নয়া দিল্লি: পঞ্চায়েত নির্বাচনের (Panchayat Election) আগে ১০০ দিনের কাজে রাজ্যের বকেয়া নিয়ে কেন্দ্রের উপরে চাপ বাড়াচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেই উদ্দেশ্য়েই কেন্দ্রীয় বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার দাবি নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিংয়ের (Giriraj Singh) সঙ্গে দেখা করতে যান তৃণমূল সাংসদের একটি দল। সঙ্গে ছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দরবারে গিয়েও তাঁর দেখা পেলেন না তৃণমূল সাংসদরা। এরপরই কেন্দ্রের উদ্দেশে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড। পাওনা টাকা মিটিয়ে দেওয়ার জন্য কেন্দ্রকে ১৫ দিনের সময় দিলেন অভিষেক। নয়ত অন্য উপায় অবলম্বন করা হবে বলে হুঙ্কার ছাড়লেন।
২৫ সাংসদের দল নিয়ে গিরিরাজ সিংয়ের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন অভিষেক। দফতরের সামনেই বেশ কিছুক্ষণ ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয় সাংসদদের। তবে শেষ পর্যন্ত দেখা মেলেনি গিরিরাজের। মন্ত্রকের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, তিনি বিহারে গিয়েছেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দেখা না পেয়ে সচিবের হাতেই স্মারক লিপি জমা গিয়ে আসেন তৃণমূল সাংসদরা। পাশাপাশি কেন্দ্রকে শেষ সুযোগ দিয়ে আসেন অভিষেক। সূত্রের খবর, তিনি জানিয়েছেন, ১৫ দিনের মধ্যে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের তরফে রাজ্যের মন্ত্রী, সচিব ও তৃণমূল সাংসদদের সঙ্গে বৈঠকের তারিখ জানাতে হবে। আর যদি এই কয়েক দিনের মধ্যে মন্ত্রকের তরফে কোনও সদুত্তর না আসলে রাজ্য থেকে ১০০ দিনের কাজে ২ লক্ষ বঞ্চিত লোকেদের দিল্লির বুকে এনে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিকে গিরিরাজের সঙ্গে সাক্ষাৎ না হওয়াকেই ইস্যু হিসেবে খাঁড়া করেছে তৃণমূল। অভিষেকের বিস্ফোরক অভিযোগ, “আমি শুনেছি, তিনি অফিসেও ছিলেন। কিন্তু আমরা আসব শুনে পাশ কাটিয়ে বেরিয়ে গিয়েছেন।” তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের যুক্তি, আসলে তাঁদের কাছে কোনও উত্তর নেই তাই তাঁরা দেখা করতে চাইছেন না। তবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে টেলিফোনে ডেরেক ও ব্রায়েনের কথা হয়েছিল বলে জানান অভিষেক। টেলিফোনে বার্তালাপে গিরিরাজ জানিয়েছিলেন, ৫ এপ্রিল তিনি দিল্লিতে থাকলে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে নিশ্চয় দেখা করবেন। তিনি বলেন, “এসে শুনলাম কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও নেই, প্রতিমন্ত্রীও নেই।” এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কেন্দ্রের ১০০ দিনের কাজ ও আবাস যোজনার বকেয়া টাকা নিয়ে সুর চড়িয়েছেন তৃণমূল সাংসদরা। অভিষেক বলেন, “আমরা ৯ মাস আগেই এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীকে জানিয়েছি। আর আমরা ধৈর্য ধরে গত ৯ মাস ধরে অপেক্ষা করেছি। কেউ কাউকে দয়া করার বিষয় নয় এটা। আপনি তো লোকের থেকেই টাকা নিচ্ছেন। আপনারা জেনে বুঝেই লোকের টাকা আটকে রেখেছেন। আর আপনারা যদি আজই কোনও সিদ্ধান্ত না নেন তাহলে আমাদের অন্য পথ দেখতে হবে।” পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এই ইস্য়ুতে ঝাঁঝ বাড়িয়ে অভিষেক বলেন, “গোটা দেশে একমাত্র বাংলারই টাকা আটকে রাখা হয়েছে। ৭ হাজার কোটি টাকার বিষয়। ১৭ লক্ষ পরিবারের টাকা আপনি আটকে রাখতে পারেন না।” এদিকে দুর্নীতি প্রসঙ্গে পরিষ্কার বার্তা অভিষেকের। যদি কোনও দুর্নীতি হয়ে থাকে, সেইসব দুর্নীতিবাজদের কলার ধরে জেলে ভরুন। তিনি বলেন, “সিবিআই তদন্ত করার প্রয়োজন হলে করুন। আমি মেনে নিচ্ছি দুর্নীতি হয়ত ২০ হাজার জন অভিযুক্ত। তাঁদের কলার ধরে জেলে পুড়ুন। কিন্তু ১৭ লক্ষ পরিবারের টাকা দিন।”