আগরতলা: ডিউটিতে থাকাকালীনই হেনস্থার শিকার হলেন ত্রিপুরা(Tripura)-র ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক (BDO)। পুলিশি তৎপরতায় ঘটনায় অভিযুক্ত ৫ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হলেও সরকারি আধিকারিকদের নিরাপত্তা নিয়ে এ বার উদ্বেগে পুলিশ। ইতিমধ্যেই দুই জেলাশাসক পুলিশ সুপারের কাছে রাজ্যের সমস্ত জেলাশাসক, বিডিও ও ডেপুটি কালেক্টরদের নিরাপত্তা বাড়ানোর আবেদন জানালেন।
ঘটনার সূত্রপাত হয় গত ১৫ সেপ্টেম্বর। মাধাবগঢ় গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অধীনে শুরু হওয়া কাজের পর্যবেক্ষণ করছিলেন দক্ষিণ ত্রিপুরার পোয়াঙ্গবাড়ির বিডিও বৈজন্ত সরকার। নিজের দফতরের কর্মীদের সহায়তায় একটি বিশেষ ক্যাম্পেরও আয়োজন করেছিলেন। আচমকাই তাঁর উপর হামলা চালায় কিছু দুষ্কৃতী। প্রায় ৫০ থেকে ৬০ জন লাঠি নিয়ে বিডিও ও তাঁর সহকারীদের উপর হামলা চালায় এবং তাদের ব্যপক মারধর করে।
ঘটনায় গুরুতর জখম হন বিডিও ও নয়জন আধিকারিক। যাওয়ার আগে দুষ্কৃতীরা আহত সরকারি কর্মীদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন ও অন্যান্য বৈদ্যুতিন যন্ত্রও কেড়ে নিয়ে পালায়। পরে স্থানীয়দের সাহায্য় নিয়ে কোনও মতে পুলিশে অভিযোগ জানান তারা।হামলার পরই ত্রিপুরার সরকারি কর্মীরা জেলাশাসক সঞ্জু ওয়াহিদের সঙ্গে দেখা করেন এবং অপরাধীদের কড়া শাস্তির দাবি জানান।
এরপর বৃহস্পতিবারই ৫ ব্য়ক্তিতে গ্রেফতার করে ত্রিপুরা পুলিশ, তাদের আগামী ২৭ তারিখ অবধি পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, ওই ৫জনই বিজেপি কর্মী হিসাবে পরিচিত। এদিকে বিডিও সহ বাকি সরকারি কর্মীদের উপর হামলার পরই সেপাহিজোলার জেলাশাসক বিশ্বশ্রী বি এবং উনাকোটির জেলাশাসক ইউকে চাকমা ত্রিপুরার পুলিশ সুপারকে চিঠি লেখেন। সম্প্রতি বিডিও-র উপর হওয়া হামলার সমালোচনা করে তারা জানান, আগামিদিনেও যাতে এইধরনের হামলা না হয়, তার জন্য পুলিশি নিরাপত্তা বাড়ানো প্রয়োজন। অন্তত কর্তব্যরত থাকাকালীন যদি কোনও এলাকা পরিদর্শনে যেতে হয়, তবে সরকারি কর্তাদের পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি। সেপাহিজোলার পুলিশ সুপার কৃষ্ণেন্দু চক্রবর্তীকেও একই মর্মে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
বিগত কয়েক মাস ধরেই রাজনৈতিক হিংসায় উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে ত্রিপুরা। শাসক দল বিজেপির জায়গা দখল করতে উঠে পড়ে লেগেছে তৃণমূল। ঘন ঘন তৃণমূল নেতাদের রাজ্য সফর, রাজনৈতিক কর্মসূচিকে ঘিরে গোটা রাজ্যেই বারংবার হিংসা ছড়িয়েছে। এ বার তার আঁচ পড়ল সরকারি কর্মীদেক উপরও।