নয়া দিল্লি : গত ১৫ অগস্ট মুক্তি পেয়েছিল বিলকিস বানো গণধর্ষণ কাণ্ডের ১১ জন সাজাপ্রাপ্ত দোষী। সেই মুক্তির বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হয়েছিল মামলা। সেই মামলার শুনানিতে আজ সুপ্রিম কোর্টের তরফে গুজরাট সরকারের উদ্দেশে নোটিস জারি করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০০২ সালে গোধরায় বিলকিস বানোর পরিবারের ৭ জন সদস্যকে খুন এবং ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বিলকিসকে গণধর্ষণ করেছিল ১১ জন। তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনানো হয়েছিল। তবে দেশের ৭৫ তম স্বাধীনতা পূর্তি উপলক্ষে গুজরাট সরকার সেই ১১ দোষীকে গোধরা জেল থেকে মুক্তি দেয়।
আজকে সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণের এজলাসে মামলার শুনানি শুরু হয়। আজ আবেদনকারীকে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয় যাতে মুক্তিপ্রাপ্ত দোষীদের এই মামলা প্রসঙ্গে অবগত করা হয়। এই মামলাটির পরবর্তী শুনানি দুই সপ্তাহ পরে হবে বলে জানানো হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের তরফে। জানা গিয়েছে, সুপ্রিম কোর্টে বিলকিস বানোর দোষীদের মুক্তির বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন সিপিএম-এর পলিটব্যুরো সদস্য সুভাষিনী আলি, তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্র। ১৫ অগস্ট বিলকিসস বানোর দোষীরা মুক্তি পাওয়ার পরই ঘটনাটি রাজনৈতিক মোড় নেয়। এই নিয়ে বিরোধীদের তোপের মুখে পড়তে হয় গুজরাটের বিজেপি সরকারকে। এমনকী যে বিচারপতি সেই ১১ দোষীকে সাজার রায় দিয়েছিলেন, তিনিও তাদের মুক্তির বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন। এদিকে এই ঘটনায় বিতর্ক আরও বেশি করে দানা বাঁধে কারণ মুক্তির দিন সেই ১১ দোষীকে ফুলের মালা পরিয়ে স্বাগত জানানো হয়েছিল।
এর আগে বিলকিস মামলার রায়দানকারী অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ইউডি সালভি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘এই দোষীদের মুক্তি দেওয়ার আগে কি সেই বিচারপতির সঙ্গে কথা বলা হয়েছিল যিনি তাদের হাজতে পাঠিয়েছিলেন? আমি আপনাকে বলতে পারি যে আমি তো এমন কিছু শুনিনি। এমনিতেও এই ধরনের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারকে কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে পরমার্শ নিতে হয়। তারা কি সেটা করেছিল? আমার এই বিষয়ে কোনও ধারণা নেই। আমার মনে হয় না তাঁরা সমস্ত নিয়ম মেনে দোষীদের মুক্তি দিয়েছিল।’
এদিকে গত ১৫ অগস্ট যখন বিলকিসের দোষীদের জেল থেকে ছাড়া হয় তখন তাদের ফুল, মিষ্টি দিয়ে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল কয়েকজন। অভিযোগ উঠেছে তারা বিজেপি ঘনিষ্ঠ। এমনকি এক বিজেপি বিধায়ক এও বলেন যে ‘দোষীরা ব্রাহ্মণ এবং তাদের ভালো সংস্কার রয়েছে।’ এদিকে দোষীরা মুক্তি পাওয়ার পর নির্যাতিতা বিলকিস বানো বলেছিলেন যে বিচার ব্যবস্থার উপর তার আস্থা নড়বড়ে হয়ে গিয়েছে এবং তিনি স্তম্ভিত।