নয়া দিল্লি: ন্যাশনাল হেরাল্ড পত্রিকার সাথে যুক্ত তহবিল তছরুপের অভিযোগের মামলায় বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীকে জেরা করল এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট। জেরার প্রথম দিনে ৭৫ বছর বয়সী সনিয়া গান্ধীকে প্রায় তিন ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হল। তাঁকে ফের ২৫ জুলাই হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। এদিকে বাইরে, নয়া দিল্লির রাজপথে এই তলবের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে আটক হলেন, পবন খেরা, পি চিদম্বরম, জয়রাম রমেশ, অশোক গেহলট, শচীন পাইলট, শশী থারুর-সহ বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট কংগ্রেস নেতা। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে দিল্লি পুলিশ এদিন জলকামানও ব্যবহার করেছে। এদিকে আটকের পর, দিল্লি পুলিশের বাস থেকে টুইট করে কংগ্রেস নেতা শশী থারুর দাবি করেছেন, তাঁদের কোনও ‘অজানা জায়গায়’ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
দুপুরের কিছু পরে মধ্য দিল্লিতে তদন্ত সংস্থার সদর দফতরে আসেন সনিয়া গান্ধী। তাকে তাঁর জেড প্লাস ক্যাটেগরির সিআরপিএফ নিরাপত্তা-সহই নিয়ে আসা হয়। তার সঙ্গে ছিলেন পুত্র রাহুল গান্ধী এবং কন্যা প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরা। এনডিটিভির এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইডির এক মহিলা জয়েন্ট ডিরেক্টরের নেতৃত্বে মোট পাঁচজন পদস্থ কর্তা সনিয়া গান্ধীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। কংগ্রেস সভানেত্রীর জন্য মোট ৫০টি প্রশ্ন তৈরি ছিল এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেটের। প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদ্রকে ইডি দফতরে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়। সনিয়ার কোনও স্বাস্থ্যগত সমস্যার ক্ষেত্রে মাকে যাতে প্রয়োজনীয় ওষুধ দিতে পারেন, সেই কারণেই তাঁকে সেখানে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়। তবে, জিজ্ঞাসাবাদ কক্ষ থেকে বেশ কিছুটা দূরে তাঁকে থাকতে হয়েছে।
Delhi | Water cannons being used at Congress workers protesting over ED probe against party chief Sonia Gandhi in National Herald case pic.twitter.com/rct7KZYAc3
— ANI (@ANI) July 21, 2022
Delhi | Congress workers stop a train and block railway tracks at Shivaji Bridge railway station as they protested against ED questioning of party's interim president Sonia Gandhi, in the National Herald case. pic.twitter.com/86dzRBPrSa
— ANI (@ANI) July 21, 2022
এদিকে, সনিয়া গান্ধীকে ইডির এই জিজ্ঞাসাবাদ মোদী সরকারের ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ বলে দাবি করেছে কংগ্রেস। এদিন দেশব্যাপী এই নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে কংগ্রেস। কিছু কিছু জায়গায়, কংগ্রেস কর্মীরা ট্রেন অবরোধ করে, এমনকি যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করেছে বলেও খবর রয়েছে। আটক কংগ্রেস নেতাদের বাস থেকে এদিন টুইটারে এক ভিডিয়ো বিবৃতি দেন শশী থারুর। তিনি বলেন, ‘পুলিশ আমাদের একটি অজানা গন্তব্যস্থলে নিয়ে যাচ্ছে। সাংসদ ও অন্যান্য দলীয় কর্মী ভর্তি আরও দুটি পুলিশ বাস রয়েছে। ভগবানই জানেন আমরা কোথায় যাচ্ছি। সরকার রাষ্ট্রযন্ত্রের অপব্যবহার করছে। সরকারের এই ভূমিকা দেখে আমরা খুবই হতাশ। এটা গণতন্ত্রের উপর আক্রমণ। আমরা এই অপব্যবহারের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক প্রতিবাদ চালিয়ে যাব।’
শশী থারুর আরও বলেন, ‘আমরা সাধারণ মানুষের অধিকার এবং সমস্যা তুলে ধরতে চাই। সরকার সংসদে তা আলোচনা করতে চায় না। পরিবর্তে, প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষকে দিয়ে রাজনৈতিক নেতাদের এই ধরনের হয়রানি দেখতে পাচ্ছি। এটা সত্যিই দুঃখজনক, সত্যিই নিন্দনীয়। স্পষ্টতই, দেশের গণতন্ত্রের পক্ষে দাঁড়ানোর জন্যই আমাদের আটক করা হয়েছে।’ শশী থারুরের ভিডিয়োতে ওই বাসে আটক পবন খেরা, হরিশ রাওয়াত, অধীর রঞ্জন চৌধুরীদের দেখা গিয়েছে।
Karnataka | A car was set on fire allegedly by Youth Congress workers, in front of ED office at Shantinagar in Bengaluru earlier today.
Congress is holding nationwide protests today against the party's interim president Sonia Gandhi's questioning by the agency, in Delhi. pic.twitter.com/qk1bABE55n
— ANI (@ANI) July 21, 2022
অন্যদিকে কংগ্রেসের অন্যতম মুখপাত্র জয়রাম রমেশও এই বিষয়ে টুইট করেছেন। তিনি বলছেন, ‘বিশ্বগুরুর রাজনৈতিক প্রতিহিংসার লক্ষ্যবস্তু কংগ্রেস সভাপতি শ্রীমতী সনিয়া গান্ধীর প্রতি সম্মিলিত সংহতি প্রদর্শনে, পার্টির সদর দফতরের বাইরে কংগ্রেসের সমস্ত সাংসদ এবং ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যরা গণ গ্রেফতারি বরণ করেছেন। স্পষ্টতই আমাদের পুরনো দিল্লির কোনও থানায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে’। বাস থেকে সচিন পাইলট টুইট করে বলেছেন, ‘দেশে তদন্ত এজেন্সিগুলির অপব্যবহার করা হচ্ছে। গণতন্ত্রে প্রতিবাদ করা আমাদের অধিকার, কিন্তু তাও চূর্ণ করা হচ্ছে।’ চিদম্বরম টুইট করে বলেছেন, পুলিশ বাসে করে তাঁদের উত্তর দিল্লি বাইরে কোথাও নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তাঁদের আটক করা হয়েছে না গ্রেফতার করা হয়েছে, কিছুই দিল্লি পুলিশ জানায়নি।