লখনউ: চারিদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার। পাশের টেবিলে কী রাখা আছে, তাও দেখা যাচ্ছে না। যা কিছু প্রয়োজন, হাতড়ে হাতড়েই খুঁজতে হচ্ছে। কিন্তু লোডশেডিং তো আর কর্তব্যে গাফিলতির কারণ হতে পারে না। মরো মরো অবস্থা রোগীর, প্রয়োজন দ্রুত অস্ত্রোপচারের। অথচ গোটা হাসপাতালে বিদ্যুৎই নেই। বাধ্য হয়েই অন্ধকারের মধ্যেই শুরু করা হল অস্ত্রোপচার। ভরসা শুধু মোবাইলের ফ্ল্যাশ লাইট। এভাবেই মোবাইলের আলোয় অস্ত্রোপচার থেকে শুরু করে রোগীদের চিকিৎসা করলেন সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর প্রদেশে।
এ যেন অসাধ্য সাধন। শনিবার দিনভর বৃষ্টির জেরে বিদ্যুৎ চলে গিয়েছিল হাসপাতালে। নেই জেনারেটরের ব্যবস্থা, গোটা হাসপাতাল অন্ধকারাচ্ছন্ন। কিন্তু রোগীদের চিকিৎসায় খামতি রাখতে চাননি চিকিৎসকরা। তাই মোবাইলের টর্চ জ্বালিয়েই রোগীদের পরীক্ষা-চিকিৎসা শুরু করেন তারা। রোগীর সঙ্গে আসা এক ব্যক্তিই চিকিৎসকদের এই কর্মনিষ্ঠা ও কর্তব্যপরায়ণ ভূমিকার ভিডিয়ো করেন এবং তা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন। ইতিমধ্যেই ভাইরাল সেই ভিডিয়ো।
জানা গিয়েছে, শনিবার অতিবৃষ্টির কারণেই উত্তর প্রদেশের বালিয়া জেলা অন্ধকারে ডুবে যায়। বিদ্যুৎ বিভ্রাটে অন্ধকার হয়ে যায় হাসপাতালও। এদিকে, বাইরে তখন রোগীদের লম্বা লাইন। তাদের ফিরিয়ে দিতে চাননি চিকিৎসকরাও। আলোর ব্যবস্থা করতে না পেরে মোবাইলের ফ্ল্যাশলাইট জ্বেলেই তারা রোগীদের চিকিৎসা শুরু করেন। প্রায় এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে এভাবেই চলে চিকিৎসা।
Facing Power Cut, UP Doctors Treat Patients Using Mobile Torch https://t.co/2tloL7pCLb pic.twitter.com/TGmPmWsiz3
— DAB (@DAB_ultachasma) September 12, 2022
ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, এক মহিলা হুইলচেয়ারে বসে রয়েছেন। তাঁকে ঘিরে রয়েছেন বেশ কয়েকজন। একজন উপর থেকে মোবাইলের ফ্ল্যাশলাইট অন করে রেখেছেন চিকিৎসকদের সাহায্যের জন্য। অন্যান্য কয়েকটি ছবিতে দেখা যায় যে, অন্ধকারে বসে রয়েছেন রোগীরা।
ওই জেলা হাসপাতালের অর্থোপেডিক সার্জন ও চিফ ইনচার্জ ডঃ আরডি রাম বলেন, “বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে ১৫-২০ মিনিট সমস্যায় পড়তে হয়েছিল। পরে জেনারেটরের ব্যাটারি আনিয়ে তা চালু করা হয় ও হাসপাতালে আলো জ্বালানো হয়”। ওই চিকিৎসকের দাবি, হাসপাতালে একটি জেনারেটর রাখা থাকলেও, তার ব্যাটারি ছিল না। ব্যাটারি আনতেই বেশ কিছুটা সময় যায়, সেই কারণে রোগীদের মোবাইলের আলোতেই চিকিৎসা করতে হয় চিকিৎসকদের। কেন ব্যাটারি ছিল না, এই প্রশ্ন করতেই তিনি জানান যে, ব্য়াটারি চুরি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সেই কারণেই জেনারেটরে ব্যাটারি লাগানো থাকে না।