নয়া দিল্লি: মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে ‘ঘুষের বিনিময়ে প্রশ্ন’ মামলার বিষয়ে মুখ খুললেন তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। তিনি জানিয়েছেন, বিষয়টি সংসদের সঠিক ফোরাম তদন্ত করুক। তদন্তের ফলাফল অনুযায়ী পদক্ষেপ করবে দল। তিনি আরও জানিয়েছেন, এই অভিযোগের বিষয়ে মহুয়া মৈত্রকে তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করার নির্দেশ দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। গত রবিবার (১৫ অক্টোবর), মহুয়া মৈত্র বিরুদ্ধে এক শিল্পপতির কাছ থেকে নগদ এবং অন্যান্য উপহারের বিনিময়ে সংসদে ওই শিল্পপতির স্বার্থে প্রশ্ন করেছেন বলে অভিযোগ করেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লাকে তিনি এই বিষয়ে একটি চিঠি দিয়েছিলেন। এরপর বিষয়টি সংসদের এথিক্স কমিটির কাছে পাঠিয়েছেন ওম বিড়লা। মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে একের পর এক বিজেপি সাংসদ মুখ খুললেও, এতদিন এই গুরুতর অভিযোগ নিয়ে এক প্রকার নীরবই ছিল তৃণমূল কংগ্রেস।
রবিবার (২২ অক্টোবর) ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেছেন, “আমরা এই বিষয়ে সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন পড়েছি। সংশ্লিষ্ট সাংসদকে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি ইতিমধ্যে তাঁর অবস্থান স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন। তবে বিষয়টির সঙ্গে যেহেতু একজন নির্বাচিত সাংসদ জড়িত, তাই বিষয়টি নিয়ে সংসদের সঠিক ফোরামের তদন্ত করা উচিত। তদন্তের পর, দলীয় নেতৃত্ব উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নেবে।” এদিকে, এদিনই বিষয়টি নিয়ে বিজেপি, সিপিএম এবং কংগ্রেসকে আক্রমণ করেছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, “তৃণমূল নিয়ে কংগ্রেস, বিজেপি, সিপিআইএম-কে মাথা ঘামাতে হবে না। আপনাদের চরকায় তেল দিন। তৃণমূল সব ইস্যুর উপর নজর রাখছে। সঠিক সময়ে নেতৃত্ব প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবেন। প্রয়োজনীয় কাজ করবেন।”
মহুয়া মিত্রর বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগ নিয়ে বর্তমানে বিতর্কে উত্তাল রাজনৈতিক মহল। নিশাকান্ত দুবের দাবি, মহুয়া মিত্রর প্রাক্তন বন্ধু তথা আইনজীবী জয় অনন্ত দেহদ্রাইয়ের লেখা একটি চিঠি থেকে তিনি মহুয়া মৈত্রর এই ঘুষ কাণ্ডের সন্ধান পেয়েছেন। বিজেপি সাংসদের দাবি, এতদিন পর্যন্ত সংসদে মহুয়া মৈত্র যে ৬১টি প্রশ্ন করেছেন, তার মধ্যে ৫০টিই ওই ব্যবসায়ীর লিখে দেওয়া। এমনকি, মহুয়া তাঁর সংসদের অ্যাকাউন্টও ওই ব্যবসায়ীকে ব্যবহার করতে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। আইনজীবী জয় অনন্ত দেহদ্রাই, মহুয়া মৈত্রর ঘুষ নেওয়ার “অকাট্য” প্রমাণ দিয়েছেন বলে দাবি করেন নিশিকান্ত দুবে।
এরপর, এক আইনি পরামর্শদাতা সংস্থার মাধ্যমে নিশিকান্ত দুবে, জয় অনন্ত দেহদ্রাই এবং কয়েকটি সংবাদমাধ্যমকে মানহানির নোটিশ পাঠিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ। ৩১ অক্টোবর দিল্লি হাই কোর্টে এই মামলার শুনানি হবে। এদিকে, এরই মধ্যে এই মামলা থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন মহুয়া মৈত্রর আইনজীবী গোপাল শঙ্করনারায়ণ। স্বার্থের সংঘাতের কারণেই তাঁকে সরে দাঁড়াতে হয়।