লখনউ: গত মাস খানেক ধরে গঙ্গায় একের পর এক দেহ ভেসে আসার ছবি রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়েছে দেশ জুড়ে। উত্তরপ্রদেশে গঙ্গার পাড় জুড়ে এখনও সেই মৃতদেহের সার পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। সম্প্রতি একটি ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, সেই সব দেহের ওপর চাপা থাকা গেরুয়া চাদর সরানোর কাজ করছেন পুরকর্মীরা। বালি থেকে বাঁশ সরানোর কাজও চলছে প্রয়াগরাজে।
প্রয়াগরাজে সঙ্গমের কাছেই সেই ছবি ধরা পড়েছে। বৃষ্টি পড়তেই বালি সরে মৃতদেহগুলি বেরিয়ে আসছে। স্থানীয়রা জানাচ্ছে, কুকুর ছিঁড়ে খাচ্ছে সেই সব দেহ। স্থানীয়রা আতঙ্কে অস্থির। অনেক জায়গায় দেখা যাচ্ছে পুরকর্মীরা চাদর সরিয়ে ফের বালি চাপা দিচ্ছে দেহের ওপর। এই অবস্থায় নদীর তীরে নজরদারি চালানোর নির্দেশ দিয়েছে যোগী আদিত্যনাথ সরকার। পুলিশ টহলদারি চালাচ্ছে ওই জায়গাগুলিতে।
উত্তরপ্রদেশের এই ঘটনায় কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বিরোধীরা। কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলেন, ‘জীবিত অবস্থায় সঠিক পাননি এরা। মৃত্যুর পর শেষকৃত্যের সম্মানটুকুও পাননি। আর এখন তাঁদের ওপর থেকে চাদর সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অন্য দিকে এক সরকারি আধিকারিক জানিয়েছেন, নদীর পাড়েই মৃতদের শেষকৃত্যের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। দেহ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে বলেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: ‘আদালতের বাইরের ঘটনা বিচার প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে না’, সিবিআই-কে বলল শীর্ষ আদালত
উত্তরপ্রদেশের গঙ্গা তীরবর্তী কনৌজ, কানপুর, উন্নাও, ফতেপুর, সম্বল, প্রয়াগরাজ, প্রতাপগড়, শাহজাহানপুর, হারদই, ফারুকাবাদ, বদায়ুঁ, কাসগঞ্জ, আলিগড়, হাপুর, বুলন্দশহর, মুজফফরনগর, মিরট, বিজনোর জুড়ে প্রায় ১১৪০ কিলোমিটার এলাকায় চোখে পড়ে এই মৃতদেহের ছবি। স্থানীয়দের বেশির ভাগের মতে, করোনা আক্রান্তদের সৎকারের জায়গা নেই বলে এ ভাবে ভাসিয়ে দিচ্ছেন আত্মীয়রা। আবার অনেকে বলছেন, নদীতে দেহ ভাসিয়ে দেহ ভাসিয়ে দেওয়ার প্রথা প্রচলিত আছে অনেক জায়গায়। কিন্তু এত বেশি মৃতদেহ একসঙ্গে কেন? তার সদুত্তর নেই প্রশাসনের কাছেও। স্থানীয়দের আরও দাবি, এগুলো এই সব মৃতের কোনও হিসেব নেই প্রশাসনের কাছে। এরা করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন কিনা, সেটাও হয়ত জানেন না কেউ।