মুম্বই: মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর), মুম্বই মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেড বা এমএমআরসিএল-কে, আরে কলোনির ৮৪টি গাছ কাটার জন্য, ট্রি অথোরিটির কাছে আবেদন করার অনুমতি দিল সুপ্রিম কোর্ট। এর আগে এই স্থানে মেট্রো কার শেড প্রকল্পের জন্য গাছ কাটার অনুমতি নেওয়ার উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। এদিন অবশ্য স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়াতে অস্বীকার করেছে আদালত। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি পি এস নরসীমার বেঞ্চ জানিয়েছে, শর্ত সাপেক্ষে এমএমআরসিএল-এর আবেদনের ভিত্তিতে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে ট্রি অথোরিটি।
এর আগে উদ্ধব ঠাকরে সরকার আরে কলোনিতে মেট্রো কারশেড তৈরির সিদ্ধান্ত বাতিল করেছিল। পরিবর্তে কাঞ্জুরমার্গে কারশেড তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তবে, সরকার বদলের পর মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে আরে কলোনিতেই কারশেড তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এদিন আদালত পর্যবেক্ষণ করেছে, প্রাসঙ্গিক বিবেচনার ভিত্তিতেই এই সিদ্ধান্ত বদল করা হয়েছে। ফলে, এই অন্তর্বর্তী পর্যায়ে আদালতের পক্ষে স্থগিতাদেশ জারি করা অসম্ভব। আদালত আরও জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে বম্বে হাইকোর্ট গাছ কাটার পাশাপাশি আরেতে মেট্রো কার শেড তৈরিকে বৈধ বলে মনে করে। আদালত বলেছে, এই ধরনের প্রকল্পগুলিতে, বিপুল পরিমাণ গণ তহবিল জড়িয়ে থাকে। এই সরকারি বিনিয়োগকে উপেক্ষা করতে পারে না আদালত। তবে, পরিবেশ সম্পর্কিত উদ্বেগগুলিও গুরুত্বপূর্ণ।
এদিন আদালতে ভারতের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা, জানান, এই প্রকল্পের প্রায় ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ। ইতিমধ্যেই ২১৪৪টি গাছ কাটা পড়েছে। বাকি আছে, র্যাম্প তৈরির জন্য ৮৪টি গাছ কাটা। যে গাছগুলি কাটা হচ্ছে তা অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে গিয়ে লাগানো হবে, অথবা সেগুলির বদলে নতুন গাছ লাগানো হবে। তিনি আরও জানান, এই প্রকল্পটির মূল খরচ ছিল ২৩,০০০ কোটি টাকা। ইতিমধ্যেই ২২,০০০ টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। চলতি মামলার কারণে প্রকল্পের খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৭,০০০ কোটি টাকা। এই বিপুল খরচের কারণে, কাঞ্জুরমার্গকে মেট্রো প্রকল্পটির বিকল্প জায়গা হিসেবে বেছে নেওয়া অসম্ভব।
অন্যদিকে, গাছ কাটার বিরোধী পরিবেশ কর্মীদের পক্ষে আদালতে উপস্থিত হয়ে বিশিষ্ট আইনজীবী চন্দর উদয় সিং জানান, পুরো প্রকল্পের জন্য আনুমানিক বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ২৩,০০০ কোটি টাকা। এটা শুধুমাত্র কারশেড তৈরির জন্য বিনিয়োগ নয়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে, কারশেডটির একটি স্তম্ভ ছাড়া আর কোনও নির্মাণ কাজ হয়নি। তাঁর মতে প্রকল্পটির খরচ বৃদ্ধির সঙ্গে কারশেড নির্মাণের কোনও সম্পর্ক নেই। প্রযুক্তিগত সম্ভাবনা, যাত্রীদের চাহিদা পূরণের ক্ষমতা, পরিবেশগত প্রভাব এবং জমি অধিগ্রহণের সুবিধার কারণ দেখিয়ে কাঞ্জুরমার্গকেই তিনি এই প্রকল্পের উপযুক্ত ক্ষেত্র বলে দাবি করেন। তিনি আরও জানান, আরে বনাঞ্চল একটি প্রাচীন জঙ্গল। এটি বেশ কয়েকটি বিপন্ন প্রাণীকূলের আবাসস্থল।