লখনউ: ফিল্মের চিত্রনাট্যকেও হার মানাবে বাস্তবের এই ঘটনা। চলতি সপ্তাহের শুরুতে, উত্তরপ্রদেশের শাহজাহানপুর জেলার চিকিৎসক সোম শেখর দীক্ষিতের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল ১৮ বছরের এক যুবক। হাতে একটি মোবাইল ফোন ধরিয়ে দিয়ে বলেছিল, অপর প্রান্তে এক ব্যক্তি আছে, সে কথা বলতে চায়। চিকিৎসক ফোনটি কানে দিতেই অপর প্রান্তের ব্যক্তি জানিয়েছিল, তার নাম রাজন শর্মা। সে একজন পেশাদার খুনী। অর্থাৎ, অর্থের বিনিময়ে হত্যা করে। ওই চিকিৎসককে হত্যার জন্য তাকে সুপারি দেওয়া হয়েছে বা চুক্তি করা হয়েছে। ওই ব্যক্তি বলে, “আপনি একবার আমার জীবন বাঁচিয়েছিলেন, তাই আমি আপনাকে মারতে চাই না।” এই ভয়ঙ্কর ফোনালাপের পরই পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিরাপত্তা চান ডা. সোম শেখর দীক্ষিত।
শাহজাহানপুর জেলার ব্রিজ বিহার কলোনিতে থাকেন ডা. সোম শেখর। ওই কলোনিতেই নিজের একটি হাসপাতাল চালান তিনি। রাজন শর্মার বক্তব্য অনুযায়ী, তাঁকে হত্যার জন্য ৮০ লক্ষ টাকার চুক্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছিল রাজন শর্মা। সেই চুক্তির অগ্রিম অর্থ রাজন নিয়েছে। কিন্তু ডাক্তার সোম শেখর একবার তার প্রাণ বাঁচিয়েছিলেন বলে, তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা থেকে সরে এসেছে রাজন।
ফোনে তাঁকে হত্যার ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সতর্ক করার পাশাপাশি, যে ব্যক্তি চিকিৎসককে হত্যার ‘সুপারি’ দিয়েছে, তার নামও জানাতে চেয়েছিল সে। তবে, তার জন্য ডাক্তারবাবুকে এই বিষয়ে পুলিশে না জানিয়ে, লখনউ বা দিল্লিতে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করতে বলেছিল রাজন শর্মা। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া ফৌজদারি মামলা নিষ্পত্তিতে ডাক্তারবাবুর সাহায্য চেয়েছিলে সে। ডা. সোম শেখর দীক্ষিত অবশ্য কোনওদিন রাজন শর্মা নামে কারও চিকিৎসা করেছেন কিনা, তা মনে করতে পারেননি। তবে, এই ঘটনায় আতঙ্কিত তিনি।
পুলিশকে পুরো ঘটনাটি খুলে বলার পর, তাঁকে পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন শাহজাহানপুরের এএসপি (শহর) সুধীর জয়সওয়াল। একইসঙ্গে কোতোয়ালি থানায় ভারতীয় দণ্ডবিধির আওতায় অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র এবং ভীতিপ্রদর্শনের অভিযোগে একটি এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে রাজন শর্মা এবং আরও কয়েকজন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে। সুধীর জয়সওয়াল বলেছেন, “ডা. দীক্ষিতকে কে ফোন করেছিল, আমরা তাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। ওই ব্যক্তিকে খোঁজার জন্য এবং এই অদ্ভূত ঘটনার তদন্তের জন্য পৃথক দল গঠন করা হয়েছে।”