নয়া দিল্লি : গতকাল বাজেট অধিবেশনের পর লোকসভায় আজ বক্তব্য রাখেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। লোকসভায় তাঁর বক্তব্যকে কেন্দ্র করেই চাপানউতর শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। কেন্দ্রের আইনমন্ত্রী কিরণ রিজিজু। তিনি তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্টে আজ সংসদ অধিবেশনে রাহুলের বক্তৃতার একটি অংশের ভিডিয়ো আপলোড করে রাহুল গান্ধীর বক্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছেন। তিনি রাহুলকে তিনি ক্ষমা চাওয়ার কথা বলেছেন।
কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রী কিরণ রিজিজু লিখেছেন, “শুধুমাত্র ভারতের আইন মন্ত্রী হিসেবে নয়, ভারতের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমি নিন্দা করছি। রাহুল গান্ধী ভারতের বিচার ব্যবস্থা এবং নির্বাচন কমিশনকে নিয়ে যে বক্তব্য রেখেছেন তার তীব্র নিন্দা করছি। ” তিনি আরও লিখেছেন, “নির্বাচন কমিশন এবং ভারতের বিচার ব্যবস্থা আমাদের গণতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা।” রাহুল গান্ধীর উদ্দেশে তিনি বলেছেন, “রাহুল গান্ধীর এখনি ভারতের জনগণ, বিচার ব্যবস্থা এবং নির্বাচন কমিশনের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত।” রাহুল গান্ধী আজ সংসদে বাজেট থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয়ে বিজেপি সরকারকে আক্রমণ করেছেন। তবে তার বক্তব্যের একটি নির্দিষ্ট অংশের নিন্দা করেছেন আইন মন্ত্রী। সেই অংশে রাহুল গান্ধী বলেছেন, “বিচারব্যবস্থা, নির্বাচন কমিশন এবং পেগাসাস-এইগুলো জনগণের কন্ঠরোধ করার হাতিয়ার। ”
রাহুল গান্ধীকে আক্রমণ করে এদিন টুইট করেছেন বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। রাহুল গান্ধী আজ লোকসভায় বলেছিলেন যে সাধারণতন্ত্র দিবসে বিদেশ থেকে কোনও অতিথি আসেনি দেশে। এর পাল্টা জবাব বিদেশ মন্ত্রী টুইটে লিখেছেন, “লোকসভায় রাহুল গান্ধী বলেছেন, আমরা কোনও বিদেশের অতিথি পাইনি প্রজাতন্ত্র দিবসের জন্য। যাঁরা ভারতে থাকেন তাঁরা জানেন আমরা করোনার একটি ঢেউয়ের মধ্যে রয়েছি। ৫ জন মধ্য এশিয়ার প্রেসিডেন্ট যাঁদের আসার কথা ছিল তাঁরা ২৭ জানুয়ারি একটি ভার্চুয়াল সামিট করেছেন। সেটা কি রাহুল গান্ধী ভুলে গিয়েছিলেন?”
এদিন লোকসভায় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করেছেন রাহুল গান্ধী। তিনি বলেছেন, “মেড ইন ইন্ডিয়া আর সম্ভব নয়, ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।” নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করে তিনি বলেছেন, “আপনি সবসময় মেড ইন ইন্ডিয়া বলতে থাকেন। কিন্তু মেড ইন ইন্ডিয়া আর সম্ভব নয়। তা ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। আপনাকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে সমর্থন করতে হবে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পগুলিই একমাত্র পথ, যেখানে বেশি সংখ্যায় কর্মসংস্থান হতে পারে।” তিনি আরও বলেছেন, “কত কর্মসংস্থান দেওয়া হয়, আপনি সে সম্পর্কে কথা বলেন না। কারণ আপনি যদি তা করেন, তবে দেশের মানুষ ভাববে আপনি ঠাট্টা করছেন। আমাদের বেশিরভাগ চাকরিই অসংঘটিত ক্ষেত্রে। আপনি ভারতের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের সেই খাত থেকে অর্থ দিয়েছেন। আপনি আঘাত করেছেন অসংঘটিত খাত। কীভাবে? নোটবন্দির মাধ্যমে, জিএসটির মতো ভুল সিদ্ধান্তের মাধ্যমে, কোভিডের সময় কোনও সাহায্য হয়নি। জনসংখ্যার আয়ের ৮৪ শতাংশ কমেছে। ইউপিএ সরকারের আমলে ২৩ কোটি মানুষকে দারিদ্র্য থেকে বের করে আনা হয়েছিল।”