মুম্বই: মুখ্যমন্ত্রী তথা দলের প্রধানের নাগালের বাইরে থাকতেই অন্য রাজ্যে ঘাঁটি গেড়েছিলেন বিক্ষুব্ধ শিবসেনা নেতা একনাথ শিন্ডে। তার সঙ্গে ছিলেন কমপক্ষে ৩৪ জন বিধায়ক। পরে সেই রিসর্টে যোগ দেন আরও বিক্ষুব্ধ বিধায়ক। কিন্তু শিবসেনার প্রতিনিধিরা সেখানে পৌঁছতেই সুরাট থেকে গুয়াহাটিতে উড়ে যান বিধায়করা। এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে বিধায়কদের যাতায়াতের বিষয়ে সকলেই জানলেও, এই যাতায়াতে কত টাকা খরচ হচ্ছে তা কী জানেন? একদিনের যাতায়াতের জন্য যে পরিমাণ টাকা খরচ হয়েছে, তা শুনলে চোখ কপালে উঠতে বাধ্য।
সূত্রের খবর, বিদ্রোহী বিধায়কদের নিয়ে চার্টাড বিমানে প্রথমে মুম্বই থেকে গুজরাটের সুরাট এবং সেখান থেকে অসমের গুয়াহাটি উড়ে গিয়েছিলেন মহারাষ্ট্র্র নগরোন্নয়ন মন্ত্রী একনাথ শিন্ডে। দ্রুত এবং ব্যক্তিগতভাবে যাতায়াতের জন্য চার্টাড বিমানের উপরেই আস্থা রাখেন সেলিব্রেটি থেকে শুরু করে তাবড় তাবড় নেতারা। সেই বিশেষ বিমানেই এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে যাতায়াত করছেন শিবসেনার বিক্ষুব্ধ বিধায়করা। সর্বোচ্চ ৩০ আসন সংখ্যার এই বিমানে একবার যাতায়াতেরই ন্যূনতম খরচ ৫০ লক্ষ টাকা। জানা গিয়েছে , সমস্ত বিধায়কদের সুরাট থেকে গুয়াহাটি পৌঁছে দেওয়ার জন্য বেশ কয়েকবার যাতায়াত করেছে চার্টাড বিমানটি। অর্থাৎ শুধুমাত্র বিধায়কদের যাতায়াতের পিছনেই এক কোটি টাকার বেশি খরচ হয়েছে।
ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শিবসেনার বিধায়কদের নিয়ে এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে নিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স ৮ বিমান। ৩ ঘণ্টা ৪১ মিনিটে সুরাট থেকে গুয়াহাটিতে পৌঁছেছিলেন বিধায়করা। বৃহস্পতিবার সকালে সুরাট থেকে গুয়াহাটিতে বিধায়কদের আনতে একটি আট আসনের হকার ৮০০ এক্সপি বিমান ব্য়বহার করা হয়েছিল। সেই বিমানের জন্য খরচ পড়েছিল ৩৫ লক্ষ টাকা।
বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স ৮ বিমানের আনুমানিক ভাড়া ৬০ থেকে ৬৫ লক্ষ টাকা। তবে সুরাট ও গুয়াহাটিতে আগে থেকে এই ধরনের চার্টাড ফ্লাইট না থাকায়, অন্য কোথাও থেকে আনানো হয়েছিল। এর জেরে খরচ আরও বেড়েছে। অর্থাৎ এক থেকে দেড় কোটি টাকা খরচ হয়েছে শুধু বিধায়কদের যাতায়াতের উপরেই।
বর্তমানে গুয়াহাটির একটি পাঁচতারা হোটেলে রয়েছেন শিবসেনা বিধায়করা। সূত্রের খবর, র্যাডিসন ব্লু নামক ওই হোটেলে মোট ১২০ টি রুম রয়েছে। এরমধ্যে ৭০টি রুমই বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের রাখার জন্য় বুক করা হয়েছে। মোট সাতদিনের জন্য এই রুমগুলি বুক করা হয়েছে, এর বাবদ খরচ হচ্ছে ৫৬ লক্ষ টাকা। এছাড়াও খাওয়া ও অন্যান্য় পরিষেবা বাবদও প্রতিদিন ৮ লক্ষ টাকা করে ব্যয় হচ্ছে। অর্থাৎ সপ্তাহে ১ কোটি ১২ লক্ষ টাকা খরচ হচ্ছে বিধায়কদের থাকা-খাওয়ার খরচ বাবদ। এছাড়া বিমানবন্দর থেকে হোটেলে যাতায়াতের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা হয়েছে বিলাসবহুল গাড়ি। সেই ভাড়াও প্রায় আকাশছোঁয়া।