হরিদ্বার: ১৯ বছরের এক যুবতীকে খুন করার অভিযোগে গ্রেফতার হলেন বিজেপি নেতার ছেলে। নিজের রিসর্টের রিসেপশনিস্টকে খুন করার অভিযোগ উঠেছে উত্তরাখণ্ডের বিজেপি নেতা বিনোদ আর্যের ছেলে পুলকিত আর্যের বিরুদ্ধে। পুলিশি জেরায় অভিযুক্ত খুনের কথা স্বীকার করে নেওয়ার পরই শুক্রবার তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরাখণ্ডের ঋষিকেশের কাছে অবস্থিত পৌরি জেলায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বিজেপি নেতার ছেলে ছাড়াও রিসর্টের আরও দুইজন কর্মী খুনের সঙ্গে জড়িত। তাদেরও গ্রেফতার করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, চলতি সপ্তাহের সোমবার থেকেই নিখোঁজ ছিল ওই যুবতী। পৌরি জেলার একটি রিসর্টে রিসর্টে রিসেপশনিস্টের কাজ করত। সোমবার কাজে না যাওয়ার পরই অভিযুক্ত পুলকিত আর্য ওই যুবতীর খোঁজ-খবর শুরু করে এবং থানায় নিখোঁজ ডায়েরি দায়ের করে। পরে পরিবারের তরফেও নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। কিন্তু প্রথম থেকেই তাদের সন্দেহ ছিল পুলকিত আর্যের উপরে।
শুক্রবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই যুবতীর নিখোঁজ হয়ে যাওয়া ও পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ ভাইরাল হয়ে যেতেই নড়েচড়ে বসে পুলিশ। রিসর্টে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই একে একে পুলকিত এবং ওই রিসর্টেই কর্মরত দুই যুবক নিখোঁজ যুবতীকে খুনের কথা স্বীকার করে নেয়। এরপরই তাদের গ্রেফতার করা হয়। অভিযুক্তদের নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় বাসিন্দাদের বিক্ষোভের মুখেও পড়তে হয় পুলিশকে। অভিযুক্তদের মারতে উদ্যত ছিলেন এলাকাবাসীরা, এমনটাই অভিযোগ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জেরায় অভিযুক্তরা জানিয়েছে যে তারা ওই যুবতীকে খুন করে, তাঁর দেহ খালে ভাসিয়ে দিয়েছে। সূত্রের দাবি, ওই যুবতীকে জোর করে দেহ ব্য়বসায় নামানোর চেষ্টা করছিলেন পুলকিত ও তাঁর সহকারীরা। অস্বীকার করাতেই তাঁকে খুন করে দেহ লোপাট করে দেওয়া হয়। এখনও অবধি ওই যুবতীর দেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। আশেপাশের খাল ও নদীতে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
এদিকে, পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মৃত যুবতীর পরিবার ও সাধারণ মানুষ। প্রভাবশালী বিজেপি নেতার ছেলে হওয়ার কারণেই গোটা ঘটনাটি ধাপাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ। অভিযুক্ত পুলকিত আর্যের বাবা বিনোদ আর্য আগে মন্ত্রী ছিলেন। বর্তমানে মন্ত্রিসভার সদস্য না হলেও, তাঁর ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। পুলকিতের দাদা অঙ্কিত আর্যও বিজেপি নেতা বলেই জানা গিয়েছে।
গোটা ঘটনা সম্পর্কে রাজ্য়ের পুলিশ প্রধান অশোক কুমার বলেন, “বনন্ত্র নামক ওই রিসর্টটি যে জায়গায় অবস্থিত, তা সাধারণ থানার অধীনে পড়ে না। এই সমস্ত এলাকায় অপরাধের এফআইআর নেওয়ার জন্য পাটওয়ারি ব্যবস্থা রয়েছে। ঋষিকেশ থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই রিসর্টটি। রিসর্টের মালিক নিজেই ওই যুবতীর নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার এফআইআর দায়ের করেছিলেন। গতকাল জেলাশাসক আমাদের কাছে মামলাটি পাঠাতেই আমরা তদন্ত শুরু করি এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করি। পরবর্তী তদন্ত জারি রয়েছে।” রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামিও জানিয়েছেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।