লাহোর: ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় আলাদা হয়ে গিয়েছিলেন। ৭৫ বছর পর পুনরায় মিলিত হলেন দুই শিখ ভাই। এটা কোনও সিনেমার গল্প নয়। বাস্তবে ফের এই ঘটনার সাক্ষী হল কর্তারপুর করিডর। বৃহস্পতিবার ভারত-পাক সীমান্তবর্তী কর্তারপুর করিডরের গুরুদ্বার দরবার শরীফে মিলিত হলেন দেশভাগের সময় আলাদা হয়ে যাওয়া দুই ভাই গুরদেব সিং এবং দয়া সিং।
জানা গিয়েছে, গুরদেব সিং এবং দয়া সিং হরিয়ানার মহেন্দ্রগড় জেলার গোমলা গ্রামের বাসিন্দা। দেশভাগের সময় তাঁদের বাবার বন্ধু করিম বক্সের মৃত্যু হয়। পাকিস্তানের শরণার্থী ছিলেন করিম বক্স। তাঁর সঙ্গেই পাকিস্তানে চলে গিয়েছিলেন গুরদেব। আর মামার সঙ্গে হরিয়ানায় থেকে গিয়েছিলেন তাঁর ভাই দয়া সিং। এরপর পাকিস্তানে করিম বক্সের মৃত্যুর পর গুরুদেব সিংয়ের আর দেশে ফেরা হয়নি। পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে থেকে যান গুরদেব সিং। সেখানে তাঁর নতুন নামকরণ হয়, গোলাম মোহম্মদ।
তবে দেশ ছাড়লেও পরিবারকে ভুলতে পারেননি গুরদেব। তাই হারানো পরিবারকে খুঁজে দেওয়ার জন্য কয়েক বছর আগে ভারত সরকারকে চিঠিও লিখেছিলেন গুরুদেব। অবশেষে কর্তারপুর শরিফে দে কাকার সাক্ষাৎ পেলেন মোঃ শরীফ তিনি জানান ছয় মাস আগেই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তার কাকা দয়াল সিনিয়র খোঁজ পেয়েছিলেন তিনি তারপর পৈর্তৃক ভিটে হরিয়ানায় আসার জন্য ভারত সরকারের কাছে ভিসার আবেদন জানিয়েছিলেন। অবশেষে কর্তারপুর করিডোরে দুই ভাইয়ের পুনর্মিলন হয়। মাস ছয়েক আগে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে কাকা দয়া সিংয়ের খোঁজ বলে জানিয়েছেন গুরদেব সিংয়ের ছেলে মহম্মদ শরিফ। তিনি হরিয়ানায় পৈতৃক ভিটে দেখতে আসার জন্য ভারত সরকারের কাছে ভিসারও আবেদন জানিয়েছিলেন।
৭৫ বছর পর বৃহস্পতিবার দুই ভাইয়ের পুনর্মিলনের মাধ্যমে এক আবেগঘন মুহূর্তের সাক্ষী হল কর্তারপুর করিডর। গান গেয়ে, পুষ্পবৃষ্টির মাধ্যমে দুই ভাইয়ের পুনর্মিলনকে অভিনন্দন জানান সেখানে উপস্থিত অন্যান্যরা।
প্রসঙ্গত গত বছরের জানুয়ারিতেও আলাদা হয়ে যাওয়া দুই ভাই, ৮০ বছর বয়সী পাকিস্তানের মহম্মদ সিদ্দিকী এবং ভারতের বাসিন্দা ৭৮ বছর বয়সি হাবিবের সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পুনর্মিলন হয়েছিল।