ফাইল চিত্র।
নয়া দিল্লি: টুইটারে ফলোয়ার্স কমে যাওয়াতেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী(Rahul Gandhi)। গত মাসেই টুইটারের সিইও পরাগ আগরওয়াল(Parag Agarwal)-কেও চিঠি লিখে গোটা বিষয়টি জানিয়েছেন। একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকার যে সোশ্যাল মাধ্যমে তাঁর কন্ঠরোধ করার চেষ্টা করছে, এই অভিযোগও এনেছেন রাহুল। তবে টুইটারের তরফে মান্যতা দেওয়া হল না এই সমস্ত অভিযোগকে। বৃহস্পতিবারই টুইটার (Twitter) কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়, টুইটারে ফলোয়ার্সের যে সংখ্যা দেখানো হয়, তা একদমই সঠিক।
সংবাদসংস্থা এএনআই সূত্রে জানা গিয়েছে, টুইটারের মুখপাত্র কংগ্রেস নেতার অভিযোগ মানতে নারাজ। তাঁর দাবি, ফলোয়ার্সের সংখ্যা একটি “ভিসিবল ফিচার”। এর উপর সংস্থার কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। সুতরাং অ্যাকাউন্টে ফলোয়ার্সের যে সংখ্যা দেখা যায়, তা সম্পূর্ণ সঠিক এবং অর্থবহ। ভুয়ো বা প্রভাবিত করতে পারে, এমন বার্তার ক্ষেত্রেও টুইটার কর্তৃপক্ষ “জিরো টলারেন্স” নীতি অনুসরণ করা হয়।
কী বক্তব্য টুইটার মুখপাত্রের?
বৃহস্পতিবারই টুইটারের মুখপাত্রের কাছে রাহুল গান্ধীর অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি সে বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন। তবে সংস্থার নীতি সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমরা কৌশলগত ও মেশিন লার্নিংপদ্ধতির সাহায্যে স্প্যাম ও ম্যালিসিয়াস অটোমেশনের বিরুদ্ধে লড়াই করি। আমাদের প্ল্যাটফর্মে সুষ্ঠ পরিষেবা ও বিশ্বাসযোগ্য অ্যাকাউন্ট রাখার লক্ষ্যে অনেক সময় ফলোয়ার্সের সংখ্যা কম-বেশি হতেই পারে।”
টুইটারের মুখপাত্র আরও জানান যে, সংস্থার তরফে স্প্য়াম ও প্রভাবিত করার চেষ্টা রুখতে যে নতুন নীতি অবলম্বন করা হয়েছে, তা ভঙ্গ করার জন্য প্রতি সপ্তাহেই লক্ষাধিক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরফলে ফলোয়ার্সের সংখ্যা কমাটাই স্বাভাবিক। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ফলোয়ার্স কমার সংখ্যা ন্যূনতম হয়, তা চোখেও পড়ে না। তবে বিশেষ কোনও কোনও ক্ষেত্রে এই সংখ্যাটা তুলনামূলকভাবে অনেক বেশিও হতে পারে।
কী অভিযোগ করেছেন রাহুল গান্ধী?
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী টুইটারে অতি সক্রিয়। কিন্তু বিগত কয়েক মাস ধরে তাঁর ফলোয়ার্সের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। এই বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েই গত ২৭ ডিসেম্বর টুইটারের প্রধানকে চিঠি লেখেন রাহুল গান্ধী। সেই চিঠিতে তিনি দাবি করেন, কেন্দ্রীয় সরকারের চাপে পড়ে টুইটার তাঁর অ্যাকাউন্টের “রিচ” অর্থাৎ টুইটার ব্য়বহারকারীদের কাছে পৌঁছে যাওয়ার হার কমিয়ে দিচ্ছে। তাঁর কন্ঠস্বর রোধ করতে সরকারের তরফে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে, এই খবর নাকি তিনি টুইটার সংস্থার অন্দরমহল থেকেই পেয়েছেন, চিঠিতে এমনটাও জানান রাহুল।
উল্লেখ্য, গত বছরের অগস্ট মাসেই দিল্লিতে দলিত নাবালিকার ধর্ষণ কাণ্ডে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে ছবি পোস্ট করেন রাহুল গান্ধী। এরপরই তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে। ভারতের ‘পকসো’ আইন অনুযায়ী ধর্ষিতা বা তাঁর পরিবারের নাম পরিচয় প্রকাশ করা যায় না। বিষয়টি নজরে আসতেই টুইটার থেকে ছবি সরানোর নির্দেশ দেয় জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন।
কেন্দ্রের তথ্য প্রযুক্তি আইন অমান্য করে গত বছরই আইনী সুরক্ষাকবচ হারিয়েছে টুইটার। একাধিক পোস্ট ঘিরেও আইনি জটিলতায় জড়িয়েছে এই মাইক্রো-ব্লগিং সাইট। সেই কারণেই রাহুল গান্ধীর ওই টুইট ডিলিট করে দেওয়ার পাশাপাশি এক সপ্তাহের জন্য তাঁর অ্যাকাউন্ট ব্যান করে দেওয়া হয়। রাহুলের দাবি, ব্য়ান হওয়ার পর থেকেই তাঁর ফলোয়ার্সের সংখ্যা কমে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: Hamid Ansari : গণতন্ত্রের উৎসবের দিনে দেশের স্বাধীনতা ও মানবাধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুললেন প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি