নয়া দিল্লি : বিজেপি মুসলিম বিরোধী, এমন অভিযোগ বারবার উঠে থাকে। দলে বা প্রশাসনে মুসলিম সম্প্রদায়ভুক্তদের সুযোগই দেওয়া হয় না, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির এমন সমালোচনা নতুন নয়। এর পাশাপাশি রয়েছে, সাম্প্রদায়িক বিভাজন এবং তার ফলে হিংসার অভিযোগও। উল্লেখ্য, সম্প্রতি ২০০২ সালের গোধরা পরবর্তী দাঙ্গা ফের শিরনামে এসেছে। এই মামলায় গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী তথা অধুনা দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী-সহ ৬৪ জন অভিযুক্তকে বিশেষ তদন্তকারী দল যে ক্লিনচিট দিয়েছিল শুক্রবার সেটাই বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট। এরপর শনিবার সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর সাক্ষাৎকারে সেই প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন মোদী মন্ত্রিসভার কার্যত দু’নম্বর ব্যক্তি অমিত শাহ। তাঁকে মোদীর মুসলিমবিহীন মন্ত্রিসভা সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশ্ন করেন সাংবাদিক। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তারও জবাব দিলেন।
গুজরাট দাঙ্গা নিয়ে অমিত শাহের সঙ্গে আলোচনায় ‘গুজরাট ল্যাবরেটরির’ প্রসঙ্গ ওঠে। গুজরাটে কোনও মুসলিম ভোটব্যাঙ্ক ছাড়া সরকার গঠন করার নজির গড়েছে বিজেপি সরকার। এবং মুসলিমরা এদিক-ওদিক করলেই দাঙ্গা লাগানোর অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। এই প্রসঙ্গে অমিত শাহের উত্তর, পুরো বিষয়টিই দৃষ্টিকোণের উপর নির্ভর করে। তিনি বলেছেন, ‘যে রঙের চশমা পরবেন, সেই রঙই দেখা যাবে। হলুদ রঙের চশমা পরলে তো হলুদই দেখবেন। কালো পরলে কালো দেখবেন। এটা দৃষ্টিকোণের উপর নির্ভর করে।’ তিনি এই প্রশ্নের উত্তরে আরও বলেছেন, ‘গুজরাট মডেল অবশ্যই তৈরি হয়েছে। দেশের মধ্যে প্রথম আমরা প্রতিটি গ্রামে ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুতের ব্যবস্থা করেছি। সেটা একটি মডেল। দেশের ১২ বছরের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষায় প্রায় শূন্য ড্রপআউট এবং প্রায় ৯৯ শতাংশের বেশি প্রাথমিক শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। গুজরাটের আদিবাসী এলাকায় বনবন্ধু যোজনা নিয়ে আসা হয়েছে। এগুলি সবই মডেল।’
দাঙ্গার প্রসঙ্গে তিনি কংগ্রেসের জমানার যেকোনও পাঁচ বছর ও বিজেপি জমানার পাঁচ বছর নিয়ে তুলনার কথা বলেন। কার্ফু, মৃতের সংখ্যা নিয়ে তুলনা করার পরামর্শও দেন। তিনি এদিন জানিয়েছেন, বিজেপির জমানায় দাঙ্গার সংখ্যা অপেক্ষাকৃত কম হয়েছে। তিনি এর পাশাপাশি গুজরাট দাঙ্গার মূল কারণ হিসেবে বলেছেন, ‘এই দাঙ্গার মূল কারণ ছিল গোধরাতে ট্রেন জ্বালিয়ে দেওয়া। ৬০ জনকে পুড়িয়ে মারা হয়েছিল। ১৬ দিনের বাচ্চাকে মায়ের কোলে জ্য়ান্ত অবস্থায় জ্বলতে দেখেছি আমি।’ তাঁর আরও দাবি, আগে যেসব দাঙ্গা হয়েছিল তা রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত ছিল।