মুম্বই: আয়ুষ্মান খুরানা অভিনিত ‘ড্রিম গার্ল’ সিনেমাটি দর্শক মহলে দারুণ জনপ্রিয় হয়েছিল। একজন মহিলার কণ্ঠে কথা বলার ক্ষমতার কারণে কল সেন্টারে চাকরি পেয়েছিল আয়ুষ্মান খুরানা অভিনিত চরিত্রটি। যার জেরে এই সিনেমার দ্বিতীয় পর্বও তৈরি করা হয়েছিল। সেটিও দারুণ সাফল্য পেয়েছিল বক্স অফিসে। এবার, মুম্বই শহরেই ‘ড্রিম গার্ল ৩’-এর সন্ধান পেল মুম্বই পুলিশের সাইবার অপরাধ দমন শাখা। পুলিশ জানিয়েছে, ড্রিম গার্লের মতোই, ফোনে মেয়েদের মতো গলা করে বেশ কয়েকজন পুরুষকে প্রতারণা করেছে দুই অপরাধী। আর এই জালিয়াতির জন্য এআই ভয়েস-চেঞ্জিং প্রযুক্তি ব্যবহার করেছিল তারা।
পুলিশ জানিয়েছে, দুই অভিযুক্তর নাম সুনীল মোদী (৬২ বছর) এবং সঙ্কেত চভন (২৩ বছর)। বিবাহের এক ওয়েবসাইটে তারা অশ্বিনী মনোহর পণ্ডিত নামে এক কাল্পনিক মহিলার প্রোফাইল তৈরি করেছিল। প্রোফাইলটিকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে তারা নাসিকের এক তরুণীর ছবি ব্যবহার করেছিল। আর জাল নথি ব্যবহার করে, ওই কাল্পনিক মহিলার পরিচয় দিয়েছিল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বিচারক হিসেবে। এর জন্য ওই নামে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বিচারকের একটি স্ট্যাম্পও তৈরি করেছিল তারা। এই প্রোফাইলটি ধোকা দিয়েছে বেশ কয়েকজন পুরুষকে। অনেকেই এই জাল প্রোফাইলে থাকা মেয়েটিকে তাঁদের সম্ভাব্য পাত্রী ভেবে নিয়েছিলেন।
আর এই বিশ্বাসকে কাজে লাগিয়েই বিভিন্ন ভাবে চাপ দিয়ে তাঁদের থেকে অর্থ আদায় করত তারা। যারা টাকা দিতে অস্বীকার করত, তাদের নামে জাল ওয়ারেন্টও তৈরির করত সুনীল মোদী ও সঙ্কেত চভন। মাতুঙ্গার এক যুবকও অন্যান্যদের মতো তাদের হাতে প্রতারিত হয়েছিলেন। তিনি অবশ্য এই বিষয়ে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। এর পরই, মুম্বই ওয়েস্ট জোন পুলিশ এই বিষয়ে তদন্ত করা শুরু করে এবং অভিযুক্ত দুজনকেই পুঙ্খানুপুঙ্খ তল্লাশি করে তাদের গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, সুনীল মোদী এবং সঙ্কেত চভন দুজনেই দাগী অপরাধী। এর আগেও অন্য অপরাধের জন্য তাদের গ্রেফতার করা হয়েছিল। মজার বিষয়, দুই অসম বয়সী অপরাধীর একে অপরের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল আর্থার রোড জেলে। সেখান থেকেই তারা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে গলার স্বর পরিবর্তন করে মহিলা কণ্ঠ দিয়ে পুরুষদের ঠকানোর পরিকল্পনা করেছিল।
তবে, এআই ভয়েস জালিয়াতি নিয়ে ক্রমে উদ্বেগ বাড়ছে। এই প্রযুক্তিতে, ফোন করার সময়, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে কোনও ব্যক্তির কন্ঠস্বর বদলে দেওয়া যায়। সম্প্রতি, একজন ৫৯ বছর বয়সী মহিলাও এই প্রযুক্তি নির্ভর জালিয়াতির শিকার হয়েছিলেন। তাঁর ভাগ্নের গলা নকল করে জালিয়াতরা অবিলম্বে ১ লক্ষ টাকা সাহায্য চেয়েছিল। ইদানং এই ধরনের জালিয়াতির সংখ্যা ক্রমে বাড়ছে।