নয়া দিল্লি: ভুয়ো লিঙ্কে ক্লিক করে অথবা ভুয়ো ফোনে ব্যাঙ্কের বিস্তারিত তথ্য দিয়ে বা অনলাইন শপিং করে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খালি হওয়ার কথা শোনা যায়। তবে এবার সেরকম কিছু না করে, কেবল মিসড কলের মাধ্যমেই ৫০ লক্ষ টাকা খোয়ালেন দিল্লির আইনজীবী। মোবাইলের সিম সোয়াপের মাধ্যমেই ওই মহিলা আইনজীবীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোয়া গিয়েছে বলে তদন্তকারীদের অনুমান।
ঠিক কী ঘটেছিল?
পেশায় আইনজীবী ওই মহিলা জানিয়েছেন, তাঁর ফোনে কোনও ভুয়ো মেসেজ বা ফোন আসেনি। তিনি কাউকে কোনও ওটিপি বা ব্যাঙ্কের তথ্য শেয়ারও করেননি। কেবল গত ১৮ অক্টোবর তাঁর ফোনে ৩টি মিসড কল এসেছিল। তিনি সেই নম্বরে পাল্টা ফোন করেন। যদিও ফোনের অপরপ্রান্তের ব্যক্তি নিজেকে অনলাইন শপিংয়ের ডেলিভারি বয় বলে পরিচয় দিয়েছিল। তাকে কেবল বাড়ির ঠিকানা জানিয়েছিলেন। তারপর নির্দিষ্ট ঠিকানায় নির্দিষ্ট সামগ্রীর প্যাকেট এসেছিল। কিন্তু, তারপরই ব্যাঙ্ক থেকে পরপর দুটি মেসেজ মোবাইলে ঢোকে এবং দেখা যায়, তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে ৫০ লক্ষ টাকা ডেবিট হয়ে গিয়েছে।
কোনরকম ওটিপি, ব্যাঙ্কিং তথ্য শেয়ার না করে কীভাবে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উধাও হয়ে গেল, তা ভেবে পাচ্ছেন বছর ৩৪-এর ওই মহিলা আইনজীবী। ঘটনার তদন্তে তিনি দিল্লির সাইবার সেলের দ্বারস্থ হন। তারপর তদন্তকারীরা তদন্তে নেমে জানতে পারেন, ওই মোবাইলের ব্রাউজারের ইতিহাসে একটি অস্বাভাবিক সাইট ও পোর্টাল রয়েছে। যদিও সেটা কোনদিন ওই মহিলা ব্যবহার করেননি। এছাড়া ওই মোবাইলে UPI রেজিস্ট্রেশনের কয়েকটি এসএমএস রয়েছে। অথচ ওই মহিলা এই বিষয়ে কিছুই জানেন না। এর থেকেই তদন্তকারীরা নিশ্চিত হন যে, এটা সিম সোয়াইপ দুর্নীতি। সিম সোয়াইপের মাধ্যমেই ওই মহিলার ব্যাঙ্কিং তথ্য হাতিয়ে নিয়ে অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা ডেবিট করেছে হ্যাকাররা।
সিম সোয়াইপ কী?
সিম সোয়াইপ হল, সিম কার্ড পরিবর্তন বা সিম কার্ডের ক্লোনিং। এর মাধ্যমে আপনার মোবাইল ফোনে একটি নতুন সিমের রেজিস্ট্রেশন করে দেওয়া যেতে পারে। নতুন সিম রেজিস্ট্রেশন হলে পুরানো সিম কার্ডটি বন্ধ হয়ে যায় এবং সমস্ত সিগন্যাল চলে যায়। তারপর ওই নতুন সিম কার্ডে আসা ওটিপি-সহ সমস্ত মেসেজ হ্যাকাররা দেখতে পাবে এবং সেগুলি ব্যবহার করে হ্যাকাররা আপনার ব্যাঙ্কের হাতিয়ে নিতে পারবে।
কীভাবে নিরাপদ থাকবেন?
১) যদি আপনার সিম কাজ না করে সঙ্গে সঙ্গে টেলিকম অপারেটরের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
২) সিম লক করুন, যাতে পাসওয়ার্ড ছাড়া অন্য স্মার্টফোনে ওই সিম ব্যবহার করা না যায়।
৩) অনলাইনে ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করবেন না, বিশেষত যার মাধ্যমে পাসওয়ার্ড খোলা যেতে পারে।
৪) ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে নজর রাখুন এবং অননুমোদিত লেনদেন হলে অভিযোগ জানান।