কলকাতা: চিনের সঙ্গে ভারতের পূর্ব সীমান্ত বরাবর এলাকার পরিস্থিতি স্থিতিশীল কিন্তু অনিশ্চিত। কারণ, সীমান্ত সম্পর্কে ভিন্ন ধারণা পোষণ করে ভারত ও চিন। শুক্রবার, কলকাতায় এসে এমনটাই জানিয়েছেন, ভারতীয় সেনাবাহিনীর ইস্টার্ন কমান্ডের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং-ইন-চিফ আরপি কলিতা। অরুণাচল প্রদেশ ও সিকিম বরাবর চিনের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত রক্ষার দায়িত্বে আছে ইস্টার্ন কমান্ড। লেফটেন্যান্ট জেনারেল আরপি কলিতা বলেন, “ভারত ও চিনের সীমান্ত নির্ধারিত না হওয়াতেই এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল বা এলএসি সম্পর্কে দুই দেশের ভিন্ন ভিন্ন ধারণা রয়েছে। এখনও পর্যন্ত পূর্ব সীমান্তের পরিস্থিতি স্থিতিশীল তবে সীমান্ত সম্পর্কে এই ভিন্ন ধারণার কারণে সেখানকার পরিস্থিতি অনিশ্চিতও বটে।”
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ৯ ডিসেম্বরই অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং সেক্টরে ভারত ও চিন সেনার মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ভারতীয় সেনার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, তাওয়াং সেক্টরের ইয়াংসে এলাকায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ভারতে ঢোকার চেষ্টা করেছিল চিন সেনা। ভারতীয় সেনা বাধা দিলে দুই পক্ষে সংঘর্ষ হয়। ভারতীয় পক্ষের ৩৫ জন এবং চিনের অন্তত ৪০ জন সেনা আহত হয়েছিলেন। তারপর থেকে উত্তর-পূর্ব সীমান্তে চিনা আগ্রাসন নিয়ে উত্তেজনা বজায় রয়েছে। আরপি কলিতা বলেছেন, “পূর্ব সীমান্তে দেশের অখণ্ডতা রক্ষার দায়িত্বে রয়েছে ইস্টার্ন কমান্ড। চূড়ান্ত পেশাদারিত্বের সঙ্গে আমাদের জওয়ানরা সেই কাজ করে চলেছে। আমরা ক্রমাগত নিজেদের উন্নত করে চলেছি এবং অপারেশনাল চ্যালেঞ্জগুলি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করে চলেছি।”
সম্প্রতি জানা গিয়েছে, সীমান্ত এলাকা জুড়ে বিপুল পরিমাণ সৈন্য মোতায়েন করে চলেছে বেজিং। এই বিষয়ে লেফটেন্যান্ট জেনারেল আরপি কলিতা দাবি করেছেন ভারতও এর জবাব দিতে প্রস্তুত হচ্ছে। তিনি জানান, ভারতীয় সেনা জানতে পেরেছে যে, সীমান্তের ওই পারে চিন সেনা মোতায়েনের পরিমাণ বেড়েছে। এর পাশাপাশি ২০১৭ সালে ডোকলামের অচলাবস্থার পর থেকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর পরিকাঠামোগত উন্নয়নের গতিও বাড়িয়েছে চিন। এর জবাব দিতে ভারতও পরিকাঠামোর উন্নয়ন করে চলেছে বলে জানিয়েছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল আরপি কলিতা। তিনি বলেন, “ভারত ক্রমাগত সীমান্তের ওপারে যে কর্মকাণ্ড চলছে তার উপর নজর রাখছে। আমরা যেকোন ধরনের চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা করতে প্রস্তুত।”