নয়া দিল্লি: সেন্ট্রাল ভিস্তা ভবনের উপরে স্থাপিত জাতীয় প্রতীক নিয়ে বিতর্কের অবসান ঘটালো সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর), জাতীয় প্রতীকের এই নয়া স্থাপত্যটি ২০০৫ সালের ভারতের জাতীয় প্রতীক (অপব্যবহার প্রতিরোধ) আইন লঙ্ঘনকারী নয় বলে স্পষ্ট জানালো আদালত। বিচারপতি এমআর শাহ এবং কৃষ্ণ মূর্তির এক বেঞ্চ বলেছে, “ব্যক্তিবিশেষের মনের উপর নির্ভর করছে প্রতীকটির তাঁর মনে কী ছাপ ফেলবে। প্রতীকটি আইন লঙ্ঘন করেছে, তা বলা যাবে না।”
আইনজীবী আলদানিশ রাইন এবং রমেশ কুমার মিশ্র আদালতে এই বিষয়ে একটি আবেদন দাখিল করেছিলেন। তাঁরা দাবি করেছিলেন সেন্ট্রাল ভিস্তা ভবনের উপরে স্থাপিত জাতীয় প্রতীকের নয়া স্থাপত্যে যে সিংহগুলি রয়েছে, সেগুলি “হিংস্র এবং আগ্রাসী”। সেগুলির মুখ হাঁ করা এবং শ্বদন্ত দেখা যাচ্ছে। কিন্তু সারনাথ জাদুঘরে রাখা জাতীয় প্রতীকের স্থাপত্যে যে সিংহগুলি রয়েছে, সেগুলি “শান্ত এবং ধীরস্থির”। নয়া স্থাপত্যটির ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার, জাতীয় প্রতীকের নকশা পরিবর্তন করেছে দাবি করে আবেদনে বলা হয় “জাতীয় প্রতীকের পবিত্রতা লঙ্ঘন করে চরম স্বেচ্ছাচারিতা প্রকাশ করেছে সরকার।” এর ফলে দেশের নাগরিকদের “জাতীয় অনুভূতিতে আঘাত লেগেছে” বলেও দাবি করা হয়েছিল।
গত জুলাই মাসে সেন্ট্রাল ভিস্তা ভবনের উপরে স্থাপিত জাতীয় প্রতীকের এই স্থাপত্যটির উন্মোচন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। উন্মোচনের দিন থেকেই এই স্থাপত্য নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। একযোগে প্রায় সকল বিরোধী দলই জাতীয় প্রতীকে থাকা সিংহগুলির অভিব্যক্তি নিয়ে অভিযোগ করেছিল। জাতীয় প্রতীকের অবমাননা করার অভিযোগ উঠেছিল মোদী সরকারের বিরুদ্ধে। তবে কেন্দ্রীয় সরকার এই যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে জানিয়েছিল, জাতীয় প্রতীক নিয়ে বিস্তর গবেষণা করেই এই নয়া স্থাপত্যটি তৈরি করা হয়েছে। আয়তনে নয়া স্থাপত্যটি অনেক বড় বলেই, সিংহগুলিকে আগ্রাসী বলে মনে হচ্ছে বলে জানিয়েছিল সরকার।
বর্তমান মামলার ক্ষেত্রে আবেদনকারীরা দাবি করেছিলেন, জাতীয় প্রতীকের সিংহের নকশা দৃশ্যতই সারনাথ জাদুঘরে সংরক্ষিত অশোকস্তম্ভের থেকে আলাদা। তাছাড়া সিংহগুলির নিচে দেবনাগরী লিপিতে “সত্যমেব জয়তে” নীতিবাক্যও লেখা নেই। তবে, এদিন আদালত সাফ জানিয়ে দিল, নকশায় কোনও পরিবর্তন করা হয়নি।