নয়া দিল্লি: বিয়ের কথা বলতেই প্রেমিকের হাতে খুন (Murder), দেহ ৩৫ টুকরো করে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলা হয়েছিল দিল্লির বিভিন্ন অংশে। শ্রদ্ধা ওয়াকারের নির্মম পরিণতিতে স্তম্ভিত গোটা দেশ। ইতিমধ্য়েই দিল্লির ১৮টি জায়গা থেকে শ্রদ্ধার দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়েছিল। এবার শ্রদ্ধার ‘খুনি’ আফতাব আমিন পুনাওয়ালাকে জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে খোঁজাখুঁজি করতেই পুলিশ খুঁজে পেল দেহের ১৩টি অংশাবশেষ। ওই দেহাবশেষ শ্রদ্ধার কি না, তা জানতে ডিএনএ পরীক্ষা (DNA Test) করা হবে।
মঙ্গলবারই অভিযুক্ত আফতাব আমিন পুনাওয়ালাকে নিয়ে দক্ষিণ দিল্লির ছত্তরপুরের জঙ্গলে যায় দিল্লি পুলিশ। সেখানে আফতাব দেখায় জঙ্গলের কোন কোন অংশে শ্রদ্ধার দেহের টুকরোগুলি সে ফেলেছিল। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চালানোর পর ১৩টি টুকরো উদ্ধার করে পুলিশ। আফতাবের বাড়ি থেকেও সাত-আটটি হাড়ের টুকরো ও রক্তের দাগ মিলেছে বলেই জানানো হয়েছে দিল্লি পুলিশের ক্রাইম সিন ম্য়ানেজমেন্ট বিভাগের তরফে।
গত মে মাসেই লিভ-ইন সঙ্গী শ্রদ্ধা ওয়াকারকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন আফতাব আমিন পুনাওয়ালা। এরপরে সে প্রেমিকার দেহের ৩৫টি টুকরো করে সে এবং ৩০০ লিটারের ফ্রিজে ঢুকিয়ে রাখে। প্রমাণ লোপাট করতে প্রতি রাতে দিল্লির বিভিন্ন প্রান্তে শ্রদ্ধার দেহের টুকরো ফেলে আসত অভিযুক্ত আফতাব। এরমধ্যে অধিকাংশ টুকরোই সে মেহেরৌলির পাশেই অবস্থিত ছত্তরপুরের জঙ্গলে ফেলেছিল। মঙ্গলবার ওই জঙ্গলের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ১৩টি টুকরো উদ্ধার করা হয়। ওই দেহাবশেষ শ্রদ্ধার কি না, তা নিশ্চিত করতে পুলিশ ডিএনএ পরীক্ষা করছে বলেই জানা গিয়েছে।
এর আগে শনিবার আফতাবের বাড়িতে যায় পুলিশ। সেখান থেকে সাত-আটটি হাড় ও রক্তোর দাগ মেলে। ইতিমধ্যেই তদন্তকারী অফিসারের হাতে ওই প্রমাণগুলি তুলে দেওয়া হয়েছে। দু-একদিনের মধ্যেই ডিএনএ রিপোর্ট এসে যাবে বলে জানানো হয়েছে। অন্যদিকে শ্রদ্ধার দেহ চিহ্নিত করতে তাঁর মা-বাবার রক্তের নমুনাও সংগ্রহ করা হবে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য।
মঙ্গলবার ছত্তরপুরের জঙ্গলে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে তল্লাশি অভিযান চালায় পুলিশ। তাদের সঙ্গে ছিল অভিযুক্ত আফতাব, জঙ্গলের কোথায় দেহের টুকরো ফেলা হয়েছিল, তা নিজেই দেখায় আফতাব। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দিল্লির আরও বেশ কিছু জায়গায় আফতাবকে নিয়ে যাওয়া হবে শ্রদ্ধার দেহাবশেষ উদ্ধারের জন্য। অন্যদিকে, অনলাইন ডেটিং অ্যাপ বাম্বেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। উল্লেখ্য, এই অ্যাপের মাধ্যমেই পরিচয় হয়েছিল শ্রদ্ধা ও আফতাবের।
দিল্লি পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, “ইতিমধ্যেই খুনের ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে কী কারণে ও কীভাবে এই ঘৃণ্য অপরাধ করা হল, তা বোঝার জন্য। কীভাবে লোকচক্ষউ এড়িয়ে দিল্লির বিভিন্ন জায়গায় শ্রদ্ধার দেহের টুকরো ফেলে এসেছিল আফতাব, তাও জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। অনলাইন ডেটিং অ্যাপে অভিযুক্তের অ্যাকাউন্টের অ্যাক্সেস পেলে, তাঁর প্রোফাইলের বিশ্লেষণ এবং কতজন মহিলার সঙ্গে যোগাযোগ ও চ্যাট করেছিল, তা জানা যাবে।”