নয়া দিল্লি: বাদল অধিবেশনের শেষ দিনে ভারতীয় দণ্ডবিধি থেকে বিচারব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনতে সংসদের লোকসভায় তিনটি বিল পেশ করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বর্তমানে বিলগুলি স্ট্যান্ডিংকমিটিতে পর্যালোচনার জন্য পাঠানো হয়েছে। এদিকে, এই বিল পেশ হতেই আপত্তি তুলল তামিলনাড়ুর শাসক দল ডিএমকে। শুক্রবারই তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন টুইট করে লেখেন, “উপনিবেশিকরণ দূর করার নামে ফের উপনিবেশিকরণ করা হচ্ছে”। এর পাল্টা জবাব দিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। তিনি ডিএমকে-কে আক্রমণ করে বলেন, “যারা তামিলনাড়ুর সংস্কৃতিরক্ষক হওয়ার দাবি করছেন, তারাই সংসদ ভবনের উদ্বোধনের সময় সেঙ্গোল নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল।”
শুক্রবার লোকসভায় তিনটি বিল পেশ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি জানান, ইন্ডিয়ান পেনাল কোড (Indian Penal Code), ১৮৬০, ক্রিমিনাল প্রসিডিউর কোড (Code of Criminal Procedure), ১৮৫৮ ও ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্ট (Indian Evidence Act), ১৮৭২- এই তিনটি আইনে পরিবর্তে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা ও ভারতীয় সাক্ষ্য আইন আনা হবে। ব্রিটিশ শাসকের তৈরি করা আইনগুলির পরিবর্তে এই নতুন আইনগুলি কার্যকর করা হবে।
কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তেরই বিরোধিতা করেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন। তিনি টুইটে বলেন, “উপনিবেশিকরণ দূর করার নামে উপনিবেশিকরণ করা হবে! কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ভারতের বৈচিত্র্যকে মুছে ফেলার চেষ্টা করছে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা ও ভারতীয় সাক্ষ্য বিলের মাধ্যমে। এটা ভাষাগত সাম্রাজ্যবাদ। ভারতের ঐক্য়ের সম্পূর্ণ বিরোধী। বিজেপি ও প্রধানমন্ত্রী মোদীর এরপর আর তামিল শব্দটি উচ্চারণের কোনও নৈতিক অধিকার রইল না। হিন্দি-বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে ভাষাগত পরিচিতি রক্ষা, আমরা আগেও হিন্দি ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়েছি এবং আবারও করব। হিন্দি উপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের আগুন আরও একবার জ্বলে উঠল।”
স্ট্যালিনের এই টুইটেরই পাল্টা জবাব দেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। তিনি পাল্টা টুইট করে লেখেন, “এই ধরনের তুচ্ছ রাজনীতি তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যলিনের রাজনৈতিক উচ্চাকাক্ষাকে হয়তো পূরণ করতে পারে, কিন্তু দেশের মনোবল দুর্বল করে। যারা তামিল গর্বের রক্ষক হিসাবে নিজেদের দাবি করছেন, তারাই তামিলনাডুর গর্ব, পবিত্র সেঙ্গোল বয়কট করেছিল নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধনের সময়।ভারত সভ্যতার ধারাবাহিকতা বজায় রেখে চলেছে এবং ভাষাগত বৈচিত্র এর মূল ভিত্তি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বিজেপি সর্বদাই ভারতের ভাষাগত বৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও প্রচারের হয়ে সওয়াল করেছে। কাশি তামিল সঙ্গমম তার প্রকৃষ্ঠ উদাহরণ।”