কলম্বো: ক্ষোভে ফুঁসছে সাধারণ মানুষ, প্রতিবাদ-বিক্ষোভের আগুন জ্বলছে গোটা দেশে। আর্থিক সঙ্কট চরম আকার ধারণ করেছে শ্রীলঙ্কায় (Sri Lanka)। বিগত দুই মাস ধরেই দেশের আর্থিক পরিকাঠামো ভেঙে পড়লেও, ইস্তফা দিতে নারাজ ছিলেন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষ (Mahinda Rajapaksa)। গোটা মন্ত্রিসভা ইস্তফা দিলেও, নিজের পদেই বহাল ছিলেন তিনি। তবে শেষ অবধি সরকার-বিরোধী বিক্ষোভের কারণেই চলতি সপ্তাহে গদি ছাড়তে বাধ্য হন তিনি। এদিকে, পৈত্রিক ভিটেয় আগুন জ্বলতেই নৌ-সেনার গোপন ঘাঁটিতে আশ্রয় নিয়েছেন রাজাপক্ষ পরিবার। কলম্বোর আকাশে হেলিকপ্টারের দেখা মিলতেই জল্পনা শুরু হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর পরিবার হয়তো ভারতে পালিয়ে এসেছে। তবে কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রনেতারা এই দেশে পালিয়ে আসেননি।
ভারতীয় হাইকমিশনের তরফে টুইটে জানানো হয়েছে, শ্রীলঙ্কার কোনও রাজনৈতিক নেতা ও পরিবার ভারতে পালিয়ে আসেননি। টুইটে বলা হয়েছে, “সম্প্রতি হাই কমিশনের নজরে এসেছে যে সোশ্যাল মিডিয়ায় জল্পনা ছড়িয়েছে যে নির্দিষ্ট কিছু রাজনৈতিক নেতা ও পরিবার ভারতে পালিয়ে এসেছেন। এই খবর সম্পূর্ণ ভুয়ো এবং এর কোনও সত্যতা নেই। হাই কমিশনের তরফে তীব্রভাবে এই ভুয়ো তথ্যকে খারিজ করা হচ্ছে।”
বিদেশমন্ত্রকের তরফে আগেই জানানো হয়েছিল, শ্রীলঙ্কায় যে কঠিন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তা থেকে উদ্ধার করতে ভারত সম্পূর্ণ রকমের সহায়তার পক্ষে। বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী বলেছেন, “শ্রীলঙ্কার প্রতিবেশী হিসাবে ভারত সে দেশের গণতন্ত্র, স্থিতাবস্থা ও আর্থিক অবস্থার উন্নতির জন্য ভারত সম্পূর্ণ সহায়তা করতে প্রস্তুত।”
মঙ্গলবারই শ্রীলঙ্কা সরকারের তরফে বিক্ষোভকারীদের উপর গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যারাই সরকারি সম্পত্তি লুঠ করছে বা কোনও ক্ষয়ক্ষতি করছে, তাদের সেনা বাহিনী, বায়ু সেনা ও নৌ সেনার আধিকারিকেরা গুলি করতে পারেন। দেশের প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষ সাধারণ মানুষকে শান্তি বজায় রাখতে বলেছেন।
বিগত প্রায় দুই মাস ধরে শ্রীলঙ্কায় আর্থিক সঙ্কটের কারণে বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়েছে। সোমবার বিক্ষুব্ধ জনতা ও নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের জেরে কমপক্ষে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ২৫০ জন আহত হয়েছেন।