ভারতে আসার পর থেকে জীবনে চলার পথ, চিন্তা-ভাবনা… সব ক্ষেত্রে আমূল বদল এসেছে সিন্থিয়ার। পাপুয়া নিউ গিনি থেকে তিন সপ্তাহের এক ট্রেনিং কোর্সে ভারতে এসেছিলেন বছর ঊনচল্লিশের সিন্থিয়া চাঙ্গাউ। গত ১৮ বছর ধরে সেখানে শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত তিনি। তবে এবার তিনি পাশাপাশি একটি ব্যবসাও শুরু করতে চাইছেন। অনলাইনে জিনিসপত্র কেনাকাটি করার সময় কী কী বিষয় মাথায় রাখা দরকার, সেই নিয়ে একটি অনলাইন ট্রেনিংয়ে অংশ নিয়েছিলেন। সেখানেই একজনের থেকে তিনি শোনেন, অন্ত্রেপ্রেনিয়রশিপের উপর ভারতে তিন সপ্তাহের এক প্রশিক্ষণ কোর্সের বিষয়ে।
সিন্থিয়া জানাচ্ছেন, এমন একটা সুযোগ তিনি হাতছাড়া করতে চাননি। তাই ঝটপট পাসপোর্টের জন্য আবেদন করে ফেলেন তিনি। আর পাসপোর্ট হাতে পাওয়ার পরই এই কোর্সের জন্য আবেদন করেন। মাত্র দু’সপ্তাহের মধ্যেই সেই আবেদন গৃহীত হয়ে যায়।
আর ওই গোটা কোর্সের জন্য কোনও খরচ করতে হয়নি সিন্থিয়াকে। তাঁকে শুধু নিজের পাসপোর্টটা বানিয়ে কোর্সের জন্য আবেদন করে ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হয়েছে। তারপর থেকে বাকি সব বন্দোবস্ত করেছে ভারত সরকারই।
ভারতে তিন সপ্তাহের ট্রেনিং কোর্সে আসার অভিজ্ঞতা পরবর্তীতে জানিয়েছেন সিন্থিয়া। বলেছেন, “সব খরচ ভারত সরকারই বহন করেছে। যাতায়াত, থাকা-খাওয়া এবং অন্যান্য খরচ, সবই। আপনাকে শুধু পাসপোর্ট বানিয়ে পোর্ট মোরেসবিতে যেতে হবে ভারতীয় দূতাবাসে। সেখান থেকেই যাওয়া-আসার ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। পোর্ট মোরেসবি থেকে ভারতে যাওয়ার খরচ ভারত সরকারই দিয়েছে।”
গুজরাটের আহমেদাবাদে আয়োজিত এই ট্রেনিং কোর্সে বিভিন্ন দেশ থেকে ২৮ জন অংশগ্রহণকারী এসেছিলেন। তাঁদের মধ্যে পাপুয়া নিউ গিনি থেকে একমাত্র অংশগ্রহণকারী ছিলেন সিন্থিয়া।
এই কোর্সে এসে প্রধানমন্ত্রী মোদীর বক্তব্য কীভাবে তাঁর চিন্তা-ভাবনা পুরো বদলে দিয়েছে, সে কথাও জানান সিন্থিয়া। নরেন্দ্র মোদী এক বক্তব্য বলেছিলেন, ‘প্রত্যেক নাগরিকের একটি স্বপ্ন থাকা দরকার। যদি কেউ কোনও স্বপ্ন দেখেন, তাহলে আমি সেই স্বপ্ন সত্যি করব।’ আর এই কথাটা একেবারে মনের মধ্যে গেঁথে গিয়েছিল পাপুয়া নিউ গিনির ওই শিক্ষিকার। নিজের দেশে ফেরার পর সিন্থিয়া জানাচ্ছেন, “মোদী বলেছিলেন, ভারতের থেকে যাই বাইরে যাবে, তা যেন পুরো ফিনিশড প্রোডাক্ট হয়। যেমন কোকো পাউডারে পরিণত হওয়ার ভারতের বাইরে যায়। কারণ, তিনি বলেছিলেন, যখন আমরা কোকো একেবারে কাঁচামাল অবস্থায় অন্য দেশে পাঠাই, তখন সেই দেশে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়। কিন্তু যদি তা ভারতেই প্রসেসিং হয়, তাহলে নিজেদের দেশের লোকের কর্মসংস্থান হয়। এই বক্তব্য আমাকে ভীষণ অনুপ্রাণিত করেছিল। আমার মনে হয়, প্রত্যেকের এভাবেই ভাবা উচিত।”