নয়া দিল্লি: উচ্চশিক্ষায় আঞ্চলিক এবং স্থানীয় ভাষার ব্যবহার বৃদ্ধিতে উদ্যোগী বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসি (UGC)। বুধবার (১৯ এপ্রিল), এই বিষয়ে দেশের সমস্ত কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে চিঠি দিলেন ইউজিসি প্রধান এম জগদেশ কুমার। শিক্ষাদানে এবং শেখার ক্ষেত্রে স্থানীয় এবং আঞ্চলিক ভাষার ব্যবহারকে উৎসাহিত করার আর্জি জানিয়েছেন তিনি। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষার সময়ও আঞ্চলিক ভাষায় লেখার অনুমতি দেওয়া হোক। ইউজিসি জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট বিষয়টি ইংরাজি ভাষায় পড়ানো হলেও, আঞ্চলিক ভাষায় লিখলে অসুবিধা নেই। মূল পাঠ্য বিষয়গুলি স্থানীয় ভাষায় অনুবাদ করারও পরামর্শ দিয়েছে ইউজিসি।
চিঠিতে বলা হয়েছে, “যখন আঞ্চলিক ভাষায় শিক্ষাদান, শিক্ষালাভ এবং মূল্যায়ন করা হবে, শিক্ষার্থীদের সংখ্যাও বাড়বে। যার ফলে সাফল্যের হারও বাড়বে। ২০৩৫ সালের মধ্যে উচ্চ শিক্ষায় গ্রস এনরোলমেন্ট রেশিও অর্থাৎ শিক্ষার্থী ভর্তির অনুপাত ২৭ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। আঞ্চলিক ও স্থানীয় ভাষার ব্যবহার বাড়লে সেই লক্ষ্য অর্জনের প্রচেষ্টা আরও শক্তিশালী হবে।”
একই সঙ্গে ইউজিসি-র পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির কাছে স্থানীয় ভাষায় পাঠদানের বিষয়ে কিছু তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে। জিজ্ঞেস করা হয়েছে, স্থানীয় ভাষায় পাঠদানের জন্য কী কী বই ব্যবহার করা যেতে পারে? জানতে চাওয়া হয়েছে কতজন শিক্ষক-শিক্ষিকা স্থানীয় ভাষায় বুঝতে এবং শেখাতে পারেন? এমন শিক্ষক-ক্ষিশিকা কি চাইলে আরও পাওয়া যাবে? শিক্ষার্থীরা কি স্থানীয় ভাষায় উত্তর লিখতে পারে? একই সঙ্গে আঞ্চলিক ভাষার ব্যবহার বৃদ্ধির জন্য কী কী পরিকল্পনা করা হচ্ছে, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
স্থানীয় এং আঞ্চলিক ভাষায় ব্যবহার বৃদ্ধিতে উৎসাহ দেওয়ার পাশাপাশি কমিশন যে ন্যাশনাল ক্রেডিট ফ্রেমওয়ার্ক প্রকাশ করেছে, তার চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেদ-পুরাণের মতো প্রাচীন ভারতীয় গ্রন্থ পাঠের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা অতিরিক্ত ক্রেডিট অর্জন করতে পারে। নয়া ন্যাশনাল ক্রেডিট ফ্রেমওয়ার্কে, এখন খেলাধুলা, পারফর্মিং আর্টস, ঐতিহ্যগত দক্ষতা, কারিগরি দক্ষতা, সামাজিক কাজের পাশাপাশি বিশেষ দক্ষতা এবং জ্ঞানকেও বিশেষ কৃতিত্ব হিসাবে বিবেচনা করা হবে। ন্যাশনাল ক্রেডিট ফ্রেমওয়ার্কের লক্ষ্য, আকাদেমিক, বৃত্তিমূলক এবং অভিজ্ঞতামূলক শিক্ষা-সহ বিভিন্ন ধরণের শিক্ষাকে এক ফ্রেমওয়ার্কে নিয়ে আসা। ন্যাশনাল ক্রেডিট ফ্রেমওয়ার্কে ‘বিদ্যা’ নামে ১৮টি তাত্ত্বিক শাখা এবং ৬৪টি ‘কলা’, অর্থাৎ ফলিত বিজ্ঞান, বৃত্তিমূলক শাখা এবং কারুশিল্প রয়েছে।