নয়া দিল্লি: অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপতি মন্দিরের লাড্ডুর ঘি বিতর্ক নিয়ে মামলায়, সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর), রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুর ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করল। আদাতত স্পষ্ট জানিয়েছে, তিনি সাংবিধানিক পদে বসে ধর্ম এবং রাজনীতিকে মেশানোর চেষ্টা করছেন। এটা করা যাবে না। লাড্ডুতে ব্যবহৃত ঘি-তে মাছের তেল, গরুর এবং শুয়োরের চর্বি মেশানো হত, তার কোনও সুনির্দিষ্ট প্রমাণ নেই বলে জানিয়েছে আদালত। শীর্ষ আদালত আরও বলেছে, রাজ্য সরকার এই বিষয় তদন্ত করছে। কিন্তু, সুনির্দিষ্ট প্রমাণ ছাড়া মুখ্যমন্ত্রী যদি বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে বিব-তি দেন, তাহলে সেই তদন্তের কী প্রয়োজন?
এই বিষয়ে তিনটি আবেদন জমা পড়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। তার শুনানিতে, বিচারপতি বিআর গাভাই এবং বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ স্পষ্টতই অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। বিচারপতি গাভাই বলেন, “আপনি (মুখ্যমন্ত্রী) সাংবিধানিক পদে অধিষ্ঠিত। তাই, আমরা আশা করি আপনি ঈশ্বরকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখবেন। আপনি ইতিমধ্যেই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তাহলে সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলার কী দরকার ছিল? ল্যাবের রিপোর্ট এসেছে জুলাই মাসে, আপনি বক্তব্য রেখেছেন সেপ্টেম্বরে। সেই রিপোর্টটিও মোটেই পরিষ্কার নয়। আপনি নিশ্চিত না হয়ে জনসমক্ষে মন্তব্য করলেন কীভাবে? তদন্তের তাহলে মনে কী?”
গত ২০ সেপ্টেম্বর, অন্ধ্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওয়াইএস জগনমোহন রেড্ডির আমলে, তিরুপতি মন্দিরের লাড্ডু তৈরির ঘি-তে পশুর চর্বি দেওয়া হত বলে অভিযোগে করেছিলেন চন্দ্রবাবু নাইডু। যা নিয়ে দক্ষিণী এই রাজ্যে ব্যাপক রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের সূচনা হয়। তিরুপতি মন্দিরে ‘শুদ্ধিকরণ’ অনুষ্ঠানও করেন তিনি। তবে এদিন, শীর্ষ আদালত সাফ জানিয়েছে, যে ঘিয়ের মান নিয়ে অভিযোগ এসেছে, তা যে ওই লাড্ডু তৈরিতেই ব্যবহার করা হয়েছিল, তারও কোনও প্রমাণ নেই। বিচারপতি গাভাই প্রশ্ন করেন, “লাড্ডু তৈরিতে যে এই ঘি ব্যবহার করা হয়েছিল, তার প্রমাণ কোথায়?”
গুজরাটের ন্যাশনাল ডেয়ারি ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের ‘লাইভস্টক অ্যান্ড ফুড ল্যাবে সেন্টার অব অ্যানালাইসিস অ্যান্ড লার্নিং’ ওই রিপোর্টে তৈরি করেছিল। এদিন, চন্দ্রবাবুর দলের পক্ষে উপস্থিত আইনজীবীকে, সেই রিপোর্টটি জোরে জোরে পড়ার জন্য অনুরোধ করে আদালত। দেখা যায় রিপোর্টে বলা হয়েছে, ওই ঘি-তে পশুর চর্বির উপস্থিতি সম্পর্কে পজিটিভ রিপোর্টটি ভুল করেও এসে থাকতে পারে। এরপর বিচারপতি বিশ্বনাথন প্রশ্ন করেন, “আপনার বিচক্ষণতা কি আপনাকে, জনসমক্ষে মন্তব্য করার আগে এই রিপোর্টের বিষয়ে দ্বিতীয় মতামত নেওয়ার কথা বলে না? আমরা সাধারণত দ্বিতীয় একটি মতামত নিয়ে থাকি। এই ঘি-ই যে লাড্ডু তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে, তার কোন প্রমাণ নেই।”