Uttarakhand: মৃত্যু-শেষকৃত্য-পুনর্জন্ম-পুনর্নামকরণ-পুনর্বিবাহ, মাত্র চারদিনেই ঘটল সব কিছু
Uttarakhand: আচমকা পুলিশ তাঁর 'মৃত্যু' সংবাদ দিয়েছিল বাড়িতে। পরিবারের সদস্যরা দেহটি দাহ করেছিলেন। এরপরই আবার 'পুনর্জন্ম' ঘটল তাঁর। নতুন নামকরণ করা হল, আগের স্ত্রীয়ের সঙ্গেই হল 'পুনর্বিবাহ'-ও। আর এই এত কাণ্ড ঘটে গেল মাত্র চার দিনের মধ্যে।
দেরাদুন: এক বছর ধরে ‘নিখোঁজ’ ছিলেন তিনি। আচমকা পুলিশ তাঁর ‘মৃত্যু’ সংবাদ দিয়েছিল বাড়িতে। পুলিশের সঙ্গে গিয়ে দেহ শনাক্ত করে বাড়িতে নিয়ে এসেছিলেন পরিবারের সদস্যরা। দেহটি দাহও করে দেওয়া হয়। কিন্তু, এরপরই আবার ‘পুনর্জন্ম’ ঘটল তাঁর। নতুন নামকরণ করা হল, আগের স্ত্রীয়ের সঙ্গেই হল ‘পুনর্বিবাহ’-ও। আর এই এত কাণ্ড ঘটে গেল মাত্র চার দিনের মধ্যে। অদ্ভুত এই ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরাখণ্ডের পিথোরাগড় জেলার খাতিমা শহরে।
২৫ নভেম্বর, রুদ্রপুর জেলা হাসপাতালে একটি অজ্ঞাত পরিচয় দেহ এসেছিল। সেই দেহর পকেটে ছিল নবীনচন্দ্র ভাট নামে এক ৪২ বছরের ব্যক্তির পরিচয়পত্র। পুলিশ খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারে, নবীনচন্দ্র ভাট খাতিমা শহরের শ্রীপুর বিচোয়া এলাকার বাসিন্দা। এক বছর ধরে আগে কাজে সূত্রে তিনি বাড়ি ছেড়েছিলেন। সেই থেকে আর ফেরেননি। বাড়ির লোকের সঙ্গে তাঁর কোনও যোগাযোগও নেই। দেহটি শনাক্ত করার জন্য নবীনের ভাই কৈলাশ ভাটকে হলদওয়ানিতে ডেকে পাঠানো হয়। দেহটি তাঁর দাদার বলে শনাক্ত করেন কৈলাশ এবং বাড়ির অন্যান্যরা। ওই রাতেই চম্পাওয়াতের বনবাসা ঘাটে দেহটির শেষকৃত্য সম্পন্ন করে নবীনের পরিবার।
এরপরই, কৈলাশের এক বন্ধু দাবি করে, মাত্র একদিন আগে তিনি রুদ্রপুরে দেখেছেন নবীনকে। কাজেই তাঁর মৃত্যু হতেই পারে না। স্বাভাবিকভাবেই তাঁর কথা মানতে চায়নি নবীনের পরিবার। এরপর, কৈলাশের সেই বন্ধু নিজেই রুদ্রপুরে গয়ে নবীনকে খুঁজে বের করার দায়িত্ব নেন। সেখানে, গিয়ে নবীনকে খুঁজেও বের করেন তিনি। সেখানকার একটি হোটেলে কাজ করছিলেন নবীন। পরিবারের সন্দেহ দূর করতে, ভিডিয়ো কলে নবীনের সঙ্গে তাঁর আত্মীয়দের কথা বলিয়ে দেন তিনি। নবীনকে জীবিত দেখে যতটাই বিস্মিত হয়েছিল তাঁর পরিবার, তার থেকেও বেশি আনন্দ পেয়েছিল। কৈলাশ এবং তাঁর বাবা গিয়ে নবীনকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে এসেছিলেন।
জানা যায়, পুরো বিষয়টি ঘটেছে একটা ভুল বোঝাবুঝি থেকে। নবীন ভেবে তাঁরা কোনও অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির দেহ সৎকার করেছেন। নবীন এবং ওই মৃত ব্যক্তির উচ্চতা এবং মুখের বৈশিষ্ট্যে অসাধারণ মিল রয়েছে, যা নবীনের পরিবারকেও বিভ্রান্ত করেছিল। তার উপর এক বছরেরও বেশি সময় ধরে, বাড়ির লোকজন সামনাসামনি দেখেননি নবীনকে। বিভ্রান্তি আরও বাড়িয়েছিল, মৃতদেহের পকেটে নবীনের পরিচয়পত্র এবং কোভিড টিকা নেওয়ার শংসাপত্র। ওই দেহটি কার এবং নবীনের নথি কীভাবে তাঁর পকেটে এল, তা নিয়ে রহস্য থেকেই গিয়েছে।
এদিকে, শেষকৃত্যের পর নবীন ফের জীবিত হিসেবে বাড়িতে ফিরে আসায় নতুন সমস্যা তৈরি হয়। যে ব্যক্তিকে মৃত বলে ধরে নিয়ে, সৎকার করা হয়ে গিয়েছে, তিনি কীকরে ফের বউ-বাচ্চা নিয়ে সংসার করবেন? গ্রামের প্রবীণ এবং পুরোহিতরা জানিয়েছেন, কোনও ব্যক্তিকে মৃত বলে মেনে নেওয়ার পর যদি তাঁকে জীবিত অবস্থায় পাওয়া যায়, সেই ক্ষেত্রে তাঁর ‘পুনর্জন্ম’ ঘটেছে বলে বিবেচনা করা হয়। নবীনের ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে। কাজেই তাঁর শুদ্ধিকরণ করতে হবে। এর জন্য, জন্ম থেকে বিবাহ পর্যন্ত যে যে ধর্মীয় আচার-আচরণ পালন করেছেন, তা ফের করতে হবে। অর্থাৎ, তাঁর নামকরণ করতে হবে নতুন করে, নতুন করে উপনয়ন, নতুন করে বিয়ে – সব করতে হবে। তাই ফের নতুন করে নামকরণ থেকে বিয়ে, সবই করতে হয়েছে নবীনকে। নয়া নামকরণের পর, নবীনের নাম হয়েছে নারায়ণ ভট্ট।