নয়া দিল্লি: তিনদিনের ইডি হেফাজতে দিল্লিতে রয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ এই নেতাকে লাগাতার জেরা করছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। ইতিমধ্যেই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে কেষ্টর বিরুদ্ধে। তাঁর এক সময়ের ছায়াসঙ্গী সায়গল হোসেন কোটি কোটি টাকার ‘প্রোটেকশন মানি’ নিতেন গরু পাচারের জন্য। ইডি সূত্রে খবর, অনুব্রতর নির্দেশেই সেই টাকা নিতেন সায়গল। ইডি সূত্রে খবর, শুধু ‘প্রোটেকশন মানি’ই নয়, গরুপাচারের উপর মাসে কমিশনও নিতেন অনুব্রত। আর সেই টাকাও জমা পড়ত ছায়াসঙ্গী সায়গলের কাছেই। সূত্রের দাবি, সেই কমিশনের টাকাতেই নিজের নামে, পরিবারের সদস্যদের নামে চালকল থেকে জমি, বাড়ি কিনেছিলেন অনুব্রত। মাত্র তিন বছরেই এই সম্পত্তি বাড়ান তিনি। ইডি সূত্রে খবর, ২০১৫ সাল থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে অনুব্রতর সম্পত্তি বৃদ্ধি হয়।
ইডি সূত্রে খবর, গরু পাচারের টাকা কার কার কাছে গিয়েছে, তা জানতে মরিয়া ইডি। অনুব্রত-ঘনিষ্ঠদের বয়ানকে সামনে রেখে জেরা চলছে বলেও সূত্রের দাবি। ইডি সূত্রে খবর, প্রাক্তন এক ব্যাঙ্ককর্মীকে কেন ৬ কোটি টাকা দিয়েছিলেন, তা জানতে চায় ইডি।
১৮ কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিটের উৎসও জানাতে পারেননি কেষ্ট। শুধু তাই নয়, মলয় পিটের একটি এনজিও রয়েছে, যেখানে কেষ্ট মণ্ডল বিনিয়োগ করেছেন বলে তদন্তকারী সংস্থা জানতে পেরেছে। এমনকী এর মাধ্যমে পেট্রোল পাম্পও চালু করেন বলে সূত্রের খবর। ইডির নজর রয়েছে, স্ত্রীর ক্যানসার চিকিৎসার খরচেও। ইডি যেহেতু মূলত আর্থিক লেনদেনের বিষয়টিই দেখে, সে বিষয়েই জেরা চলছে অনুব্রত। অনুব্রত কোনও চাকরি করেন না, তিনি কোনও ব্যবসাও করতেন না, তাহলে কীভাবে এত বিপুল সম্পত্তির মালিক হলেন তিনি, তাও খতিয়ে দেখছে ইডি। ২০১৪ সালে অনুব্রত যে আয়কর দিতেন, ২০২২ সালে গিয়ে তা রকেট গতিতে বেড়েছে বলেই ইডি সূত্রে খবর।
এদিকে ইডি হেফাজতে নেওয়ার পর এই প্রথমবার আজ বৃহস্পতিবার আইনজীবীর সঙ্গে হবে সাক্ষাৎ হবে অনুব্রত মণ্ডলের। সকাল ১০টায় কেষ্টর আইনজীবী পৌঁছবেন ইডির হেড কোয়ার্টার প্রবর্তন ভবনে। এরপর সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সেখানে উপস্থিত থাকতে পারবেন আইনজীবী। কেষ্টকে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় থাকতে পারবেন তিনি।