লখনউ: বিয়ের অনুষ্ঠান চলছে। তার মধ্যেই কনের সঙ্গে বারংবার অশ্লীল আচরণ করার অভিযোগ উঠল খোদ বরের বিরুদ্ধে। এর ফলে যারপরনাই ক্ষুব্ধ কনে বিয়ে করতে অসম্মতি জানালেন। এই নিয়ে বরযাত্রী এবং কনেপক্ষর মধ্যে তর্কাতর্কি আর তা থেকে রীতিমতো মারামারি বেধে গেল। বিষয়টি পৌঁছায় পুলিশ থেকে পঞ্চায়েত পর্যন্ত। তবে, শেষ পর্যন্ত কনে ছাড়াই খালি হাতে ফিরতে হয়েছে বরযাত্রীদের। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর প্রদেশের সম্ভল জেলায়।
এই ঘটনার শুরু হয়েছিল ২৬ নভেম্বর। ওইদিন সম্ভলের বাহজোই থানা এলাকায় এক গণবিবাহের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে, স্থানীয় গ্রামের এক যুবতীর সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল বাদাউন জেলার এক যুবকের। গণবিবাহ অনুষ্ঠানে বিয়ের পর দুই পরিবার মিলে ঠিক করেছিল, সোমবার গ্রামে একটি পৃথক বিয়ের অনুষ্ঠান করা হবে। সেই মতো, কনেকে ঘরে নিয়ে যেতে শোভাযাত্রা করে এসেছিল বরপক্ষ। কনে পক্ষও বিয়ের আচার-অনুষ্ঠানও পালনে কোনও ত্রুটি রাখেনি। দুই পরিবারের লোকজনের উপস্থিতিতে বিয়ে পর্ব মসৃণ গতিতে এগোচ্ছিল।
তাল কাটে মালা বদলের সময়। কনেপক্ষর অভিযোগ মালা বদলের সময় কনের সঙ্গে অশ্লীল আচরণ করতে থাকে বর। বরের কার্যকলাপ নিয়ে আপত্তি জানায় কনে পক্ষের কয়েকজন। সেই নিয়ে সামান্য তর্কাতর্কির পর পরিস্থিতি শান্ত হয়। এরপরও অশ্লীল আচরণ করতে থাকে বর, এমনটাই অভিযোগ কনেপক্ষর। বারবার বরের অশ্লীল আচরণে বেঁকে বসেন কনেও। তিনি সটান ঘোষণা করেন, এই বিয়ে তিনি করবেন না।
তাঁর এই গুরুতর ঘোষণার পরই বিয়ে বাড়িতে তোলপাড় শুরু হয়। বর পক্ষ ও কনেপক্ষর মধ্যে তীব্র বিবাদ বাধে। একসময় তা পৌঁছয় মারামারিতে। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, যে পুলিশে খবর দিয়ে হয়। সংঘর্ষের অবসান ঘটাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। বর ও বাবা-সহ তাঁর কয়েকজন আত্মীয়কে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। থানায় আসে কনে পক্ষর কয়েকজন সদস্যও। থানায় পুলিশের উপস্থিতিতে ক্ষিপ্ত নববধূ স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, এহেন বরের সঙ্গে সে শ্বশুরবাড়ি যেতে নারাজ। এরপর বিষয়টি পৌঁছয় পঞ্চায়েতে। দুই পক্ষের অভিযোগ শুনে পঞ্চায়েত এই বিবাহ বন্ধন ভেঙে দেওয়ার পক্ষে সম্মতি দিয়েছে।
কনের বাবা জানিয়েছেন, তাঁর মেয়ের বিয়ে হয়েছিল গণবিবাহের মঞ্চে। সোমবার রাতে বাড়িতে অন্যান্য আচার-অনুষ্ঠান চলছিল। এমন সময় বর তার মেয়ের সাথে অশ্লীল আচরণ করতে থাকে। তারপরই তাঁর মেয়ে ওই যুবকের সঙ্গে যেতে রাজি হননি। পঞ্চায়েতের সম্মতির ভিত্তিতে বিবাহ বন্ধনও বিলুপ্ত হয়েছে। বাহজোই থানার ইনচার্জ পঙ্কজ লাভানিয়া জানিয়েছেন, কোনও পক্ষ থেকেই কোনও অভিযোগ জানানো হয়নি। পারস্পরিক সম্মতিতে এই বিরোধ মিটিয়ে ফেলা হয়েছে।