নয়া দিল্লি: সমস্ত ভারতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র এবং শিক্ষকদের জন্য অভিন্ন পোশাক বিধি চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি আবেদন করা হয়েছিল। তবে, শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সেই মামলা গ্রহণ করতে অস্বীকার করল শীর্ষ আদালত। বিচারপতি হেমন্ত গুপ্ত এবং সুধাংশু ধুলিয়ার বেঞ্চ বলেছে, “এটা আদালতের বিচার্য বিষয় নয়।” আবেদনকারী পক্ষ বলেছিল, সামাজিক সমতা, মর্যাদা নিশ্চিত করা এবং ভ্রাতৃত্ব, ঐক্য এবং জাতীয় সংহতিকে উন্নীত করার জন্যই নিবন্ধিত এবং স্বীকৃত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতে সাধারণ পোশাক বিধি কার্যকর করা প্রয়োজন। এর জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে কেন্দ্র এবং রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দিক আদালত, এমনটাই চেয়েছিল আবেদনকারী।
আবেদনপত্রে বলা হয়, “সাধারণ পোশাক বিধি শুধুমাত্র সাম্য, সামাজিক ন্যায়বিচার, গণতন্ত্রের মূল্যবোধের উন্নতি এবং ন্যায় ও মানবিক সমাজ গঠনের জন্যই প্রয়োজনীয় নয়। বর্ণবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, শ্রেণীভেদ, চরমপন্থা, বিচ্ছিন্নতাবাদ এবং মৌলবাদের মতো হুমকিগুলির মোকাবিলার জন্য়ও অপরিহার্য এই বিধি।” আবেদনকারী পক্ষ আরও জানায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, সিঙ্গাপুর এবং চিনের সমস্ত স্কুল এবং কলেজে সাধারণ পোশাক বিধি মেনে চলা হয়। এদিন আদালতে আবেদনকারীর আইনজীবী আরও বলেন যে এটা একটা সাংবিধানিক সমস্যা। শিক্ষার অধিকারের আওতায় পোশাকে অভিন্নতা থাকা উচিত, শৃঙ্খলা থাকা উচিত। তিনি আরও বলেন, “এটা না করা হলে, কাল নাগা সাধুরা ধর্মের দোহাই দিয়ে নগ্ন হয়ে কলেজে ক্লাস করতে চলে আসতে পারেন।”
তবে, এই সকল যুক্তিও বিচারপতিদের সিদ্ধান্ত বদলাতে পারেনি। তাঁরা সাফ জানিয়ে দেন, “বিষয়টি আদালতের আওতায় নেই।” এরপরই আদালতের পক্ষ থেকে মামলাটির শুনানি খারিজ করে দেওয়া হয়। এরপর আবেদনকারী মামলাটি প্রত্যাহার করে নিতে চান। তাঁকে সেই অনুমতি দেয় শীর্ষ আদালত। চলতি সপ্তাহের শুরুতেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব নিষেধাজ্ঞার মামলায় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হেমন্ত গুপ্ত এবং সুধাংশু ধুলিয়ার বেঞ্চই জানিয়েছিল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির নির্দিষ্ট উর্দি নির্ধারণের ক্ষমতা রয়েছে। জবাবে আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ বলেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি উর্দি নির্ধারণ করতে পারে ঠিকই। কিন্তু, ধর্মীয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ হিজাব পরা নিষিদ্ধ করতে পারে না।