নয়াদিল্লি: সপ্তাহ খানেক মুলতুবির পর আজ পুনরায় শুরু হয়েছে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন। আদানি ঘুষকাণ্ড নিয়ে সরব হয়ে মুলতবি প্রস্তাব পেশ করে বিরোধীরা। এরপরেই সংসদ থেকে ‘ওয়াক আউট’ করে তাঁরা। কিন্তু লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার উদ্যোগে পুনরায় শুরু হয় শীতকালীন অধিবেশন। শর্ত ছিল দুটি বিষয়ে কথা বলতে দিতে হবে বিরোধীদের। এক বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার ও দুই উত্তরপ্রদেশের সম্বল কাণ্ড। সেই মতোই এই দিন সংসদে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু এবং হিন্দুদের উপর অত্যাচার নিয়ে বক্তব্য রাখলেন উত্তর কলকাতার সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।
দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুরেই কথা বলতে শোনা গেল সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। বিধানসভায় দাঁড়িয়ে, বাংলাদেশে শান্তিরক্ষা কমিটির কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোাপাধ্যায়। মঙ্গলবার লোকসভায় দাঁড়িয়ে সেই একই কথা বললেন সুদীপও।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশে সংখ্যালঘু ও হিন্দুরা অত্যাচারিত হচ্ছে। তাঁদের ধরে ধরে হত্যা করছে। তাই আমরা দাবি জানাচ্ছি ভারত সরকার যেন রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছে অবিলম্বে বাংলাদেশের শান্তি রক্ষা কমিটি পাঠানোর আবেদন জানায়।”
বাংলাদেশ নিয়ে কেন ভারত সরকার ‘চুপ’, সেই প্রশ্ন তুলে সুদীপ বলেন, “ভারত সরকার এই বিষয়ে সম্পূর্ণ চুপ করে আছে। আমরা ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, সংসদে এসে বাংলাদেশের এই মূহুর্তে পরিস্থিতি কী, তা জানাক।”
বাংলাদেশ ইস্যুতে কেন্দ্রের পাশেই আছে রাজ্য। স্পষ্ট বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের মুখ্যমন্ত্রী গতকাল পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা অধিবেশনে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সম্পর্কে ভারত সরকার যা সিদ্ধান্ত নেবে, আমরা তার সঙ্গে রয়েছি। কিন্তু ভারত সরকারকে বাংলাদেশের মানুষের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।”
অনুপ্রবেশ সমস্যা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে অনেকটা সীমান্ত এলাকা রয়েছে বাংলাদেশে। অতীতেও এই রকম উত্তাল সময় মানুষ, সীমান্ত পেরিয়ে আমাদের রাজ্যে অনুপ্রবেশ করেছে। আমরা বিদেশ মন্ত্রকের কাছে এই বিষয়ে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করার দাবি জানাচ্ছি।”
প্রসঙ্গত, দলনেত্রী ঠিক করে দেওয়া পথেই এই দিন হাঁটতে দেখা গেল সুদীপকে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশ ইস্যুতে নিজের কাঁধে বন্দুক রাখতে নারাজ রাজ্য সরকার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কেন্দ্রের সঙ্গে আছি’ মন্তব্য শুনেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “কথায় বললে হবে না। কাজে প্রতিফলন দেখা গেলেই ভাল।”