নয়া দিল্লি : নাগাল্যান্ডের (Nagaland) নিরাপত্তা রক্ষী বাহিনীর গুলি চালানোর ঘটনায় ১১ জন নিরপরাধ সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। আর নিয়েই এবার কেন্দ্রীয় সরকারকে বিঁধতে শুরু করেছে বিরোধীরা। চলছে কড়া সমালোচনার পালা। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi) দাবি করেছেন, সরকারের যথাযথ জবাবদিহি করতে হবে। কেন্দ্রের উদ্দেশে কড়া আক্রমণ শানিয়ে বলেছেন, “নিরাপত্তারক্ষী বাহিনীর জওয়ানরাই হোন বা দেশের সাধারণ নাগরিক, কেউই আজ আর নিজের দেশের মাটিতে নিরাপদ নন। কী করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক?”
এখনও পর্যন্ত যা জানা গিয়েছে, অনুপ্রবেশ রুখতে অভিযান চালাতে গিয়েই এই ঘটনা ঘটে। শনিবার রাতের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়। এখনও পর্যন্ত ১১ জন নিরাপরাধ সাধারণ নাগরিকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। ১ সেনা জওয়ানেরও মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনার জেরে ইতিমধ্যেই তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে। রাহুল গান্ধী টুইট করেছেন, “এটি হৃদয় বিদারক। কেন্দ্রীয় সরকারকে অবশ্যই একটি সত্যিকারের জবাব দিতে হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ঠিক কী করছে? সাধারণ নাগরিক বা নিরাপত্তা রক্ষী বাহিনী, কেউই আমাদের নিজের দেশের মাটিতে নিরাপদ নয়।”
ঘটনার পর সেনাবাহিনী তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘গোয়েন্দাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই অনুপ্রবেশ রুখতে মন জেলার তিরু এলাকায় অভিযানের পরিকল্পনা করেছিল সেনা।’ আরও বলা হয়েছে, ‘ঘটনায় আহত হয়েছেন একাধিক জওয়ান। এক জওয়ানের মৃত্যুও হয়েছে।’ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক আখ্যা দিয়ে বিবৃতি প্রকাশ করল সেনাবাহিনী। ঘটনায় উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত হবে বলেও দাবি করা হয়েছে সেনাবাহিনীর তরফে।
এই ঘটনায় সমবেদনা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। রবিবার সকালেই টুইটে তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন তিনিও। ওই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন তিনি। অমিত শাহ জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট গঠন করে তদন্ত করবে। বিচার পাবে মৃতদের পরিবার।
জানা গিয়েছে, গত কয়েকদিন ধরেই ওই এলাকায় জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছিল সেনা। বেশ কিছু নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তি করেই জঙ্গি দমন অভিযান চলছিল। সেই মতো শনিবার রাতেো মায়ানমার- নাগাল্যান্ড সীমান্ত সংলগ্ন মন জেলার তিরু গ্রামে সেনাবাহিনী অভিযান চালায়। অনুপ্রবেশকারী সন্দেহেই এই গুলি চালানো হয়েছে বলে সূত্রের খবর, আর তাতেই প্রাণ হারান একাধিক গ্রামবাসী।
সূত্রের খবর, ওটিং গ্রাম থেকে মিনি ট্রাকে চেপে ফিরছিলেন গ্রামবাসীরা। রাতের অন্ধকারে তাঁদের লক্ষ্য করেই গুলি চালানো হয়। গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, খনি থেকে কাজ সেরে ফিরছিলেন ওই গ্রামবাসীরা। বেশ কয়েক ঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ার পরও তাঁরা বাড়ি না ফেরায় তাঁদের খুঁজতে যায় পরিবার পরিজন। এরপরই দেখা যায় ট্রাকের ওপর পড়ে রয়েছে মৃতদেহগুলি।