মুম্বই: শনিবার ৩৮ বছর বয়সী প্রবীণ অশুভ জাদেজা নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল মুম্বই পুলিশ। ১৫ বছর ধরে নিখোঁজ ছিলেন তিনি। অনেকদিন ধরেই পুলিশ তাঁর খোঁজ করে যাচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত পুলিশের জালে ধরা পড়তেই হল তাঁকে। আর ধরা পড়ার ঘটনাটিও অন্যরকম। নিজের সখই তাঁর পুলিশের জালে জড়িয়ে পড়ার অন্যতম কারণ।
তাঁর দুটি দাঁত গোল্ড প্লেটেড। আর পুলিশের হাতে ধরা পড়ার এটাই ছিল মূল কারণ। একটি জামা কাপড়ের দোকানে সেলসম্যানের কাজ করতেন তিনি। ২০০৭ সালে সেই দোকানের মালিকের ৪০ হাজার টাকা নিয়ে ফেরার হন প্রবীণ। পুলিশের নজর থেকে বাঁচার জন্য গুজরাটে পালিয়ে যান তিনি। নিজের পরিচয় বদলে কচ্ছে আশ্রয় নেন। এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, তাঁকে প্রবীণ অশুভ জাদেজা ওরফে প্রবীণ সিং ওরফে প্রদীপ সিং অশুভ জাদেজা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
তিনি বলেছেন, “ঠকানো ও পুলিশকে ভুল পথে চালনা করার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। যদিও তাঁকে গ্রেফতারের কিছুদিন পরেই তিনি আদালত থেকে জামিন পেয়ে গিয়েছেন। তারপর শুনানির পরেই মুম্বই থেকে পালিয়ে যান। আর আদালতে আসেননি তিনি। তাঁকে পলাতক হিসেবে ঘোষণা করে আদালত।” পুলিশ আধিকারিক সূত্রেই জানা গিয়েছে, ২০০৭ সালে একটি জামা কাপড়ের দোকানে কাজ করতেন প্রবীণ। দোকানের মালিক তাঁকে একবার এক ব্যবসায়ীর থেকে ৪০ হাজার টাকা সংগ্রহ করে আনতে বলেছিলেন। টাকা সংগ্রহের পর তা মালিককে দেওয়ার বদলে তিনি মালিক ও পুলিশকে জানান শৌচাগার থেকে তাঁর ব্যাগ ভর্তি টাকা চুরি হয়ে গিয়েছে।
পরে তদন্তে উঠে আসে প্রবীণ নিজের কাছেই রেখেছিলেন সেই টাকা। আর পুলিশকে ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করছিলেন। সম্প্রতি মুম্বই পুলিশ আবার তাঁর খোঁজ শুরু করেন। তাঁর পুরো নাম ও দুটি সোনার দাঁত রয়েছে, এই দুই তথ্যের ভিত্তিতেই ফের তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। মুম্বই পুলিশ জানিয়েছে, সম্প্রতি প্রবীণের এক প্রাক্তন সঙ্গীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তাঁরা। তাঁর থেকেই জানতে পারেন ও প্রবীণ বর্তমানে গুজরাটের কচ্ছ জেলার মাণ্ডভি তালুকের সাভরাই গ্রামে লুকিয়ে আছেন। তারপর LIC এজেন্ট সেজে প্রবীণকে মুম্বইতে ডেকে পাঠান। তাঁর সোনার দাঁত দেখেই তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বর্ষীয়ান পুলিশ ইনস্পেক্টর কুমুদ কাদাম বলেন, “আমরা তাঁর মোবাইল ফোন নম্বর পেয়েছিলাম এবং নিজেকে এলআইসি অফিসারের পরিচয় দিয়ে তাঁকে ফোন করেছিলাম। তারপর তাঁকে বলি, তার পলিসির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে এবং টাকা দেওয়ার প্রক্রিয়াকরণের জন্য তাঁর স্বাক্ষর প্রয়োজন। তিনি যখন কাগজপত্রে স্বাক্ষর করতে আসেন, তখন আমরা তাঁকে আটক করি। আমরা তাঁকে সোনার দাঁতের মাধ্যমে চিহ্নিত করেছি এবং তাঁর প্রাক্তন নিয়োগকর্তার কাছেও তাঁর ছবি পাঠিয়েছি। যিনি নিশ্চিত করেছেন যে তিনিই প্রবীণ জাদেজা। তিনি একটি নতুন নাম নিয়ে ছিলেন।