আগরতলা: বৃহস্পতিবার (২৩ জুন), কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ভোটগ্রহণ চলছে ত্রিপুরার চারটি বিধানসভা কেন্দ্রে। বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে চার কেন্দ্র থেকেই বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের খবর এসেছে। তবে, ভোটগ্রহণ শুরুর আগে, বুধবার রাতেই ধলাই জেলার সুরমা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী অর্জুন নমশূত্রের গাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ভারতের নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। পাশাপাশি রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির আবেদন করেছেন তৃণমূল প্রার্থী অর্জুন নমশূদ্র।
ত্রিপুরা তৃণমূলের পক্ষ থেকে প্রকাশ করা এক ভিডিয়োতে, সুরমা কেন্দ্রের প্রার্থী অর্জুন নমশূদ্র অভিযোগ করেছেন, ‘২৪ নম্বর বুথ থেকে শুরু করে সুরমা কেন্দ্রের বিভিন্ন জায়গায় রিগিং হচ্ছে। গোটা বিধানসভা কেন্দ্র জুড়ে সন্ত্রাসের আবহ রয়েছে। প্রয়োজনীয় ভূমিকা নিতে ব্যর্থ পুলিশ। পুলিশ প্রশাসন থাকা সত্ত্বেও একজন নমশূদ্রের বেটাকে মেরে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হল। এটা একটা নিন্দনীয় ঘটনা। আমি ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে আবেদন করব, অতি সত্ত্বর ত্রিপুরায় রাষ্ট্রপতি শাসন দেওয়া হোক। নাহলে ত্রিপুরার গণতন্ত্র বাঁচবে না।’
ত্রিপুরা তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, বুধবার রাতে দলীয় প্রার্থীর গাড়িতে চড়াও হয়েছিল বিজেপির বাইক বাহিনী। কোনওক্রমে প্রাণ বাঁচিয়ে তিনি সেখান থেকে পালিয়ে কমলপুর এলাকার তৃণমূল কর্মী দীপক দাসের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। তবে, সেই বাড়িও ঘিরে ফেলেছিল বিজেপির গুন্ডারা, এমনটাই অভিযোগ তৃণমূলের। ঘটনার তীব্র নিন্দা করে দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করার দাবি জানিয়েছেন ত্রিপুরা প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সুবল ভৌমিক। দলের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জানানো হয়েছে নির্বাচন কমিশনেও।
সন্ত্রাসের আবহ সুরমাজুড়ে। একাধিক জায়গায় চলছে ভোটে কারচুপি। পুলিশ কোনও রকম পদক্ষেপ করতে ব্যর্থ।
ত্রিপুরায় রাষ্ট্রপতি শাসনের আবেদন জানালেন প্রার্থী অর্জুন নমশূদ্র। pic.twitter.com/m0HDEdluk4
— AITC Tripura (@AITC4Tripura) June 23, 2022
আক্রান্ত তৃণমূল প্রার্থী অর্জুন নমশূদ্র অভিযোগ করেছেন, ত্রিপুরায় পুলিশ-প্রশাসন বিজেপির হয়ে কাজ করছে। তিনি জানিয়েছেন, কমলপুর সাবডিভিশনের দায়িত্বে থাকা এক শীর্ষ পুলিশ কর্তা তাঁর নিরাপত্তা দায়িত্বে ছিলেন। ওই পুলিশ কর্তার উপস্থিতিতেই তাঁর উপর এবং দলীয় কর্মীদের উপর আক্রমণ নেমে আসে বলে অভিযোগ করেছেন তৃণমূল প্রার্থী। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন অর্জুন নমশূদ্র।
২০২১ সালের অক্টোবরে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন সুরমার তৎকালীন বিধায়ক আশিস দাস। ফলে, ওই আসনটি খালি হয়েছিল। পরে তৃণমূল কংগ্রেস দলও ছেড়ে দিয়েছিলেন আশিস দাস। এবার ওই আসনে বিজেপি প্রার্থী হয়েছেন স্বপ্নদাস পাল। সিপিআই(এম) প্রার্থী করেছে অঞ্জন দাসকে। কংগ্রেস কোনও প্রার্থী দেয়নি। রাজ পরিবারের সদস্য প্রদ্যোৎমাণিক্য দেবের গঠিত উপজাতিয় দল তিপ্রা মোথার প্রার্থী বাবুরাম সতনামীকেই সমর্থন করছে তারা।
এদিন, ভোটগ্রহণ শুরুর পর ত্রিপুরার চারটি বিধানসভা কেন্দ্র থেকেই বিত্রিপ্ত সংঘর্ষের খবর এসেছে। মূলত, বিরোধী দলের কর্মী-সমর্থক এবং সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে বিজেপি-আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। রয়েছে বুথ দখলের অভিযোগ, ভোটারদের ভয় দেখানো, বিরোধী পোলিং এজেন্টদের মেরে বুথ থেকে বার করে দেওয়ার অভিযোগও।