Ratan Tata: ফুলেফেঁপে উঠেছে লোকসানে চলা সংস্থাও, টাটা পরিবারের ‘জাদুকাঠি’ ছিল রতন টাটার কাছেও

Ratan Tata: টাটা পরিবারের 'জাদুকাঠি' উত্তরাধিকার সূত্রেই যেন পেয়েছিলেন রতন টাটা। বুধবার শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি। তাঁর প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে ভারতের বিশিষ্ট শিল্পপতিরা। ভারত 'রতন' হারিয়েছে। কিন্তু, তাঁর হাতে পড়া সংস্থাগুলি আজও সোনার মতো চকচক করছে।

Ratan Tata: ফুলেফেঁপে উঠেছে লোকসানে চলা সংস্থাও, টাটা পরিবারের 'জাদুকাঠি' ছিল রতন টাটার কাছেও
রতন টাটা
Follow Us:
| Updated on: Oct 10, 2024 | 6:19 PM

মুম্বই: ব্যবসা তাঁর মজ্জাগত। টাটা পরিবারের চতুর্থ প্রজন্ম তিনি। উত্তরাধিকার সূত্রেই যেন সেই ক্ষমতা পেয়েছিলেন রতন টাটাও। টাটা গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা জামশেদজি টাটা থেকে শুরু করে জেআরডি টাটা। তারপর রতন টাটা। টাটা পরিবারের প্রতি প্রজন্মের কাছে যেন ‘জাদুকাঠি’ ছিল। যেখানে লোকসানে চলা সংস্থাও টাটাদের হাতে পড়ে লাভের মুখ দেখেছে। দেখে নেওয়া যাক সেই ইতিহাস।

জামশেদজি টাটা-

‘তাজ হোটেল’ তৈরির আগে কাপড়ের ব্যবসা শুরু করেছিলেন জামশেদজি টাটা। ১৮৭৪ সালে দেড় লক্ষ টাকা নিয়ে মহারাষ্ট্রের নাগপুরে কাপড়ে কারখানা খোলেন তিনি। পরবর্তীকালে এই কারখানার নাম হয় এমপ্রেস মিল। কাপড়ের ব্যবসায় লাভ হওয়ায় কুরলায় একটি মিল কিনে নেন তিনি। কোম্পানি চার বছর ধরে লোকসানে চলছিল। কিন্তু, জামশেদজি তা কিনে নিয়ে নিজের মতো করো ব্যবসা শুরু করেন। তারপরই সংস্থাটি লাভের মুখ দেখে।

কিন্তু, বিষয়টা এত সহজ ছিল না। মিলটি কেনার পর তার নাম বদলে স্বদেশি মিল রাখেন জামশেদজি। সেইসময় মিলে নানা সমস্যা। শ্রমিক নেই। পুরনো যন্ত্রপাতি। মিলে তৈরি কাপড়ের বিরুদ্ধে গুচ্ছগুচ্ছ অভিযোগ। ২ বছর পর মিলটির শেয়ারহোল্ডাররা ক্ষতির মুখে পড়েন। মিলের শেয়ারদর ক্রমশ কমতে থাকে। মিলটিকে রক্ষা করতে ঝাঁপিয়ে পড়েন জামশেদজি। স্বদেশি মিলে আরও বিনিয়োগ করেন। এমনকি, এর জন্য এমপ্রেস মিলের শেয়ার বিক্রি করেন তিনি। নতুন যন্ত্রপাতি কেনেন। নাগপুর মিলের অভিজ্ঞ কর্মচারীদের এই মিলে নিয়োগ করেন। তাঁদের দায়িত্ব দেন। ধীরে ধীরে মিলটি লাভের মুখ দেখে।

জেআরডি টাটা-

এমন ঘটনা ঘটেছে জেআরডি টাটার জীবনেও। দেশের প্রথম বিমান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়া তাঁর তৈরি। সেইসময় ভারতের খুব কম মানুষ বিমানে চড়তেন। তা লাভবানও ছিল না। কিন্তু, জেআরডি টাটা এয়ার ইন্ডিয়াকে এমনভাবে তৈরি করেছিলেন, যা অন্য দেশের কাছে ভারতীয় সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছিল। অন্য দেশগুলি ভারতে তাদের কর্মীদের পাঠাতে শুরু করল এয়ার ইন্ডিয়ার কাছে প্রশিক্ষণের জন্য। এয়ার ইন্ডিয়া আবার টাটা গ্রুপের হাতে ফিরে এসেছে। ফের টাটা গ্রুপ লাভের মুখ দেখবে বলে আশা বাড়ছে। জেআরডি টাটা একাধিক সংস্থা তৈরি করেছিলেন। একাধিক সংস্থা তাঁর হাত ধরে লাভের মুখও দেখে। টাটা মোটরস, টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিস, টাটা কনজিউমার প্রোডাক্টস, টাটা সল্ট, টাইটান এবং লেকমির মতো সংস্থাগুলি জেআরডি টাটার হাতে প্রতিষ্ঠিত কিংবা সাফল্যের শিখরে পৌঁছেছে।

রতন টাটা-

টাটা গ্রুপের শীর্ষস্থানে রতন টাটা ছিলেন প্রায় ৩০ বছর। এই ৩০ বছরে টাটা গ্রুপকে আন্তর্জাতিক কোম্পানি করেছেন তিনি। নয়ের দশকে দেশে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্র যখন বিস্তার লাভ করছে, তখন টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসের অভিমুখই বদলে ফেলেন রতন টাটা। এখন বিশ্বের দুই নম্বর মূল্যবান আইটি পরিষেবা কোম্পানি টিসিএস। কর্মীসংখ্যায় বিশ্বের এক নম্বর কোম্পানি। টিসিএসের কর্মীসংখ্যা ৬ লক্ষেরও বেশি। ব্রিটেনের কোরাস স্টিল, টেটলে টি সংস্থা কিনে তাকে লাভের মুখ দেখিয়েছেন রতন টাটা। মধ্যবিত্তের গাড়ি চড়ার স্বপ্ন পূরণের জন্য এক লাখ টাকা দামের ন্যানো গাড়িও বাজারে আনেন তিনি।

এভাবেই টাটা পরিবারের ‘জাদুকাঠি’ উত্তরাধিকার সূত্রেই যেন পেয়েছিলেন রতন টাটা। বুধবার শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি। তাঁর প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে ভারতের বিশিষ্ট শিল্পপতিরা। ভারত ‘রতন’ হারিয়েছে। কিন্তু, তাঁর হাতে পড়া সংস্থাগুলি আজও সোনার মতো চকচক করছে।