Media Trial: ‘মিডিয়া ট্রায়ালে’ উদ্বিগ্ন সুপ্রিম কোর্ট, তিনমাসের মধ্যে পুলিশের জন্য নিয়ম তৈরির নির্দেশ কেন্দ্রকে

TV9 Bangla Digital | Edited By: অমর্ত্য লাহিড়ী

Sep 13, 2023 | 6:36 PM

Supreme Court on media trials: বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর), স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে ফৌজদারি মামলাগুলির বিষয়ে পুলিশের মিডিয়া ব্রিফিংয়ের উপর একটি ম্যানুয়াল তৈরির নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এর জন্য তিন মাস সময় দেওয়া হয়েছে। ম্যানুয়ালের বিষয়ে বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির ডিজিপিদের, তাঁদের পরামর্শ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Media Trial: মিডিয়া ট্রায়ালে উদ্বিগ্ন সুপ্রিম কোর্ট, তিনমাসের মধ্যে পুলিশের জন্য নিয়ম তৈরির নির্দেশ কেন্দ্রকে
প্রতীকী ছবি
Image Credit source: TV9 Bangla

Follow Us

নয়া দিল্লি: ‘মিডিয়া ট্রায়াল’, অর্থাৎ, বিচার বিভাগের বাইরে সংবাদমাধ্যমে কোনও অভিযুক্তকে নিয়ে কাঁটাছেঁড়া করা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করল সুপ্রিম কোর্ট। ‘পুলিশ ব্রিফিং’, অর্থাৎ, কোনও মামলার বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে পুলিশ যে তথ্য প্রকাশ করে, তার ভিত্তিতে মিডিয়া ট্রায়াল হওয়া উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছে আদালত। এর জন্য, বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর), স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে ফৌজদারি মামলাগুলির বিষয়ে পুলিশের মিডিয়া ব্রিফিংয়ের উপর একটি ম্যানুয়াল তৈরির নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এর জন্য তিন মাস সময় দেওয়া হয়েছে। ম্যানুয়ালের বিষয়ে বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির ডিজিপিদের, তাঁদের পরামর্শ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি পিএস নরসিমা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, সংবাদমাধ্যমের পক্ষপাতদুষ্ট প্রতিবেদন অভিযুক্ত সম্পর্কে জনসাধারণের মনে একটি নির্দিষ্ট ধারণা তৈরি করে। যার জেরে মামলাটির তদন্ত প্রভাবিত হতে পারে। প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় আরও জানান, অপরাধের শিকার হয়েছেন যিনি, অনেক সময় তার গোপনীয়তাও লঙ্ঘন করে সংবাদমাধ্যমের এই ধরনের প্রতিবেদনগুলি।

মিডিয়া ট্রায়ালের বিষয়ে এক আবেদনের শুনানি চলাকালীন এদিন এই নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। এর আগে এই মামলায় সহায়তার জন্য, সিনিয়র আইনজীবী গোপাল শঙ্করনারায়ণনকে ‘অ্যামিকাস কিউরি’ বা ‘আদালত বন্ধু’ হিসেবে নিয়োগ করেছিল শীর্ষ আদালত। সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির সঙ্গে কথা বলে এবং মামলার অন্যতম আবেদনকারী, পিপলস ইউনিয়ন ফর সিভিল লিবার্টিজ-এর পর্যবেক্ষণ রিপোর্ট বিবেচনা করে, গোপাল শঙ্করনারায়ণন সুপারিশ করেন, সংবাদমাধ্যমকে কোনও ঘটনার প্রতিবেদন প্রকাশ করা থেকে আটকানো যায় না। তবে, তথ্যের উত্সগুলি নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সংবাদমাধ্যমের তথ্যের উৎস থাকে কোনও সরকারি সংস্থা। অথচ, অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, সরকারি সংস্থাগুলি থেকে কোনও একটি ঘটনার একাধিক সংস্করণ পৌঁছয় সংবাদমাধ্যমের কাছে। একাধিক সংস্করণের বদলে, কোনও একটি ঘটনার যাতে একটিই মিডিয়া ব্রিফিং থাকে, তা নিশ্চিত করতেই এই পদক্ষেপ করল আদালত।

প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় জানিয়েছেন, ইলেকট্রনিক মিডিয়া রিপোর্টিংয়ের পরিসর যত বাড়ছে, ততই মিডিয়া ট্রায়াল এবং পুলিশের মিডিয়া ব্রিফিং সংক্রান্ত সমস্যার তাৎপর্য বাড়ছে। তিনি জানিয়েছেন, বিষয়টির সঙ্গে বিভিন্ন স্তরে জনস্বার্থ জড়িয়ে। প্রধান বিচারপতি বলেন, “মিডিয়া ট্রায়ালের প্রভাব পড়ে বিচার বিভাগের উপর। তদন্তের কোন পর্যায়ে মামলার বিশদ তথ্য প্রকাশ করা হবে, সেই বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার। এর সঙ্গে অপরাধের শিকার এবং অভিযুক্ত – দুই পক্ষের স্বার্থই জড়িত। তাই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর সঙ্গে জনসাধারণের বৃহত্তর স্বার্থও জড়িয়ে আছে। তদন্তাধীন অভিযুক্তেরও সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত ও বিচারের অধিকার আছে। অপরাধ প্রমাণ হওয়ার আগে পর্যন্ত, তদন্তের প্রতিটি পর্যায়ে অভিযুক্তদের নির্দোষ বলেই ধরা উচিত। মিডিয়া রিপোর্টে যেভাবে কোনও অভিযুক্তকে অপরাধী বানিয়ে ফেলা হয়, তা অন্যায়।”

তদন্তের সময় জনগণের তথ্য জানার অধিকার, তদন্ত প্রক্রিয়া চলাকালীন পুলিশ কী কী তথ্য প্রকাশ করবে, সমাজে তার কী প্রভাব পড়বে, অভিযুক্তের অধিকারের মতো বিষয়গুলি বিবেচনা করে পুলিশের মিডিয়া ব্রিফিং বিষয়ে অ্যামিকাস কিউরির কিছু সুপারিশ জমা দিয়েছেন। লস এঞ্জেলেস পুলিশ ডিপার্টমেন্ট, নিউ ইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্ট, ব্রিটেনের চিফ পুলিশ অফিসারদের অ্যাসোসিয়েশনের যোগাযোগ উপদেষ্টা এবং সিবিআই-এর মিডিয়া রিলেশনস হ্যান্ডবুকের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই তিনি এই নির্দেশিকাগুলি তৈরি করেছেন। বিষয়টি চূড়ান্ত করার জন্য, সুপ্রিম কোর্ট সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ডিজিপিদের পরামর্শও চেয়েছে। ফৌজদারি মামলায় পুলিশের মিডিয়া ব্রিফিংয়ের জন্য ম্যানুয়াল প্রস্তুত করার বিষয়ে তাঁদের পরামর্শ, একমাসের মধ্যে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে জমা দিতে হবে। আর, তিন মাসের মধ্যে ম্যানুয়াল তৈরি করতে হবে মন্ত্রককে।

Next Article