দিল্লি: দিল্লির সীমান্তে জলবায়ু কর্মী সোনম ওয়াংচুক-সহ লাদাখের প্রায় ১২০ জন বাসিন্দাকে আটক করল দিল্লি পুলিশ। এই ব্যক্তিরা লাদাখের জন্য ষষ্ঠ তফসিলের মর্যাদা দাবি করে মিছিল করে দিল্লিতে আসছিলেন। কিন্তু, জাতীয় রাজধানীতে প্রবেশের মুখেই তাদের আটক করল দিল্লি পুলিশ। দিল্লি পুলিশ সূত্রে খবর, ওয়াংচুক-সহ আটক ব্যক্তিদের আলিপুর থানা এবং দিল্লি-হরিয়ানা সীমান্তের অন্যান্য থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর দিল্লি সীমান্তেই রাত কাটাতে চেয়েছিলেন ওয়াংচুক এবং অন্যান্যরা। কিন্তু, দিল্লিতে জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল বলে, প্রাথমিকভাবে তাদের ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করে পুলিশ। কিন্তু, তারা তাতে রাজি হয়নি। এরপরই ওয়াংচুক-সহ প্রায় ১২০ জনকে আটক করা হয়।
কিছু সময় পরে অবশ্য তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন দিল্লি পুলিশের আধিকারিকরা। তাঁরা আরও জানিয়েছেন, মিছিলে অংশগ্রহণকারী কোনও মহিলাকে আটক করা হয়নি। উত্তর ও মধ্য দিল্লিতে পাঁচ বা তার বেশি লোকের জমায়েত নিষিদ্ধ। লাদাখের আন্দোলনকারীরা সেই নিষেধাজ্ঞা না মানায় তাদের আটক করা হয়েছে।
আটক হওয়ার কিছু আগেই সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টে করেছিলেন সোনম ওয়াংচুক। দেখা গিয়েছিল তাঁরা দিল্লি সীমান্তে আছেন। সেখানে বিশাল সংখ্যক পুলিশ উপস্থিত। পুলিশ তাদের বাস থামিয়েছিল। ভিডিয়োতে জলবায়ু কর্মী ওয়াংচুককে পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে দেখা যায়। ওই পোস্টে ওয়াংচুক বলেছিলেন, দিল্লি পুলিশ এবং হরিয়ানা পুলিশের বেশ কয়েকটি গাড়ি তাঁদের বাসের সঙ্গে চলা শুরু করে। তাঁরা প্রাথমিকভাবে ভেবেছিলেন, সম্ভবত তাদের বাসটিকে পাহারা দিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কিন্তু দিল্লির কাছাকাছি আসতেই তাঁরা বুঝতে পারেন, তাঁদের আটক করা হবে।
ওয়াংচুক জানান, দিল্লি সীমান্তে প্রায় ১০০০ পুলিশ কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। দিল্লির লাদাখ ভবনে এবং লাদাখের ছাত্রছাত্রীরা যে এলাকাগুসিতে বসবাস করেন, সেই সব এলাকাগুলিতে ভারী সংখ্যায় নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে বে তাঁরা খবর পেয়েছেন। ওয়াংচুক বলেন, “মনে হচ্ছে তারা এই পদযাত্রা হোক, সেটা চায় না।”
লেহ অ্যাপেক্স বডি বা এলএবি এই ‘দিল্লি চলো পদযাত্রা’র আয়োজন করেছে। গত চার বছর ধরে সংগঠনটি দ্বারা লাদাখকে রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া, সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের সম্প্রসারণ, লাদাখের জন্য একটি পাবলিক সার্ভিস কমিশন গঠন ও দ্রুত নিয়োগ এবং লেহ ও কার্গিল জেলার জন্য পৃথক পৃথক লোকসভা আসনের মতো বিভিন্ন দাবি নিয়ে আন্দোলন চালাচ্ছে। বর্তমানে, দিল্লিতে এসে তারা তাদের দাবিগুলি তুলে ধরতে চেয়েছিল। তবে, সোমবার থেকেই পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তির জমায়েতএবং দিল্লি ও দিল্লির সীমান্তবর্তী অঞ্চলে সব রকম বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করেছে। দিল্লির জায়গায় জায়গায় ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতার ১৬৩ ধারা জারি করা হয়েছে।