নয়া দিল্লি: বায়ুদূষণ(Air Pollution)-কে হালকাভালে নিতে নারাজ সুপ্রিম কোর্ট(Supreme Court)। সেই কারণেই ফের নির্মাণকার্যে (Construction Work) নিষেধাজ্ঞা জারি করল সুপ্রিম কোর্ট। বুধবার দিল্লির বায়ুদূষণ নিয়ে একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে বাতাসের গুণমান বজায় রাখার বিষয়টি বিবেচনা করে ফের নির্মাণকাজে নিষেধাজ্ঞা জারির সিদ্ধান্তই নিল শীর্ষ আদালত।
শীর্ষ আদালতের তরফে জানানো হয়েছে বাড়ি ভাঙা, ঢালাইয়ের মতো কাজে নিষেধাজ্ঞা জারি থাকলেও যে সমস্ত নির্মাণকাজে দূষণ হয় না, যেমন জলের পাইপ সারাই(Plumbing), অন্দরসজ্জা(Interior Decoration), বৈদ্যুতিন কাজ (Electric Work) ও কাঠের কাজের (carpentry) ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে দূষণ নিয়ন্ত্রণে এই নিষেধাজ্ঞার জন্য যে সমস্ত শ্রমিকদের দিন গুজরান কষ্টকর হয়ে উঠেছে, তাদের আর্থিক সহায়তার জন্য বিল্ডিং ও অন্যান্য নির্মাণকর্মী কল্যাণ সেস আইন ১৯৯৬-র অধীনে যে সেস গ্রহণ করা হয়, সেই তহবিল ব্যবহার করা হয়।
গত সপ্তাহের মঙ্গলবার থেকেই ২২ নভেম্বর অবধি দিল্লিতে নির্মাণকাজ সহ একাধিক বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। সোমবার সেই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর নতুন নির্দেশিকায় স্কুল, কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকার কথা বলা হলেও নির্মাণকাজ নিয়ে কিছু বলা হয়নি, ফলে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। এদিকে, ঠিকে কর্মীরাও সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়ে নির্মাণকাজ শুরু করার আবেদন জানায়। তবে দিল্লির বায়ুদূষণের কথা মাথায় রেখে আপাতত নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তই নিল শীর্ষ আদালত।
গতকালের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, “দূষণ নিয়ন্ত্রণে অন্তর্বর্তী পদক্ষেপ হিসাবে পরবর্তী নির্দেশ না আসা অবধি আমরা দিল্লি সংলগ্ন এলাকাগুলিতে দুটি শর্তে নির্মাণকাজে ফের নিষেধাজ্ঞা জারি করছি। যে কাজগুলিতে দূষণ হয় না, যেমন জলের পাইপের কাজ, অন্দরসজ্জা, বৈদ্যুতিন কাজ ও কাঠের কাজে অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। রাজ্য সরকারকে গৃহীত সেসের তহবিল ব্যয়বহার করে নির্মাণকাজের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিক, যাদের দিন গুজরান কঠিন হয়ে উঠেছে নিষেধাজ্ঞার জন্য, তাদের আর্থিক সাহায্যের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।”
বুধবার দিল্লির বাতাসের গুণমান ছিল ২৯০, যা “খারাপ” পর্যায়ে পড়ে। গত সপ্তাহেই এই গুণমানের মাত্রা ছিল ৪০৩, যা “বিপজ্জনক” পর্যায়ে পড়ে। দিল্লির বাতাসের কিছুটা উন্নতি হতেই সোমবার দিল্লি সরকারের তরফে নির্মাণকাজে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাও এই মর্মে একটি হলফনামা জমা দিয়েছেন আদালতে।
এ দিকে, দিল্লির পরিবেশ মন্ত্রী গোপাল রাইও বুধবার জানিয়েছেন যে, অত্যাবশ্যকীয় পণ্য বহনকারী ছাড়া বাকি সমস্ত ট্রাক ও টেম্পো চলাচলে যে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল, তার নিয়মে কিছুটা পরিবর্তন আনা হচ্ছে। আগামী ২৭ নভেম্বর থেকে কম্পপ্রেসড ন্যাচরাল গ্যাস বা সিএনজিতে চালিত ট্রাক ও টেম্পোও দিল্লিতে প্রবেশ করতে পারবে।
দিল্লির বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে বাতাসের গুণমান নিয়ন্ত্রক সংস্থা(Air Quality Management Commission)-কেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। ২১ নভেম্বর অবধি তারা প্রথমে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন। পরে ২১ নভেম্বরই তারা একটি বৈঠক করে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন। তবে দিল্লি সরকারের তরফে স্কুল, কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। আগামী সোমবার থেকে দিল্লির স্কুলও খুলে যাচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।