লখনউ: যোগী রাজ্যে বাংলার পুলিশের (West Bengal Police) আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ উঠল। উত্তর প্রদেশের (Uttar Pradesh) আলিগড়ের গান্ধীনগরে বাংলা পুলিশের সদস্যদের ধাক্কাধাক্কির অভিযোগ ওঠে। যদিও পরে উত্তর প্রদেশ পুলিশের চেষ্টায় আক্রান্ত বাংলার পুলিশকে উদ্ধার করা হয় বলেও সংবাদসংস্থা এএনআই (ইউপি) টুইটারে জানিয়েছে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই রাজনীতির রং লাগতে শুরু করেছে। তৃণমূলের তরফে যেমন এই ঘটনাকে ঘৃণ্য বলে তকমা দেওয়া হয়েছে। পাল্টা বিজেপির দাবি, এ রাজ্যেও তো তাদের নেতৃত্বকে অপমান করা হয়। তখন তো এ রাজ্যের পুলিশ তদন্ত করে না।
ঘটনার সূত্রপাত ২০১৭ সালে। পুলিশ সূত্রে খবর, ভারতীয় জনতা পার্টির উত্তর প্রদেশ যুব মোর্চার এক সদস্য যোগেশ বার্শনইয়ের একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়। সেখানে যোগেশকে নাকি বলতে শোনা যায়, ‘যে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শিরোচ্ছেদ করতে পারবে, তাঁকে ১১ লক্ষ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে।’ যদিও এই ভিডিয়োর সত্যতা টিভি নাইন বাংলা যাচাই করেনি। যোগেশের এই বক্তব্য ঘিরেই উত্তর প্রদেশ পুলিশের কাছে একটি এফআইআর জমা পড়ে। সেই সময় যোগেশকে দল থেকে সাসপেন্ডও করা হয়েছিল।
সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই পশ্চিমবঙ্গের পুলিশের সিআইডির দুই প্রতিনিধির দল উত্তর প্রদেশে যায়। আদালত যোগেশের বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করেছিল। সেই নোটিস দিতেই আলিগড় গান্ধীনগরে যুব মোর্চা নেতার বাড়িতে যেতেই শুরু হয় গোলমাল। অভিযোগ, সেখানে তাঁদের চরম হেনস্থার মুখে পড়তে হয়। শুধু হেনস্থাই নয়, ধাক্কাধাক্কিও করা হয়। এমনকী হাতাহাতির পরিস্থিতি তৈরি হয়। অর্থাৎ বাংলার পুলিশকে আটকাতে যোগেশ ও তাঁর অনুগামীরা চড়াও হন বলে অভিযোগ ওঠে। খবর যায় আলিগড় থানায়। রাজ্য পুলিশের প্রতিনিধি দলকে তারাই উদ্ধার করে নিয়ে যায়। প্রশ্ন উঠছে, তদন্তের স্বার্থে ভিন রাজ্যে গিয়ে পুলিশকেও কি হামলার শিকার হতে হবে?
এই ঘটনা প্রসঙ্গে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “অত্যন্ত নিন্দাজনক ঘটনা। এটা সম্পূর্ণ ভাবে প্রমাণ করে যে উত্তর প্রদেশে জঙ্গলরাজ চলছে। ওখানে তো উন্নয়ন বলে কিছু নেই। এখান থেকে ছবি চুরি করতে হয়। আর ওখানে উন্নয়ন মানে গঙ্গায় মৃতদেহ ভাসানো। সেখানে এ ধরনের যথেচ্ছাচার চলছে। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী ও আমাদের নেতৃত্ব সম্পর্কে কুৎসিত ভাষা প্রয়োগ করা হচ্ছে। সেখানে যদি একটা আইনি পদ্ধতি মেনে কেউ যায়, মারধর করা হবে, পুলিশের গায়ে হাত তোলা হবে, পুলিশকে আটকে রাখা হবে। এটা প্রমাণ করে দিচ্ছে বিজেপি ও উত্তর প্রদেশের সরকার জঙ্গলরাজের প্রতীক। উত্তর প্রদেশ, ত্রিপুরা যেখানে যেখানে বিজেপি আছে, সেখানেই জঙ্গলরাজ চলবে।”
In Aligarh’s Gandhi Nagar, a scuffle broke out b/w locals & a team of West Bengal Police y’day at residence of BJYM worker Yogesh Varshney, who had reportedly announced a bounty of Rs 11 lakhs on the head of CM Mamata Banerjee
“We brought the team to safety,” said local police pic.twitter.com/8ntVy9OME3
— ANI UP (@ANINewsUP) September 17, 2021
যদিও কুণালের এই যুক্তিকে খণ্ডন করে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, “সমস্ত ক্ষেত্রে রাজনীতি খেলতে গেলে যা হয়, উত্তর প্রদেশেও তাই হয়েছে। কারণ, মোদীজীর নামে এই রাজ্য থেকে কত কুৎসা হয়েছে, কতরকম হিংসাত্মক কথা হয়েছে। একবারও তাদের বিরুদ্ধে বাংলার পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে কোথায় কে কী বলেছে তার জন্য একেবারে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ উত্তর প্রদেশে ছুটেছে। এই যে রাজনৈতিক বিভাজন, এটা সরকারি কাজ নয়, দলীয় কাজ। ফলে প্রতিবাদ হয়েছে। ওখানে পুলিশ আছে, প্রশাসন আছে দরকার হলে অভিযোগ করুক ওরা ব্যবস্থা নেবে।”