কলকাতা: বাংলার ঝুলিতে এল আরও একটি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস (Vande Bharat Express)। সোমবারই উদ্বোধন হল নিউ জলপাইগুড়ি-গুয়াহাটি রুটে (NJP-Guwahati Express) বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভার্চুয়াল মাধ্যমে এই নতুন বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের উদ্বোধন করেন। পশ্চিমবঙ্গে এটি তৃতীয় বন্দে ভারত এক্সপ্রেস হলেও, উত্তর-পূর্ব ভারতে এটিই প্রথম বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। এই ট্রেন চালু হওয়ার ফলে এবার উত্তরবঙ্গ থেকে উত্তর পূর্ব ভারতে যাতায়াত আরও সহজ হল। দীর্ঘদিন ধরেই এই রুটে ট্রেনের দাবি জানানো হয়েছিল। যাত্রীদের চাহিদার কথা মাথায় রেখেই উত্তর পূর্ব ভারতের রুটে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চালু করা হল।
রেল মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী ৩১ মে থেকে নিউ জলপাইগুড়ি-গুয়াহাটি রুটে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চালু হবে। বাকি বন্দে ভারত এক্সপ্রেসগুলির মতো এই ট্রেনও সপ্তাহে ছয়দিন চলবে, শুধুমাত্র মঙ্গলবার বন্ধ থাকবে এই ট্রেন।
জানা গিয়েছে, নিউ জলপাইগুড়ি থেকে সকাল ৬টা ১০ মিনিটে ছাড়বে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস, গুয়াহাটিতে পৌঁছবে সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে। আবার ওই দিনই বিকেল ৪টে ৩০ মিনিটে গুয়াহাটি থেকে ছাড়বে ট্রেনটি এবং নিউ জলপাইগুড়িতে এসে পৌঁছবে রাত ১০টায়। মোট ৪১১ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে সময় খরচ হবে সাড়ে ৫ ঘণ্টা।
নিউ জলপাইগুড়ি থেকে গুয়াহাটি অবধি রুটে মোট পাঁচটি স্টপেজ রয়েছে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের। প্রথম স্টপেজ হবে নিউ কোচবিহারে, এরপরে নিউ আলিপুরদুয়ার, কোকড়াঝাড়, নিউ বঙ্গাইগাঁও এবং কামাখ্যায় হয়ে গুয়াহাটিতে পৌঁছবে ট্রেনটি। এই রুটে যাতায়াতের ক্ষেত্রে অন্যতম চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে হাতি। কারণ ওই ট্রেন রুটে রয়েছে হাতির করিডর। লাইন পারাপার করতে গিয়ে প্রায়সময়ই ট্রেনের সঙ্গে হাতির ধাক্কা লাগে এবং হাতির মৃত্যু হয়। সাধারণ বা এক্সপ্রেস ট্রেনে যেখানে ৪০ থেকে ৭০-৮০কিমি প্রতি ঘণ্টার গতিতেই হাতির দুর্ঘটনা ঘটে, সেখানেই বন্দে ভারতের গতি ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার! তাহলে হাতির সুরক্ষার কী হবে?
জানা গিয়েছে, নিউ জলপাইগুড়ি-গুয়াহাটি রুটে হাতি করিডরে গতি কমিয়েই যাতায়াত করতে হবে সেমি-হাইস্পিড ট্রেনকে। রেল মন্ত্রকের নিয়ম অনুযায়ী, যে সমস্ত জায়গা থেকে হাতি বা অন্য় কোনও বন্যপ্রাণী যাতায়াত করে, সেখানে ট্রেনের গতি কমিয়ে দিতে হয়। ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে চালাতে হয় এই ট্রেন। বন্দে ভারত এক্সপ্রেসকেও এই নিয়ম মানতে হবে।
উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও ছত্তীসগঢ়, মধ্য প্রদেশ, ঝাড়খণ্ড, বিহার, ওড়িশাতেও রয়েছে হাতির করিডর।
গত বছর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন উত্তরবঙ্গের কোচবিহারে হাতি করিডর তৈরির কথা। ৫ কিলোমিটার লম্বা ও ২০০ মিটার চওড়া এই করিডর তৈরির জন্য ২৫ কোটি টাকা খরচ হবে বলে জানানো হয়েছিল।