছে। একটা পদ্ধতি আছে।” তবে অ্যাটর্নি জেনারেলের যুক্তি খণ্ডন করে বাদী পক্ষের আইনজীবী জানান, বহু রায়ের ক্ষেত্রেই কোনও ট্রিগার পয়েন্ট ছাড়াই আদালত হস্তক্ষেপ করেছে এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশও দিয়েছে।