Supreme Court on CEC: ‘টিএন সেশন একবারই আসেন’, নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ পদ্ধতিতে বদল চাইল শীর্ষ আদালত

TV9 Bangla Digital | Edited By: অমর্ত্য লাহিড়ী

Nov 23, 2022 | 5:29 PM

Supreme Court on Chief Election Commissioner: মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল শীর্ষ আদালত। বর্তমান পদ্ধতিতে টিএন সেশনের মতো দৃঢ় চরিত্রের কমিশনার বারবার পাওয়া যাবে না বলে জানিয়েছে হাইকোর্ট।

Supreme Court on CEC: টিএন সেশন একবারই আসেন, নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ পদ্ধতিতে বদল চাইল শীর্ষ আদালত
টিএন সেশনের মতো মুখ্য নির্বাচন কমিশনার চাইছে সুপ্রিম কোর্ট

Follow Us

নয়া দিল্লি: মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের ঘাড়ে ভারতের গণতন্ত্রকে রক্ষার গুরু দায়িত্ব চাপিয়ে দিয়েছে সংবিধান। তাই কে সেই পদে বসছেন, সেই প্রশ্নের মতো মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের পদ্ধতিও গুরুত্বপূর্ণ। মঙ্গলবার, এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, কোনও দৃঢ় চরিত্রের ব্যক্তির এই পদে থাকা উচিত। যিনি নিজেকে ‘বুলডোজ’ হতে দেবেন না। প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার টিএন সেশনের কথা উল্লেখ করে শীর্ষ আদালত বলেছে, “অনেক মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এসেছেন, কিন্তু টিএন সেশন একবারই এসেছেন।”

নষ্ট হয়েছে স্বাধীনতা

নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের পদ্ধতি সংশোধনের দাবি জানিয়ে এক আবেদন করা হয়েছিল। বিচারপতি কেএম জোসেফ, অজয় রাস্তোগি, অনিরুদ্ধ বসু, হৃষিকেশ রায় এবং সিটি রবিকুমারের সমন্বয়ে গঠিত শীর্ষ আদালতের পাঁচ বিচারপতি সাংবিধানিক বেঞ্চে তারই শুনানি চলছে। আদালত জানিয়েছে, মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের পদ্ধতিতে ত্রুটি রয়েছে। শীর্ষ আদালতের মতে, প্রত্যেক সরকারই এই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা নষ্ট করেছে।

‘সংবিধানের নীরবতা’

আদালত উল্লেখ করেছে, ২০০৪ সালের পর থেকে কোনও মুখ্য নির্বাচন কমিশনারই পূর্ণ মেয়াদে এই পদে থাকেননি। আদালত জানিয়েছে, ‘মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ১৯৯১’ অনুযায়ী প্রত্যেক নির্বাচন কমিশনারের ৬ বছর করে এই পদে থাকার কথা। কিন্তু এই আইনে একটা ফাঁক আছে। আইনে বলা হয়েছে, মেয়াদের মধ্যে যদি তাঁর বয়স ৬৫ হয়ে যায়, তাহলে তাঁকে মেয়াদের মাঝেই অবসর নিতে হবে। আর আইনের এই ফাঁককেই কাজে লাগিয়েছে একের পর এক সরকার। ইচ্ছা করে এমন ব্যক্তিদের নিয়োগ করা হয়েছে, যাঁরা ৬ বছরের আগেই অবসর নেবেন। আদালত আরও বলেছে, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩২৪-এই এই ধরনের নিয়োগের পদ্ধতির জন্য একটি আইন প্রণয়ন করার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু ‘সংবিধানের নীরবতা’কে কাজে লাগানো হচ্ছে।

কেন্দ্রের বিরোধিতা

আদালতের এই পর্যবেক্ষণ মেনে নেননি অ্যাটর্নি জেনারেল আর বেঙ্কটরমানি। তিনি জানান, এই ধরনের আবেদন এর আগে গণপরিষদের সামনেও ছিল। কিন্তু, তারা সেগুলি বিবেচনা করেনি। তাহলে এই আবেদন আদালতের কি এগুলি বিবেচনা করা উচিত? তিনি আরও বলেন, “আইন নেই বলেই সংবিধানে শূন্যতা রয়েছে, এটা বলা যায় না। তিনি আরও জানান, সংবিধানের মূল বৈশিষ্ট্যগুলিকে চ্যালেঞ্জ করা যায় না। এই আদালতের বিবেচ্য বিষয় সংবিধানের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করে। আদালত আইনের পরিধি বাড়াতে পারে, কিন্তু সংবিধানের একটি মূল বিধানকে লঙ্ঘন করতে পারে না। এটা সংসদের বিতর্কের বিষয়, আদালতের নয়।

মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের বর্তমান পদ্ধতি

সংবিধানে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার বা অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগের কোনও নির্দিষ্ট পদ্ধতি বলা নেই। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ করেন রাষ্ট্রপতি। তবে, তিনি মূলত আনুষ্ঠানিকতা সারেন। মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের নাম সুপারিশ করেন প্রধানমন্ত্রী। তবে, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩২৪(৫) অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের চাকরির শর্তাবলী এবং মেয়াদ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে সংসদ।

সুপ্রিম পরামর্শ

আবেদনকারীরা এই পদ্ধতির পরিবর্তন করে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের নির্বাচনের জন্য কলেজিয়ামের মতো পদ্ধতি চালু করার দাবি জানিয়েছেন। বিচারপতি কে এম জোসেফ প্রধান বিচারপতির উপস্থিতিতে একটি নিয়োগ কমিটি গঠন করার পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁর মতে, প্রধান বিচারপতির উপস্থিতিই বার্তা দেবে যে ওই কমিটির মুখ্য নির্বাচন কমিশনার হিসেবে সেরা মানুষটিকে বেছে নেবেন। নিরপেক্ষতা নিশ্চিত হবে।

Next Article