দান্তেওয়াড়া: পুলিশের উপরে হামলা চালানো হবে, এই তথ্য কি আগেই ছিল? তবে কেন মাওবাদীদের হুমকি উপেক্ষা করা হল? বুধবার ছত্তীসগঢ়ের (Chhattisgarh) দান্তেওয়াড়ায় পুলিশের কনভয়ে হামলার পর এই প্রশ্নই উঠে আসছে। বুধবার দুপুরে দান্তেওয়াড়ার (Dantewada) জঙ্গল দিয়ে যাওয়ার সময় ডিআরজির ভ্যানে হামলা চালায় মাওবাদীরা। জঙ্গলের মাঝখান দিয়ে যাওয়া রাস্তাতেই পুঁতে রাখা হয়েছিল আইইডি বিস্ফোরক (IED Blast)। পুলিশের কনভয় পৌঁছতেই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, কমপক্ষে ৫০ কেজি আইইডি বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছিল কনভয়ে হামলা চালানোর জন্য। তদন্তে নেমে পুলিশের দাবি, মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকা দিয়ে যাতায়াতের জন্য যে নির্দিষ্ট নিয়ম বা স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসেডিওর (Standard Operating Procedure) অনুসরণ করা হয়, তা বুধবার মেনে চলা হয়নি। সম্প্রতি মাওবাদীদের দেওয়া হুমকিও (Maoist Threat) সম্পূর্ণ উপেক্ষা করা হয়েছিল।
জানা গিয়েছে, দিন কয়েক আগেই ছত্তীসগঢ়ের মাওবাদীরা একটি হুমকি চিঠি পাঠিয়েছিল। তাতে নিরাপত্তা বাহিনীর উপরে হামলা চালানোর হুমকিই দেওয়া হয়েছিল। চিঠিতে মাওবাদীদের দাবি ছিল, স্থানীয় বাসিন্দাদের শোষণ করছে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী। তাদের জীবনযাপন ও কাজে সমস্যার সৃষ্টি করছে।
গতকালের হামলার পরই পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, মাওবাদীরা যে হুমকি দিয়েছিল, তা সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করারই পরিণতি এই হামলা। জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সময় যে নিয়ম বা ‘এসওপি’ অনুসরণ করা হয়, তা দান্তেওয়াড়া জেলার আরনপুর রোড দিয়ে যাওয়ার সময় মানা হয়নি।
নিয়ম অনুযায়ী, গোয়েন্দাদের মাধ্যমে তথ্য ও রুটের পেট্রলিং হওয়ার পরই নিরাপত্তা বাহিনীর গাড়ি যাতায়াত করে। অনেক সময় এই কাজের জন্য নিরাপত্তা বাহিনী রোড ওপেনিং পার্টির সাহায্যও নেয়। তারা যদি জানান যে নির্দিষ্ট রুটে হামলার কোনও সম্ভাবনা নেই, তবেই কনভয় প্রবেশ করেন। কিন্তু বুধবার দান্তেওয়াড়ার হেডকোয়ার্টার থেকে বের হওয়ার পর আরনপুর রোড দিয়ে যাওয়ার জন্য গোয়েন্দাদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ তো দূর, রুটের স্যানিটাইজেশন বা পেট্রলিংও হয়নি।
সূত্রের খবর, মাওবাদী দমন অভিযান চালানোর জন্যই ডিআরজির ওই কনভয়টি ফিরছিল। তাদের কাছে গোপনসূত্রে খবর এসেছিল, আরনপুরে বেশ কিছু মাওবাদী লুকিয়ে রয়েছে। কিন্তু তল্লাশি অভিযানে কিছু না মেলায় কনভয়টি হেডকোয়ার্টারে ফিরে আসছিল। সেই সময়ই রাস্তায় পোঁতা আইইডি বিস্ফোরণ হয় এবং গাড়ির চালক সহ মোট ১১ জন পুলিশ কর্মীর মৃত্যু হয় ।
হামলার পর অনুমান, ডিআরজির ওই কনভয় আগে থেকেই মাওবাদীদের র্যাডারে ছিল। কনভয়টি কখন, কোথায় যাচ্ছে, তা ট্রাক করছিল মাওবাদীরা। তল্লাশি অভিযান চালিয়ে ফেরার সময় রুট বদল না করায়, মাওবাদীদের পরিকল্পনা সফল হয় এবং তারা আইইডি বিস্ফোরক দিয়ে কনভয় উড়িয়ে দেয় ।