নয়া দিল্লি: বিরোধী ঐক্য গঠন হওয়ার আগেই ভাঙন! পরবর্তী রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে অ-বিজেপি নেতৃত্বদের একজোট করার গুরু দায়িত্ব নিজের কাঁধেই তুলে নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। কিন্তু বিরোধী জোটের বৈঠকের আগেই একে একে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বৈঠক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। মঙ্গলবারই দিল্লিতে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে, বৈঠকের আগেই সরে দাঁড়ালেন তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতির প্রধান তথা মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও। এ দিন তিনি সাফ জানিয়ে দেন যে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকা বৈঠকে তিনি যোগ দেবেন না। কংগ্রেসকে এই বৈঠকে ডাকা হয়েছে বলেই তিনি যাবেন না। অন্যদিকে, আম আদমি পার্টিও এই বৈঠকে যোগ দেবে না বরলেই সূত্রের খবর।
সংসদ অধিবেশনের আগেই বিরোধীদের একজোট করার কাজে নেমেছিল কংগ্রেস। এদিকে, বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের পরই তৃণমূল কংগ্রেসও জাতীয় রাজনীতিতে পা রেখেছিল। দুই দলের মধ্যে মত পার্থক্যের জেরেই সেই সময় বিরোধী ঐক্যে ফাটল ধরেছিল। তবে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন ও আগামী মাসেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে অ-বিজেপি শাসিত রাজ্য়ের মুখ্য়মন্ত্রী ও অন্যান্য বিরোধী দলের নেতাদের বৈঠকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
গতকালই দিল্লি পৌঁছেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ত্রিপুরা থেকে সরাসরি দিল্লিতে পৌঁছেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। অ-বিজেপি শাসিত ৮ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সহ মোট ২২ টি রাজনৈতিক দলকে বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।
এদিকে, আমন্ত্রণ জানানোর পর থেকেই একের পর এক রাজনৈতিক দল বৈঠক থেকে সরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। প্রথমেই সরে দাঁড়ান মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। তাঁর বদলে এ দিনের বৈঠকে যোগ দিতে পারেন সঞ্জয় রাউত। গতকাল সিপিআইএমের তরফেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তাদের দলের কেউ এই বৈঠকে যোগ দেবেন না। পরে অবশ্য জানা যায় যে, সিপিআইএমের তরফেও প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবে এই বৈঠকে।
কংগ্রেসের দলনেত্রী সনিয়া গান্ধী করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায় এবং রাহুল গান্ধী ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় ইডির দফতরে হাজিরা দেওয়া নিয়ে ব্যস্ত থাকায়, তারাও এদিনের বৈঠকে যোগ দিতে পারবেন না। তবে কংগ্রেসের তরফে বর্ষীয়ান নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে, জয়রাম রমেশ ও রণদীপ সিং সুর্যেওয়ালা দিল্লির কনস্টিটিউশন ক্লাবে আয়োজিত এই বৈঠকে যোগ দেবেন।
অন্যদিকে, এদিন সকালেই জানা যায় যে বিজেডি ও টিআরএস এই বৈঠকে যোগ দেবে না। বিজেডির তরফে আলাদাভাবে কোনও কারণ ব্যাখ্যা না করা হলেও, টিআরএসের প্রধান তথা তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও জানান যে, কংগ্রেসের সঙ্গে এক মঞ্চ ভাগ করার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। একের পর এক রাজনৈতিক দল সরে দাঁড়ানোয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়ের ডাকা এই বৈঠকের প্রাসঙ্গিকতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।