গুয়াহাটি: পারিবারিক বিবাদ। আত্মীয়ের গায়ে হাত তোলাতেই ঝামেলা গড়িয়েছিল পুলিশ পর্যন্ত। দায়ের হয় এফআইআর। গ্রেফতার করা হয়েছিল ২৭ বছরের যুবককে। দু-তিনদিন আদালতের চক্কর কেটে অবশেষে জামিন করানো গিয়েছিল। ছেলেকে জেল থেকে ছাড়িয়ে আনতে গিয়েই মাথায় বাজ পড়ল পরিবারের। জেল থেকে হুইলচেয়ারে বসিয়ে বের করে আনা হল ছেলেকে। নিরাপত্তারক্ষীরা জানালেন “একটু শরীর খারাপ হয়েছে”। কিন্তু হাজার ডাকাডাকি করার পরও ছেলে চোখ খুলল না। নাকের সামনে আঙুল ধরতেই বুঝতে পারলেন, নিঃশ্বাস পড়ছে না। জেল হেফাজতে এক বন্দির রহস্যজনক মৃত্যুকে ঘিরে তুমুল অশান্তি ছড়াল অসমে।
জানা গিয়েছে, শৈলজ বরগোঁহাই (২৭) নামক ওই যুবককে তিনদিন আগে অসমের ডিব্রুগড় সেন্ট্রাল জেলে আনা হয়। পারিবারিক অশান্তি সংক্রান্ত একটি মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার তাঁর জামিন হয়। পরিবারের সদস্যরা তাঁকে জেল থেকে নিতে আসেন।
জেল কর্তৃপক্ষের তরফে ওই যুবককে একটি হুইলচেয়ারে বসিয়ে বাইরে আনা হয়। পরিবারের সদস্যরা জিজ্ঞাসা করলে বলা হয়, সামান্য শরীর খারাপ হয়েছে। কিন্তু বহু চেষ্টা করেও ওই যুবককে তোলা না গেলে, পরিবারের সদস্যদের সন্দেহ হয়। এরপরই তারা ভাল করে পরীক্ষা করে বুঝতে পারেন, মৃত্যু হয়েছে যুবকের।
কীভাবে জেলে মৃত্যু হল ওই যুবকের এবং কেনই বা জেল কর্তৃপক্ষের তরফে মৃত্যু ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হল, তা ঘিরে তুমুল অশান্তির সৃষ্টি হয়। পরিবারের তরফে মৃতদেহ গ্রহণ করতে অস্বীকার করা হয়। শেষে ডিব্রুগড় পুলিশ স্টেশনের ইনচার্জ রাজু বাহাদুর ছেত্রীর নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনী এসে পরিস্থিতি সামাল দেয় এবং দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মৃত যুবকের পরিবারের এক সদস্য বলেন, “ও যখন জেলে এসেছিল, তখন সম্পূর্ণ সুস্থ ছিল। জেলে ওর সঙ্গে পাশবিক অত্যাচার করা হয়েছে। মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। আমরা জানতে চাই, ওর সঙ্গে কী হয়েছে? কীভাবে ওর মৃত্যু হল।”