বুধবারই ন্যাশনাল হেরাল্ড সংবাদপত্রের বেআইনি আর্থিক লেনদেন মামলায় কংগ্রেসের অন্তবর্তীকালীন সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী এবং কংগ্রেস শীর্ষনেতা রাহুল গান্ধীকে তলব করছে কেন্দ্রীয় সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। রাহুল গান্ধীকে ৫ জুনের পর ও সনিয়া গান্ধীকে ৮ জুন জেরার জন্য তলব করা হয়েছিল। কেন্দ্রীয় সংস্থার তলবের পর স্বাভাবিকভাবেই শতাব্দী প্রাচীন দলের পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া এসেছে। কংগ্রেসের দাবি ২০১৫ সালে মামলার তদন্ত বন্ধ হয়ে যাওয়া সত্ত্বে কংগ্রেসের দুই শীর্ষ নেতাকে তলব করা হয়েছে। কংগ্রেস সাংসদ তথা বিশিষ্ট আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি ইডির এই তলবকে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। ইডি সূত্রে খবর, ন্যাশনাল হেরাল্ড সংবাদপত্রের বেআইনি আর্থিক লেনদেন মামলায় সনিয়া-রাহুকে তলব করা হয়েছে।
ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলা কী?
ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় ২ হাজার কোটি টাকার আর্থিক অপব্যবহারের অভিযোগ উঠেছিল। ১৯৩৮ সালে ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু এবং অন্যান্য স্বাধীনতা সংগ্রামীরা মিলে ন্যাশনাল হেরাল্ড তৈরি করেছিলেন। অ্যাসোসিয়েটেড জার্নালস লিমিটেডের তরফে এই সংবাদপত্র প্রকাশ করা হত। ২০০৮ সালে কংগ্রেসের থেকে ৯০ কোটি টাকার ঋণ পুনরুতজ্জীবিত করতে ব্যর্থ হওয়ার পর এই সংবাদপত্রটি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ২০১০ সালে ইয়ং ইন্ডিয়া নামের একটি সংস্থা এজিএল অধিগ্রহণ করেছিল। ইয়ং ইন্ডিয়ার পরিচালন বোর্ডে সনিয়া ও রাহুল গান্ধী ছিলেন।
২০১২ সালে বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী, ইয়ং ইন্ডিয়া কর্তৃক এজিএল অধিগ্রহণে সনিয়া, রাহুল সহ একাধিক কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে প্রতারণা ও বিশ্বাসভঙ্গের একটি মামলা দায়ের করেছিলেন। বিজেপি নেতার দাবি ছিল, আয়কর নিয়ম অনুযায়ী কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তৃতীয় কোনও ব্যক্তির আর্থিক লেনদেন হতে পারে না।
ইডির তদন্ত
২০১৬ সাল থেকে এজিএল এবং তাতে কংগ্রেস নেতাদের ভূমিকা নিয়ে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপিন্দর সিং হুডা এবং প্রয়াত কংগ্রেস নেতা মতিলাল বোহরাকেও অভিযুক্তদের তালিকায় রেখেছিল ইডি। তদন্তকারী সংস্থার দাবি ছিল, হরিয়ানার পঞ্চকুলায় এজেএলকে অবৈধভাবে জমি পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে প্রাপ্ত অর্থ এই কংগ্রেস নেতারা ব্যবহার করেছেন। মুম্বইয়ের বান্দ্রা এলাকায় একটি বহুতল নির্মাণের জন্য দিল্লির সিন্ডিকেট ব্যাঙ্ক থেকে লোন পেতেও সাহায্য করেছিল। ১৬ কোটি ৩৮ লক্ষ টাকা মূল্যের এই সম্পত্তি ২০২০ সালে বাজেয়াপ্ত করেছিল ইডি।
কী বলছে কংগ্রেস?
কংগ্রেসের দাবি সামাজিক কাজ করার জন্য ইয়ং ইন্ডিয়া লিমিটেড তৈরি করা হয়েছিল, কোনও লাভের জন্য এই ওয়াইআইএল তৈরি করা হয়নি। কংগ্রেস জানিয়েছে, কোনও লেনদেনই অর্থনৈতিক নয়, যা হয়েছিল সম্পূর্ণটাই বাণিজ্যিক। অভিষেক মনু সিংভি জানিয়েছে, “কোনও সম্পত্তি বা নগদ অর্থের লেনদেন হয়নি, তবে কী ভাবে বেআইনি লেনদেন মামলায় তাদের তলব করা হল?”